ভারতের ইতিহাসে সুন্দরী-মহিয়সীরা

ভারতের ইতিহাসে সম্রাট, রাজা, বীর যোদ্ধাদের পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছেন বীরাঙ্গনারাও। তবে সেই নারীরা যে শুধুই অন্তরের শক্তিতে বলিয়ান ছিলেন তা নয়, তাঁদের সৌন্দর্য ছিল জগৎ বিখ্যাত। লোকমুখে তাঁদের রূপের কথা শুনেই অনেক রাজাই তাদেরই বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। ইতিহাসের এমনই কয়েকজন বিখ্যাত নারী হলেন মীরাবাঈ, রাজিয়া সুলতানা, লক্ষ্মীবাঈ প্রমুখ।

১৬ শতকে সুন্দরী নারী ছিলেন মীরাবাঈ। রাজকন্যা মীরার রূপের বর্ণনা শুনে তাঁকে বিয়ে করতে চান মহারাজা ভোজ। কিন্তু মীরা ছিলেন কৃষ্ণ ভক্ত। তবে, পারিবারিক পরিস্থিতিতে তিনি রাজা ভোজকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। কিন্তু আজীবন কৃষ্ণ প্রেমই ছিল তাঁর ধ্যান জ্ঞান। মীরার রূপ ছিল অসামান্য। তবে স্বামীর সঙ্গে কোনদিনই তাঁর প্রেমের সম্পর্ক হয়নি।

ইতিহাসে ক্ষমতাশীল নারীদের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে রাজিয়া সুলতানার নাম। অসীম সাহসী এই নারী যেমন অসামান্যা সুন্দরী ছিলেন। তেমনই ছিল তাঁর বুদ্ধি। এই কারণেই ইলতুতমিস তাঁর পরে মসনদে তাঁকেই বসিয়েছিলেন। রাজিয়া ছিলেন পর্দা প্রথার বিরোধী। তার ফলে বহু গোঁড়া মুসলিম আমলাদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন তিনি। রাজিয়া ঠিক করেন কখনও বিয়ে করবেন না। কিন্তু তাঁরই সাম্রাজ্যের অধীনে এক জায়গীরের প্রধান আলতুনিয়া তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। শেষ পর্যন্ত রাজি হন রাজিয়া

রানি পদ্মাবতী নাম ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। বুদ্ধিমতী রানি পদ্মাবতীর রূপের ছটা ছড়িয়ে পড়েছিল হিন্দুস্থানের বাইরে। আলাউদ্দিন খিলজির নজর ছিল তাঁর উপর। রাজা রতন সিংয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় পদ্মাবতীর। কিন্তু তাঁকে পাওয়ার বাসনায় রতন সিং-এর সঙ্গে যুদ্ধে নামেন আলাউদ্দিন খিলজি। রতন সিং হেরে যাওয়ার কথা শুনে কঠিন সিদ্ধান্ত নেন রানি পদ্মাবতী। রাজ্যের হাজার নারীকে নিয়ে জহরব্রততে প্রাণ ত্যাগ করেন তিনি।

বিদুষী সুন্দরী নারীদের তালিকায় অবশ্যই স্থান পাবেন মহারানি গায়েত্রী দেবী। এখনও পর্যন্ত ইতিহাসে তিনিই একমাত্র রানি যিনি পাঁচ মাস তিহার জেলে বন্দি ছিলেন। ভারতে রাজ-প্রথা অবলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পরে গায়ত্রী দেবী ভোটে দাঁড়ান এবং একলাখেরও বেশি ভোটে জিতে ইতিহাস তৈরি করেন। ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করায় তাঁর মতের বিরোধিতা করেন গায়ত্রী। ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে পাঁচ মাস তিহার জেলে থাকতে হয়। জেল কর্তৃপক্ষের মতে, তাঁর মতে, সুন্দরী মহিলা আজ পর্যন্ত আর তিহার জেলে থাকেননি।

সংযুক্তা-পৃথ্বীরাজের প্রেম কাহিনী ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। রাজকুমারী সংযুক্তা ছিলেন রাজা জয়চাঁদ কন্যা তার রূপে মুক্ত ছিল আসমুদ্রহিমাচল তবে তাকে ভালোবাসতেন পৃথ্বীরাজ চৌহান সংযুক্ত থাকে মনে মনে চাইতেন কিন্তু জয়চাঁদ ছিলেন পৃথ্বীরাজের শত্রু হলে এই সম্পর্ক মেনে না নিয়ে রাজা জয়চাঁদ কন্যার আয়োজন করেন সেখানে পৃথ্বীরাজ চৌহানের মূর্তিতে মাল্যাদান সংযুক্তা সেই স্বয়ংবর সভা থেকেই সংযুক্তা কে হরণ করে নিয়ে যান পৃথ্বীরাজ চৌহান পৃথ্বীরাজ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও সংযুক্তা পৃথ্বীরাজ কে আলাদা করা যায়নি।

ভারতের ইতিহাসে বীরাঙ্গণা নারীদের মধ্যে যিনি প্রাতঃস্মরণীয়, তিনি হলেন রানি লক্ষ্মীবাঈ। ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি। তবে, তাঁর রূপ ছিল ভুবনভোলানো। যে ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করেছেন, তাদের বশ্যতা কোনোদিন স্বীকার করেননি, সেই ইংরেজ লেখকদের কাহিনীতেও রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের সৌন্দর্যের বর্ণনা দেওয়া আছে। অসীম সাহসিকতার সঙ্গে মিশে ছিল লক্ষ্মীবাঈয়ের অপরূপ সৌন্দর্য।

তবে এঁরাই শুধু নন, ভারতের ইতিহাসে আরও অনেক নারী রয়েছেন রূপে-গুণে যাঁরা আজও অমর।

আরও পড়ুন:অবশেষে টাটা গোষ্ঠীর হাতে এল এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা

 

Previous articleঅবশেষে টাটা গোষ্ঠীর হাতে এল এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা
Next articleগেরুয়া শিবিরে ফের উইকেট পতন, বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর