Sunday, November 9, 2025

করোনার জের : পুজো আসছে, কিন্তু এখনও শূন্যতা মালদহের তাঁতিপাড়ায়

Date:

কিছুদিন আগেও পুজোর আগে তাঁতের খটাখট শব্দে মেতে থাকতো মালদহের সাহাপুর অঞ্চলের বিভিন্ন তাতিপাড়া ।গমগম করত জনসমাগমে, তৈরি হতো বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, গামছা, ধুতি। চাহিদাও ছিল তুঙ্গে। কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়া, সর্বোপরি করোনা আবহে আজ এই সমস্ত অঞ্চলে এখন কেবলই শূন্যতা আর হতাশা। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা মেশিন এর উপর এখন, ঝুল আর ধুলোর আস্তরণ। কোথাও বা মেশিন এর উপরেই গজিয়ে উঠেছে আগাছা। কাজ হারিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এখনো কয়েকটা মেশিন ধুকিয়ে ধুকিয়ে চললেও, কাজের অভাবে তা প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে।

 

মালদহের সাহাপুর, মঙ্গলবাড়ী, তাতিপাড়া অঞ্চলে এক সময় এমন বহু মানুষের বাস ছিল। যারা কেবল মাত্র বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পকে ঘিরে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। তখন এই সমস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল কয়েক হাজার তাঁতি পরিবার। প্রতি বাড়িতেই ৩-৪ বা তারও বেশি তাঁতের মেশিন থাকতো।

সারা বছরেই এই সমস্ত মেশিনে উৎপাদন হতো শাড়ি, ধুতি, গামছা।যা বিক্রি করেই এই সমস্ত পরিবার তাদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। আর এই পরিবারে কাজে সাহায্য করতেন আরও কয়েক হাজার মানুষ, যেখান থেকে উপার্জিত অর্থ দ্বারা চলত তাদের সংসার।

প্রতিবছর পুজো আসছে, এই সমস্ত তাঁতি পাড়ার ব্যস্ততা থাকতো তুঙ্গে। তাঁতের মেশিনের শব্দ গমগম করত এলাকা। তৈরি হতো চাহিদামত তাঁতের বস্ত্র।পরে তা চলে যেত মালদহের বিভিন্ন প্রান্ত, পশ্চিমবঙ্গের কিছু নির্দিষ্ট জেলা ছাড়াও, রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী বিহার সহ অন্যান্য রাজ্যে।পুজো, ঈদের সময় মালের চাহিদা এতটাই বেশি থাকতো যে এই সময় উপার্জিত অর্থ দিয়েই এলাকার তাঁতিদের সারা বছরের সংসার চালানোর সংস্থান হয়ে যেত।

কিন্তু ধীরে ধীরে সময় পাল্টেছে। আধুনিকতার কাছে হার মেনেছে এই দেশীয় শিল্প। চাহিদামত প্রযুক্তি না পাওয়া, সরকারি অবহেলায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে জেলার এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প।আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় সর্বোপরি উৎপন্ন পণ্যের সঠিক দাম না মেলায় অনেকেই এ কাজ ছেড়েছেন। বহু মানুষ এই কাজ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন ভিন রাজ্যে। অনেকে বা অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত করেছেন নিজেদের।

এখন মাত্র কয়েকটা ঘর এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন। তবে, করোনা আবহে, মালের চাহিদা ধীরে ধীরে কমে যাওয়া। এবং পরিশ্রম অনুযায়ী মালের দাম না পাওয়ায়, উৎসাহ হারাচ্ছেন তারাও। আগামীতে তারাও এই কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন।

Related articles

বেঁচে থাকলে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত! পুরুলিয়ার সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ দেবাংশুর

ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বেঁচে নেই। নইলে বিজেপি রবীন্দ্রনাথকে রোহিঙ্গা ও নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত। শনিবার পুরুলিয়া শহরের...

টাকা পেয়েও কাজে দেরি! ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে কড়া প্রশাসন, রিপোর্ট চাইল নবান্ন

প্রথম দফায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওয়ার পরও বহু উপভোক্তা এখনও ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের কাজ শুরু করেননি।...

ঝুলনের চোখে বাংলার সেরা ক্রিকেটার রিচা, মহিলা ক্রিকেটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সৌরভ

বাংলার বিশ্বকাপ জয়ী একমাত্র ক্রিকেট তারকা রিচা ঘোষের (Richa Ghosh) সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে শনিবার ইডেন গার্ডেন্সে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন...

সৌরভ ছাড়া অন্য কারও ICC সভাপতি থাকার কথা নয়: বললেন ‘ঠোঁটকাটা’ মমতা

ছিল বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার রিচা ঘোষের (Richa Ghosh) সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। শনিবার ইডেনে সেই অনুষ্ঠানে বোমা ফাটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের...
Exit mobile version