বিশ্ব শান্তির সম্মেলনের সভায় রোমে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতের একজন প্রতিনিধি হয়ে সেখানে যাবেন বলেন মনস্থির করেন। পুজোর ঠিক আগেই আগামী ৬ ও ৭ অক্টোবর রোমে ওই সভা হওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ কেন্দ্রীয় বাধা। ভারত সরকার চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, রোমে যেতে দেওয়া যাবে না বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। যা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শনিবার বিকেলে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে কলিন লেনের নির্বাচনী সভায় তাঁকে অন্যায় ভাবে রোম যেতে বাধা দেওয়ার জবাব দিলেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়, “বিশ্ব শান্তির জন্য সভা ছিল রোমে। দু’মাস আগে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। জার্মান চ্যান্সেলর, হোলি পোপ, মিশরের ইমাম ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। আমাকে যেতে বলেছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আমাকে বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল ইতালি সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার চিঠি দিয়ে অনুমোদন বাতিল দিয়েছে। কারণ নাকি মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়াটা ঠিক নয়। আমি যেখানেই যাই মানা করে দেয়। আর ওরা এদিক-ওদিক ঘোরে।”
আরও পড়ুন-ওরা বোঝাপড়া করে চলে! ভবানীপুরের প্রচারে বিজেপি-কংগ্রেসের “আঁতাত” তুলে ধরলেন মমতা

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমেরিকা সফরকে কটাক্ষ করেন তিনি। ”এখনও কোভ্যাকসিনের স্বীকৃতি দেয়নি হু। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিশেষ অনুমতি নিয়ে চলে গেলেন বিদেশে। একবারও ভাবলেন, কত শিল্পপতি, পড়ুয়া যেতে কোভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য যেতে পারেননি! প্রধানমন্ত্রীর যাওয়াতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু রোমে আমাকে কেন দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে দিলেন না? শান্তির ব্যাপারে কেন আমাকে আটকে দিলেন? এভাবে আমাকে আটকাতে পারবেন না। যেতে দিলে লোকে দুঃখিত হত না।”

রোম সফর প্রসঙ্গে এদিন বিজেপির তথাকথিত হিন্দুত্বের রাজনীতিকেও একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, “আমাকে যেতে না দিয়ে বেআইনি কাজ করছে। আমি বিদেশে ঘুরতে চাই না। আমার শখ নেই। কিন্তু এখানে দেশের সম্মান জড়িত। আমি গেলে তো ভারতেরই নাম হতো। সব ধর্মের লোক থাকবে। পোপ খৃষ্ট্রান, মিশরের ইমাম মুসলিম, জার্মান চান্সেলর খ্রিষ্টান। বিজেপি হিন্দু হিন্দু করে এতো আওয়াজ তোলো, অথচ আমি একজন হিন্দু মহিলা। যেখানে সব ধর্মের প্রতিনিধিরা থাকবেন সেখানে আমাকে যেতে বাধা দিচ্ছে কেন কেন? আসলে ওরা আমাকে হিংসা করে। হিংসা থেকেই রোমে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিচ্ছে না। ওরা সকলের স্বাধীনতা খর্ব করছে। হিন্দুস্তান হিন্দুস্তান থাকবে। ওদের গা-জোয়ারি চলবে না।”
