Wednesday, August 27, 2025

করোনার সঙ্গে বাঁচতে হবে, করোনাকে সঙ্গে নিয়েই পথ চলতে হবে। এই মন্ত্র সামনে রেখে অতিমারির কালো অধ্যায় কাটিয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে কয়েকটি দেশ। প্রায় দু’বছর হতে চলল করোনার সঙ্গে লড়াই করছে বিশ্ব। বারবার লকডাউনে বিপর্যস্ত বহু বড় দেশের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতেই করোনার সঙ্গে মানিয়ে চলার নীতি নিয়েছে কিছু দেশ। এদের অস্ত্র করোনা ভ্যাকসিন।

ডেনমার্ক: ১০ সেপ্টেম্বর থেকে এই দেশে সমস্ত করোনাবিধি তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের স্পষ্ট যুক্তি, করোনা শুধু স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে না, তা সার্বিকভাবে সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই এই অসুখকে ভয় পেয়ে গৃহবন্দি হয়ে থাকলে চলবে না। ডেনমার্কে এখন নাইট ক্লাব, রেস্তোরাঁ যেতে গেলে আর কোভিড পাসপোর্ট দেখাতে হচ্ছে না। মাস্ক ছাড়াই মানুষ যেতে পারছেন ট্রেনে, বাসে। দেশবাসী দ্রুত ফিরতে চাইছেন স্বাভাবিক জীবনে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, ডেনমার্ক তাদের জনসংখ্যার ৭৪ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ দিয়ে দিয়েছে। সেখানে এখন সংক্রমণ মাত্রা ০.৭, অর্থাৎ একের নিচে, যা আরও কমবে বলেই ধারণা প্রশাসনের।

চিলি: ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে প্রথম থেকেই ভাল কাজ করছে চিলি। এদেশের সরকারের তথ্য অনুযায়ী, তাদের জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়েছে। যারা দুটি ডোজ নিয়ে নিয়েছেন, তাঁদের বুস্টার ডোজ দেওয়াও শুরু করেছে সে দেশের সরকার। এখানেও আন্তর্জাতিক পর্যটন দ্রুত শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পয়লা অক্টোবর থেকে শুরু হবে আন্তর্জাতিক পর্যটন কর্মসূচি।

দক্ষিণ আফ্রিকা: ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সমস্যা থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরে এখানে সংক্রমণ মাত্রা কমেছে। তাই করোনা বিধিনিষেধ কমানো শুরু করেছে প্রশাসন। নাইট কার্ফিউ কমিয়ে ১১টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত করা হয়েছে। এখন দক্ষিণ আফ্রিকায় একসঙ্গে ৫০০ মানুষ একত্রিত হতে পারবেন। আগে এই সংখ্যাটা ছিল ২৫০। এই দেশও ভ্যাকসিনে ভর করেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে চাইছে।

সিঙ্গাপুর: এই দেশের প্রশাসনও করোনার সঙ্গে বাঁচার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিকল্পিত পদক্ষেপ করছে। জুন মাস থেকেই এই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে তারা। করোনাকে রোধ করার জন্য টিকাকরণ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতিতে জোর দিচ্ছে সরকার। তবে সদ্য এখানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে। তাই যে সমস্ত বিধিনিষেধ পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়েছিল তা আবারও ফিরিয়ে নেওয়া হতে পারে শীঘ্রই।

থাইল্যান্ড: এই দেশ অনেকটাই নির্ভরশীল পর্যটনের উপর। বিদেশি অর্থ আসে এর মাধ্যমেই। করোনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে মার খাচ্ছে পর্যটন। তাই দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে চাইছে দেশের সরকার। আগামী মাসেই ব্যাংকক-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রগুলি খুলে দেওয়ার কথা ভাবছে তারা। তবে থাইল্যান্ডের মূল সমস্যা টিকাকরণ। কম জনসংখ্যার দেশ হলেও মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ দিতে পেরেছে প্রশাসন। তাই টিকাকরণে গতি আনার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
সব মিলিয়ে আর পাঁচটা ভাইরাসঘটিত অসুখের মতোই করোনাকে মানিয়ে নিয়েই বিকল্প বাঁচার পথ খুঁজছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আর এই কাজে প্রধান অস্ত্র অবশ্যই গণ-টিকাকরণের সাফল্য। সব দেশই চাইছে ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ দ্রুত শেষ করতে।

আরও পড়ুন- বিশেষ দিনে রেকর্ড কোভিড টিকা, পরিসংখ্যান তুলে  কড়া আক্রমণ বিরোধীদের

 

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...
Exit mobile version