Tuesday, December 16, 2025

তারিখটা লিখে রাখুন, দেড় বছর পর ত্রিপুরায় সরকার গড়বে তৃণমূল: অভিষেক

Date:

Share post:

#এবার ত্রিপুরা- এভাবেই সোমবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Bandyopadhyay) সফরকে বিবৃত করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেখানে গিয়ে সরাসরি লক্ষ্য জানিয়ে দিলেন তৃণমূল (Tmc) সাংসদ। বললেন, “আজকের তারিখটা লিখে রাখুন। ঠিক দেড় বছর পর এখানে সরকার গড়বে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) নেতৃত্বে 2023-এ ত্রিপুরায় সরকার গঠন করব। সেই লক্ষ্যেই আজকে স্থির করে দিয়ে যেতে চাই”।

এদিন সাড়ে এগারোটায় আগরতলার মাটি ছোঁয় অভিষেকের বিমান। কিন্তু তারপরের থেকে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির যাওয়া পর্যন্ত রাস্তাটা মোটেই মসৃণ ছিল না। পদে-পদে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। সব বাধা কাটিয়ে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে ত্রিপুরার (Tripura) বিজেপি (Bjp) সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অভিষেক। বলেন, যা বলার বলবেন চারটের সাংবাদিক বৈঠকে। আর সেখানেই সরাসরি লক্ষ্য জানিয়ে দেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, “এই স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে আজ থেকে আমাদের লড়াই শুরু হল, এটা অনেক দিন চলবে”। এরপরেই এদিন তারওপর হামলার ঘটনা তুলে ধরে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, বিজেপি নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করে অথচ মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার সময় তাঁর গাড়িতে বাঁশ-লাঠি-রড দিয়ে হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, “অতিথি দেব ভব” বলার পরে যে কাণ্ড ঘটিয়েছে সেটা সবাই দেখছেন। “মা ত্রিপুরেশ্বরী কাছে আমি যাতে পৌঁছতে না পারি, তার সবরকম চেষ্টা করা হয়েছে। আমাকে আটকানো যায়নি, আমি মন্দিরে পুজো দিয়েছি। আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা 3 জন কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের পিঠে, কোমরে চোট লেগেছে”। এরপরেই সুর চড়ান অভিষেক। বলেন, “আমরা সিপিএম (Cpm) নই, যে চিমটি কাটলে বসে যাব। তৃণমূলকে যত তাতাবে, তত শক্তিশালী হবে”।

আরও পড়ুন:“লেখার স্বাধীনতা থাকা উচিত”, “জাগো বাংলা-অজন্তা” ইস্যুতে মতামত CPI (ML)-এর

এর পরেই অভিষেক বলেন, ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় তাঁদের সাংগঠনিক কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এদিন থেকে তৃণমূল সেখানে পা রাখল এবং দেড় বছরের মধ্যে সেখানে সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। একইসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঘর ভাঙানোর চেষ্টা তাঁরা করছেন না। তবে, ত্রিপুরার অনেক বিধায়কই কলকাতায় তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে তাঁদের দের নাম বললে, তাঁরা অস্বস্তিতে পড়বেন বলেই সাংবাদিক বৈঠকে সেটা বলতে চাননি অভিষেক। তবে, তিনি বলেন, দল ভাঙানোর খেলায় নামলে কয়েকদিনের মধ্যেই ত্রিপুরায় সরকার ফেলে দিতে পারত তৃণমূল। অভিষেকের জানান, ত্রিপুরা হৃতগৌরব উদ্ধার করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়বে তৃণমূল।

এরপরই ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বারবার ডবল ইঞ্জিন সরকারের কথা বলে বিজেপি। অথচ ত্রিপুরায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। উল্টে ত্রিপুরার মানুষের শিক্ষার যে গর্ব ছিল তা তাদের মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে। অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, কেন ত্রিপুরার মানুষকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যেতে হয়? ডবল ইঞ্জিন সরকার কী করছে? ত্রিপুরায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল, তা পালন করছে বিপ্লব দেবের সরকার? ত্রিপুরায় নারী সুরক্ষা বলে কিছু আছে? ত্রিপুরার মানুষের ভালোমন্দ এদের কাছে গুরুত্ব পায় না। “ত্রিপুরায় ডবল ইঞ্জিন সরকার ব্যর্থ। ত্রিপুরার মানুষকে এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে।”

এর, পাশাপাশি অভিষেক বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সরকার গঠন হওয়ার তিনমাসের মধ্যেই তা পালন করেছেন। “তমসাচ্ছন্ন ত্রিপুরায় উন্নয়নের সরকার গড়বে তৃণমূল।”

এরপরই সরাসরি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “15 দিন পর যখন আবার আসব তখনও পারলে আমাকে আটকে দেখাবেন। বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করে গেলাম, আপনার দিল্লির নেতারা যতবার আসবে, তার থেকে পাঁচগুণ বেশিবার আসব ত্রিপুরায়। এবার থেকে মাসে তিন-চার বার আসব।” অভিষেকের মতে, “2016-তে যখন ত্রিপুরায় এসেছিলাম- মানিকবাবুদের সরকার ছিল। তখন এত খারাপ পরিস্থিতি ছিল না”।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দুয়ারে সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, আর ত্রিপুরায় রয়েছে দুয়ারে গুন্ডা- এই মন্তব্য করে অভিষেক বলেন, “ত্রিপুরায় চমকানি-ধমকানি আর চলবে না। সমাজ বিরোধীদের খেলা শেষ, আজ ত্রিপুরার মানুষের খেলা শুরু। ত্রিপুরায় বিরোধী নেই বলেই বিজেপি অত্যাচার করতে পারছে। আজ থেকে এর ইতি হল”।

রাজনৈতিক মহলের মতে বিপ্লব থেকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে পরোক্ষে ত্রিপুরায় তৃণমূলের সংগঠনকে শক্তিশালী করার বার্তায় দিলেন অভিষেক।

 

spot_img

Related articles

মোটা অঙ্কের বাজেট নিয়ে মিনি নিলামে নামছে কেকেআর, দল পেতে পারেন ঈশ্বরণ

মঙ্গলবার আবুধাবিতে ২০২৬ সালের আইপিএলের মিনি নিলাম(IPL Mini Auction)। ৭৭টি জায়গার জন্য নিলামে উঠবেন ৩৫০ ক্রিকেটার। এই ৩৫০...

বাংলা না কি জ্বলছে! গদি মিডিয়ার অপপ্রচারকে ধুয়ে দিলেন সাধু থেকে আমজনতা

বাংলা না কি জ্বলছে! এখানে খুন-জখমের রাজনীতি চলছে! আক্রান্ত হিন্দু! গদি মিডিয়া এই খবর করতে এসেছিল কলকাতায় আর...

রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা! কেন্দ্রের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে লোকসভায় সোচ্চার তৃণমূল

পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে বাগে আনতে না পেরে এবার দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো লঙ্ঘন করে...

মতুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা! রাজ্যসভায় বিজেপির পর্দাফাঁস সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের

পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মতুয়াকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছে মোদি সরকার ও বিজেপি—এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার...