পুজোর ক’দিন ইস্ট বেলেঘাটা জনকল্যাণ সংঘে এক মঞ্চে হাজির ছিলেন মোদি, মমতা, রাহুল গান্ধী। নিশ্চয়ই ভাবছেন এটা কী করে সম্ভব? রাজনীতির আঙিনায় তিনজনই যুযুধান প্রতিপক্ষ। তাদের এক মঞ্চে আনলেন কী করে উদ্যোক্তারা? হয় মশাই হয়। বুদ্ধি থাকলে উপায় হয়।
আসলে তাঁদের কাঠের পুতুলের মূর্তি দিয়ে সাজানো হয়েছিল দেবী দুর্গার মণ্ডপ। ৭৮তম বর্ষে ইস্ট বেলেঘাটা জনকল্যাণ সংঘের এ বারের পুজোর থিম ছিল ‘কাঠের পুতুলের জীবন’। আর দর্শকরাও যে পুরো ব্যাপারটাই বেশ উপভোগ করেছেন , তা পুজোর ক’দিন এই মন্ডপে ভিড় দেখেই মালুম পাওয়া গিয়েছে।
প্রতিটি রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল পৃথক মঞ্চ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে এক মঞ্চে ছিলেন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী। তাদের মূর্তি
শিল্পী সমর সাহা জানিয়েছেন, প্রায় দুবছর লকডাউনে কর্মহীন হয়ে যাওয়া শিল্পীদের কাজ ফিরিয়ে দিতেই এই থিম বেছে নেওয়া হয়েছিল। উদ্যোক্তাদের অভিনব চিন্তাধারার বাস্তবায়নের সুযোগটা তাই তারা ছাড়তে চাননি। এক কথায় রাজি হয়ে যান। প্রায় ২ হাজার কাঠের পুতুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল এই অভিনব মণ্ডপ।
পুজো কমিটির কর্তারা জানিয়েছেন, নতুনগ্রামের ২০টি পরিবার গত তিন মাসের নিরলস পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন এই পুজোর মণ্ডপ। পারিশ্রমিক ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর থেকে পাওয়া ৫০ হাজার টাকা এই পরিবারগুলোর হাতে তুলে দিয়ে পুজো উদ্যোক্তারা তাদের শিল্পীসত্তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- শেষপর্যন্ত দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি প্রকাশ করল CBSC বোর্ড
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি থেকে শুরু করে করোনাকালে দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার মতো গুরু দায়িত্ব পালন করে তারা বারবার প্রমাণ করে দিয়েছেন, পুজো মানে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা নয়। পুজো মানে সামাজিক দায়িত্ব পালন, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির আবেগ, প্যাশন।
আসলে সারা বছরই তারা কোনও না কোনও সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। সে রক্তদান শিবির হোক অথবা বস্ত্র বিতরণের মতো অনুষ্ঠান । এবার তারা যে চিন্তাভাবনার পরিচয় দিয়েছেন, তাতে একদিকে যেমন আছে সাহস আর মুন্সিয়ানা, অন্যদিকে অভিনবত্ব ।