দেশ বাঁচানোর লড়াইয়ে বাংলাই মডেল: ‘জাগোবাংলা’-র উৎসব সংখ্যায় লিখলেন অভিষেক

মহামতি গোখলে সেই কবেই বলেছিলেন, ‘হোয়াট বেঙ্গল থিঙ্কস টুডে, ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুমরো’। ২০২১-এ দাঁড়িয়ে গোপালকৃষ্ণ গোখলের সেই কথা ফের একবার শিরোনামে। বিশেষ করে বাংলার নির্বাচন যুদ্ধে বিজেপি নামের বিভেদকামী শক্তিকে বিধ্বস্ত করে তৃণমূল কংগ্রেসের ঐতিহাসিক জয়ের পর আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে গোখলের সেই বাণী। কারণ, একুশের এই নির্বাচনী সাফল্য গোটা দেশকে বুঝিয়ে দিয়েছে, না বিজেপি আর অপরাজেয় শক্তি নয়। তাঁদেরও হারানো যায়, তবে শর্ত একটাই, বিপক্ষ দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত একজন আপোসহীন, বেপরোয়া, ক্লান্তিহীন যোদ্ধা থাকতে হবে। তৃতীয়বার বাংলার মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে মসনদে বসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই এখন গোটা দেশের চর্চার বিষয়। গোটা দেশই এখন বিজেপিকে হঠাতে বাংলা মডেলেই ভরসা রাখছেন। ‘জাগোবাংলা’-র উৎসব সংখ্যায় সেই মডেলের পক্ষেই ফের আরও একবার জোরাল সওয়াল করলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলা মডেলের সপক্ষে মুখ খুলে অভিষেক বলেন, ‘আগামী দিনে দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপিকে উৎখাত করার লড়াইয়েও পথ দেখাবে বাংলা। বিধানসভা নির্বাচনে মানুষের আশীর্বাদ ও অকুণ্ঠ সমর্থন আমাদের দায়িত্ব বৃদ্ধি করেছে। আমাদের লড়াই এখন উন্নীত হয়েছে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে।’ এ প্রসঙ্গে নিজেদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে অভিষেক আরও লিখেছেন, ‘দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার লক্ষ্য অন্যান্য রাজ্যগুলি বিশেষত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে আমাদের সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি ঘটানো। নেত্রীর বার্তা, আদর্শ ও নাছোড়বান্দা সংগ্রামের মন্ত্র ছড়িয়ে দিতে হবে দেশজুড়ে।’

আরও পড়ুন: যুদ্ধ ভুলে হাসিমুখে বাবুল- কুণাল, কী কথা হল?

তাঁর বিশ্বাস, এ পথেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদি-শাহের অশুভ আঁতাঁতকে পরাজিত করতে করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে তৃণমূল কংগ্রেস।অভিষেক কথায় উঠে এসেছে বাংলার বুকে বহুচর্চিত জমি আন্দোলনের কথাও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সংগঠিত এই জমি আন্দোলন এরই মধ্যে গোটা দেশে এক ‘মিথ’। পাশাপাশি উঠে এসেছে নন্দীগ্রামে বাম সন্ত্রাসের অন্ধকার অতীতের কথাও। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘নন্দীগ্রামের গণহত্যা উন্মোচিত করে বাম শাসনের এক অন্ধকার দিক। সিঙ্গুরের আন্দোলনের পরপরই স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নন্দীগ্রামের মাটিতে সাধারণ মানুষের সম্মিলিত লড়াই রচনা করে আরও এক দুর্দমনীয় আন্দোলনের ইতিহাস। নিজের জীবন বিপন্ন করে নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে বারবার ছুটে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছেন দশকের পর দশক।’ তাঁর সেই লড়াই এখনও শেষ হয়ে যায়নি। কারণ, একুশের নির্বাচনের পর সামনে এবার চব্বিশের লড়াই। সেই লড়াইয়ে গোটা দেশের আলোচনায় এখন বাংলার জননেত্রী। বাংলার নির্বাচনে তাঁকে রুখতে কম কিছু করেনি বিজেপি। তবু বাংলার মাটিতে অপারজেয় তিনি। এবার সেই অপরাজেয় ভূমিকায় তাঁকে দেতে চায় গোটা দেশ, এটাই সময়ের দাবি। অভিষেক বলছেন, ‘নেত্রীকে রুখতে ষড়যন্ত্রের নীল নকশা তৈরি করেছিল বিরোধীরা, তাঁর ওপর নেমে এসেছিল শারীরিক আঘাত, ভোট প্রচারে জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু আপসহীন সংগ্রামের প্রতিমূর্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাথা নত করতে শেখেননি। তিনি ভাঙা পা নিয়ে পাহাড় থেকে সাগর চষে বেড়িয়েছেন, বহিরাগতদের হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করার বার্তা দিয়েছেন।’

মমতার এই আপোসহীন লড়াইটা এবার ২০২৪-এর লক্ষ্যে শুরু হয়েছে। এবারের উৎসব সংখ্যায় দিল্লির ডাক দিয়েছেন নেত্রী। সেই লড়াইয়ে পুরোপুরি ভাবে এরই মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ‘বাংলার যুবশক্তি’। আর তাঁদের পাশে নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেশ বাঁচানোর ব্রত ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
advt 19

 

Previous articleযুদ্ধ ভুলে হাসিমুখে বাবুল- কুণাল, কী কথা হল?
Next articleঅস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টি-২০ ম‍্যাচে নামছে ভারত, সিরিজ জিততে মরিয়া হরমনপ্রীত