বাবুলের ইস্তফাকে ‘নাটক’ বলে তোপ কুণালের, গুরুত্ব দিতে রাজি নন দিলীপও

জল্পনা চলছিল বিগত কয়েকদিন ধরে। মন্ত্রীপদ খুইয়ে রাজনীতি থেকে ক্রমশ নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। অবশেষে বিস্ফোরণটা ঘটালেন শনিবার। সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টে তিনি ঘোষণা করলেন রাজনীতি থেকে এবার পাততাড়ি গোটাচ্ছেন তিনি। হঠাৎ বাবুলের এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে। যদিও বাবুলের ইস্তফাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে রাজি নয় তৃণমূল। বরং গোটা ঘটনাকে ‘নাটক’ বলে তোপ দাগলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, মন্ত্রীপদ হারিয়ে এখন নাটক করছেন বাবুল সুপ্রিয়। শুধু তাই নয়, বাবুল সুপ্রিয়র ইস্তফাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে রাজি নন খোদ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও।

শনিবার বাবুলের হঠাৎ ইস্তফা নিয়ে রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হতেই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুণাল ঘোষ বলেন, “আমি এটাকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে রাজি নই। বাবুল মানসিক হতাশা থেকে এটা করেছে। ওকে ঘুম থেকে তুলে বলেছে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দাও। তাই দুঃখ হয়েছে। দলেও কোণঠাসা, জায়গা পায় না, দমবন্ধ লাগছে, অক্সিজেন কম যাচ্ছে। তাই এখন ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছে। এটা আসলে দৃষ্টি আকর্ষণের প্রস্তাব। ফেসবুক পোস্ট না করে সংসদ চলার সময় স্পিকারের কাছে ইস্তফা দিল না কেন! এটা তো নাটক করছে। ওর মনে রাখা উচিত ভিক্টোরিয়ার ঝালমুড়ি অনেক বেশি আন্তরিত, সুস্বাদু।”

পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “আমার সঙ্গে পরশু সেন্ট্রাল হলে দেখা হয়েছিল, ওকে দুঃখিত মনে হচ্ছিল, বাবুল তো রাজনীতি জগতের লোক নয়। বিধানসভায় পরাজয় ওকে আহত করেছে। এটা ওর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত রাজনীতিতে থাকবেন কিনা। আমি বলব, ২০২৪ পর্যন্ত সাংসদ, তাই রাজনীতি ছাড়বেন না, তাহলে জনসাধারণের প্রতি সুবিচার হবে না।”

আরও পড়ুন: চললাম”, “আলভিদা”, “একগোছা রজনী গন্ধা”! রাজনীতি ছাড়লেন বাবুল?

পাশাপাশি রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজেও বাবুলের বিষয়টিকে যে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ সেকথা এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন স্পষ্টভাবে। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি কারও ফেসবুক টুইটার দেখি না। কে রাজনীতি করছেন, কে ছাড়ছেন, তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন আপনারা কি খোঁজ নিয়েছেন উনি ইস্তফা দিয়েছেন কিনা?”

উল্লেখ্য, হঠাৎই শনিবার সকলকে চমকে দিয়ে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন বাবুল সুপ্রিয়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় জনপ্রিয় গান কে হাতিয়ার করে তিনি লেখেন ‘চললাম’। শুধু তাই নয় নিজের সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তার অভিমানের কথা প্রকাশ করে এদিন লেখেন, “ভোটের আগে নেতৃত্বের সঙ্গে মতান্তর হয়েছিল। বাংলাকে বিজেপি সিরিয়াসলি নিচ্ছে না।” যদিও বাবুদের এই হঠাৎ ইস্তফাকে পুরোপুরি নাটক বলে পাল্টা তোপ দেখলেন কুণাল ঘোষ। পাশাপাশি খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতি এই ঘটনাকে খুব একটা আমল না দেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, তবে কি মন্ত্রীত্ব খুইয়েই এত কাণ্ড বাবুলের।

 

Previous articleকোভিড আবহেই পঠনপাঠন চালু করার সিদ্ধান্ত নিল পাঞ্জাব সরকার
Next articleঅবশেষে সাফল্য, পুলওয়ামা হামলার মূলচক্রীকে নিকেশ করল নিরাপত্তা বাহিনী