দ্রুত গরম হচ্ছে পৃথিবী, প্রতি দশকে দ্বিগুণ হচ্ছে ৫০ ডিগ্রি ছোঁয়ার সংখ্যা

দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে আমাদের এই পৃথিবী। বদলে যাচ্ছে জলবায়ু, সেই সঙ্গে বাড়ছে বিশ্বের তাপমাত্রা। বিবিসি-র এক প্রতিবেদন দেখাচ্ছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে প্রতি দশকে দৈনিক তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছনোর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। নতুন নতুন জায়গায় তাপমাত্রা বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। তাপমাত্রার এই দ্রুত বদল চিন্তায় ফেলছে বিশেষজ্ঞদের। স্বাভাবিকভাবেই প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যে।

পরিবেশবিদদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ১৯৮০ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত এই ২৯ বছরে প্রতি বছর গড়ে বিশ্বের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে ১৪ দিন করে। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যাটা ছিল ২৬ দিন।

সাধারণত ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা দেখা যায় মধ্যপ্রাচ্য ও আরব উপসাগরীয় দেশগুলিতে। ঘটনা হল, বিগত কয়েক বছরে এমন এমন দেশে তাপমাত্রা পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই হয়ে গিয়েছে, যা কল্পনাতীত। সম্প্রতি যেমন ইতালিতে তাপমাত্রা রেকর্ড ৪৮.৮ ডিগ্রিতে পৌঁছে গিয়েছিল এবং কানাডায় তাপমাত্রা হয়েছিল সর্বোচ্চ ৪৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এগুলি ওই দেশগুলির নিরিখে রেকর্ড তাপমাত্রা ছিল। যে দেশে ঠান্ডায় নায়গ্রার মতো জলপ্রপাতের জল বরফ হয়ে গিয়ে স্তব্ধ হয়ে যায়, সেখানে এত গরম ধারণার বাইরে।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি তাপমাত্রার হিসাব তুলনা করলে ১৯৮০ থেকে ২০০৯ এই সময়কালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পূর্ব ইউরোপ, আফ্রিকার দক্ষিণাংশ ও ব্রাজিলে তাপমাত্রা বেড়েছে আরও বেশি। ব্রাজিলে সর্বোচ্চ ১ ডিগ্রির চেয়ে বেশি বেড়েছে তাপমাত্রা। আফ্রিকাতেও দেখা গিয়েছে একই চিত্র। আর্কটিক ও মধ্যপ্রাচ্যে ২ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত নভেম্বরে গ্লাসগোতে হবে রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ সম্মেলন। সেখানে তাপমাত্রার বৃদ্ধি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কথা আগে থেকেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাপমাত্রা বদলের এই প্রবণতা প্রসঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট চেঞ্জ ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক ফ্রেডরিক অটো বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর জন্য এই তাপমাত্রার বৃদ্ধি ১০০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। জলবায়ুর পরিবর্তন যেভাবে বাড়ছে তাতে অতিরিক্ত তাপমাত্রা মানুষ ও প্রকৃতির জন্য মৃত্যুর কারণ হতে পারে। একইসঙ্গে বাড়ি, সড়ক, বৈদ্যুতিক শক্তি-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
উত্তাপ অতিরিক্ত বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ভবিষ্যৎ পৃথিবীর অস্তিত্ব। তাপমাত্রা যত বাড়বে তত বরফ গলবে, বাড়বে সমুদ্রের জলস্তর। নতুন নতুন ভূখণ্ড প্লাবিত হয়ে বড় সংকটে ফেলবে মানব সভ্যতাকে।

আরও পড়ুন- কাজিয়া কেন্দ্রের দুই মন্ত্রকের, বন্ধ লাদাখের পরিকাঠামো নির্মাণ

advt 19

 

Previous article১ অক্টোবর থেকে চালু নয়া শ্রম আইন
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ