অবসর নেওয়ার 12 বছর পর অবশেষে চালু হল ইরা বসুর (Ira Basu) পেনশন। বুধবার, জেলা স্কুল পরিদর্শক (DI) নিজে গিয়ে তাঁর হাতে পেনশনের কাগজ তুলে দেন। মঙ্গলবারই অর্থ দফতরের তরফে ইরা বসুর পেনশনের অনুমোদন মেলে। কাগজ হাতে পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Bandyopadhyay) ধন্যবাদ জানিয়েছেন খড়দহের প্রিয়নাথ গার্লস হাইস্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা। তাঁদের জন্যই দ্রুত পেনশনের ব্যবস্থা হল বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডিআই-কেও। তবে ইরার কোনও সম্পত্তি গ্রহণ করতে নারাজ বোনঝি সুচেতনা ভট্টাচার্য।
কিছুদিন আগে ডানলপের কাছে ফুটপাথে দেখা মেলে উচ্চশিক্ষিতা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ইরা বসুর। তাঁর পরিচয় সামনে আসতেই হতবাক সবাই। ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এ সে খবর প্রকাশিত হয়। প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে থাকতে চাননি ইরা। এমনকী, সল্টলেকে নিজের বাড়িতেও যেতে চাননি। সেখানে তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কা আছে বলে জানান এই বৃদ্ধা। যান খড়দহে এক পরিচিতের বাড়ি।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) শ্যালিকা ইরা বসুর ভবঘুরে জীবনের কথা শুনে তাঁর কাছে প্রতিনিধি পাঠান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের কাছেই পেনশন চালুর আর্জি জানান ইরা। সেই শুনে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেন অভিষেক। প্রাপ্য পেনশন ও গ্র্যাচুইটি যাতে ইরা দ্রুত পান, সে বিষয়ে সচেষ্ট হন তৃণমূল সাংসদ। মঙ্গলবার, অর্থ দফতর তাঁর প্রাপ্য পেনশন ও গ্র্যাচুইটির টাকা দেওয়ার অনুমোদন দেয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মেয়ে ইরার বোনঝি সুচেতনাকে (Suchetana Bhattacharya) তাঁর নমিনি করেন ইরা।
কিন্তু এই খবর সামনে আসতেই ক্ষুব্ধ সুচেতনা ভট্টাচার্য। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন ইরা বসুর কোনও সম্পত্তি তিনি গ্রহণ করবেন না। “ইরার ব্যবহারে তাঁর বাবা-মা ও তিনি অত্যন্ত বিরক্ত। ভবিষ্যতে ইরা বসুর কোনও বিষয়ে যাতে তাঁদের নাম জড়ানো না হয়”- সে বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে জানান সুচেতনা।
আরও পড়ুন – বঙ্গোপসাগরে জোড়া ঘূর্ণাবর্ত, রবিবার থেকে ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গে
এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও, ইরা বসু বলেন, “আজ খুশির দিন আমি পুরনো কোনো তিক্ততা মনে রাখতে চাই না”। ভবিষ্যতে আবার শিক্ষকতা করার ইচ্ছে রয়েছে জীবন বিজ্ঞানের এই শিক্ষিকার।