দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব, সৎ IAS অফিসারকে খুনের হুমকি

সৎ ও নির্ভীক আইএএস অফিসার। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল সৎপথে থেকে কাজ করবেন। চিন্তাভাবনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তেমনটাই করতেন। কিন্তু খ্যাতির বদলে দুর্নীতিগ্রস্তদের ভিড়ে সততার সঙ্গে কাজ করতে পারছেন না মধ্যপ্রদেশের লোকেশ কুমার জাঙ্গির। চাকরি জীবনে ৫ বছরেরও কম সময়ে ৯ বার বদলি হয়েছেন তিনি।
২০১৪ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শুধু উত্তীর্ণ নয়, প্রথমের সারিতেই নাম ছিল তাঁর। ২০১৬ সালে মধ্যপ্রদেশের সুপুর জেলার এসডিএম হয়ে প্রথম কাজে যোগ দেন তিনি। সমাজের নীচু স্তরের মানুষদের উপরে তুলে আনার জন্য ভাল কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু বাধ সাধে তাঁর অত্যন্ত সৎ এবং নির্ভীক মনোভাব।দুর্নীতি একেবারেই মানতে পারেন না। দুর্নীতি দেখলে প্রতিবাদ করেন।তাই বারবার বদলি হতে হয় তাঁকে। কখনও এসডিএম, কখনও কোনও দফতরের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার, কখনও নগরোন্নয়ন দফতরের মুখ্য সচিব, গুণার অতিরিক্ত কালেক্টর, রাজ্য শিক্ষা কেন্দ্রের অতিরিক্ত ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে বদলি করা হয়েছে তাঁকে।বর্তমানে ফের রাজ্য শিক্ষা কেন্দ্রের অতিরিক্ত ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে বদলি করা হয়েছে। নিপুণতার সঙ্গে এই পদের দায়িত্বই সামলাচ্ছেন তিনি।

সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের আইএএস অফিসারদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।এই অফিসারের অপরাধ ছিল, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। ওই আইএএস-দের গ্রুপে প্রশাসনিক ব্যবস্থার অপারগতা সম্পর্কে একটি পোস্ট দেন। ইউপিএসসি পরীক্ষাকে হাস্যকর হিসাবে উল্লেখ করেন।তাঁকে ওই গ্রুপ থেকে শুধু সরিয়েই দেওয়া হয়নি, তাঁকে শো-কজও করা হয়। তারপর থেকেই তাঁর নামে শুরু হয় চর্চা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তিনি নাকি উচ্চপদস্থ এক অফিসারের ফোনে আড়ি পেতেছিলেন। যদিও শো-কজের জবাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লোকেশ।উল্টে তাঁর অভিযোগ, ওই ঘটনার পর থেকেই প্রাণ সংশয়ে ভুগছেন তিনি এবং তাঁর পরিবার। লোকেশের দাবি, উড়ো ফোনে তাঁকে এবং তাঁর সন্তানকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।নির্ভীক এই আইএএস নিজের পরিবারের সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন, তা বলে ভয় পেয়ে সত্যের পথ ছাড়তে চান না।তাঁর স্পষ্ট জবাব, “আইনের বেড়াজালে এখন আমার দু’হাতই বাঁধা। তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেক কিছুই সামনে আনতে পারছি না। অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবাদটুকুও করতে পারছি না।” তবে অবসরের পরে তিনি সব জানাবেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি দুর্নীতি নিয়ে বইও লিখবেন তিনি।

সম্প্রতি এই আইএএস অফিসারকে নিয়ে বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছে নেটমাধ্যমে। তাঁর জীবনের সঙ্গে হিন্দি ছবির তুলনা করা হচ্ছে। ছবিতে যেমন সৎ অফিসারদের বারবার বদলি করা হয়, তাঁকে নিয়েও এই মন্তব্যগুলিই করছেন নেটাগরিকরা।

আরও পড়ুন- মধ্যবিত্তদের মুখে হাসি ফুটিয়ে দাম কমল সোনার

 

Previous articleমধ্যবিত্তদের মুখে হাসি ফুটিয়ে দাম কমল সোনার
Next articleআকাশপথে কলকাতায় আসতে গেলে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক, সিদ্ধান্ত নবান্নের