বছরে ১০টি ভারতীয় সিনেমা আমদানি করার অনুমতি চায় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি

খায়রুল আলম , ঢাকা

দেশের চলচ্চিত্র ব্যবসা এবং সিনেমা হলের সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে তিন বছরের জন্য ১০টি করে ভারতীয় সিনেমা আমদানি করতে চায় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠিও লিখেছে তারা।গত ১৬ অগাস্ট চিঠিটি গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রবিবার প্রদর্শক সমিতির তরফে একথা জানানো হয়েছে ।

আরও পড়ুন- সত্যি হল মার্কিন আশঙ্কা, ফের বিস্ফোরণে কাঁপল কাবুল বিমানবন্দর

প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ, প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাশ এবং সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠির বিষয়- সিনেমা হলের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ব্যবসা ও চলচ্চিত্রের বাজার টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ভারতীয় ছায়াছবি আমদানির ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সীমিত সংখ্যায়, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমদানি ও প্রদর্শনের সুযোগদানের আবেদন করা হয়েছে ।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০১০-এর জানুয়ারিতে প্রকাশিত বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশ জারি করে । সেই নির্দেশনামায় আমদানি উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত ছায়াছবি আমদানির ওপরে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বলা হয় । চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী নির্মাতা-কলাকুশলীদের এর বিরোধিতা করেন। ফলে সেই আদেশ ১০/০৬/১০ তারিখে বাতিল করে পুরনো আমদানি নিষেধাজ্ঞা বহাল করা হয়।

‘এই দশ বছরে দেশের চালু সিনেমা হলের সংখ্যা এক হাজার ২৩৫টির স্থলে ১১৫টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশে নির্মিত ছবির সংখ্যা বছরে ১১০টির স্থলে ৩০-৩৫ টিতে নেমে এসেছে, যার মধ্যে মাত্র ২-৩টি ছবি বাজারে ব্যবসা করে।’

চিঠিতে বলা হয়, যারা ভারতীয় সিনেমা আমদানির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল ২০১০ সালে, তারাই অর্থাৎ ছবি নির্মাণে পুঁজি বিনিয়োগকারী প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি প্রকাশ্যে ভারতীয় সিনেমা আমদানির পক্ষে মত দিয়েছে এবং স্লোগান দিচ্ছে ‘সিনেমা হল বাঁচলে চলচ্চিত্র বাঁচবে’।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ আমাদের পঙ্গু করে দিয়েছে। এখন ব্যাপক দর্শকশ্রেণিকে সিনেমা হলে আনতে না পারলে সিনেমা হল যেগুলো অবশিষ্ট আছে, সেগুলোও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে । দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, দেশীয় ছবির স্বল্পতা এবং ব্যবসায়িক মানের গতিতে সিনেমা হলমালিকরা ঋণ গ্রহণে যেমন অনীহা প্রকাশ করছেন, তেমনি তফসিলি ব্যাংকগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের কর্তাব্যক্তি সিনেমা হলের ব্যবসায়িক সম্ভাবনার নেতিবাচক অবস্থা বিবেচনায় ঋণদানের বিষয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

‘আমরা নিশ্চিত ভারতীয় ছবির আকর্ষণে সিনেমা হলে দর্শকের ঢেউ নামবে, সিনেমা হল মালিকরা আগ্রহী হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ঋণ গ্রহণ করে সিনেমা হল আধুনিক করবে এবং নতুন সিনেপ্লেক্স তৈরি হবে। ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেলে ব্যাংকগুলোও সাহসের সঙ্গে ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসবে। বাজারব্যবস্থা শক্তিশালী হবে, ফলে দেশেও সিনেমা নির্মাণের সংখ্যা বেড়ে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সবশেষে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি বলছে, ‘সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় তিন বছরের জন্য প্রতিবছর ১০টি করে ভারতীয় ছবি আমদানির জন্য আপনার সদয় নির্দেশনার প্রার্থনা করছি।’

এ ব্যাপারে রবিবার চলচ্চিত্র পরিচালক, পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সেন্সর বোর্ডের সদস্য মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘নির্দিষ্ট পরিমাণ সিনেমা একটা সময়ের জন্য আসতে পারে।’

পরিচালক সমিতির বর্তমান সভাপতি ও চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘কয়েক দিন পর তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক আছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। যেটা ভালো হবে সেটাতে আমরা থাকব।’

তবে ভারতীয় সিনেমা আনার বিরোধিতা করেছেন প্রযোজক নেতা আলিমুল্লাহ খোকন। এ ছাড়া অভিনেত্রী মৌসুমী ও অরুণা বিশ্বাস এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

advt 19

 

Previous articleমাঠে নামলো না এটিকে মোহনবাগান, মঙ্গলবার অনিশ্চিত এসসি ইস্টবেঙ্গল, ক্ষুব্ধ আইএফএ
Next articleগ্রেফতার কুখ্যাত মোটা রাজা, আর্থিক পুরস্কার পেলেন পুলিশ কর্মীরা