Thursday, August 28, 2025

ত্রিপুরা পুলিশের চক্রান্ত বানচাল কোর্টে, সেই জায়গাতেই অভিষেকের সভা

Date:

চক্রান্ত, চক্রান্ত এবং চক্রান্ত। চক্রান্তের কতরকমের রকমফের হয় তার অভিধান খুলেছে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগরতলার সভা বানচাল করতে সবরকমের বেআইনি পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না। মুখ পুড়ল বিজেপির, পুলিশের এবং রাজ্য সরকারের। শনিবার রাতে হাইকোর্ট রায় দিয়ে জানিয়ে দিল আগরতলার সেই জায়গাতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা হবে, যেখানে কথা ছিল। তবে কোভিড বিধি মেনে সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

আগরতলায় অনুমতি নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সভা শনিবার দুপুরে বাতিল করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে বলে পুলিশ প্রশাসন। মঞ্চ অর্ধসমাপ্ত রাখতে বাধ্য করেছে। ভাঙার হুমকি দেওয়া হয়েছে। অন্যায় এই আবদারের কাছে মাথা না নুইয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়েছে, রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আগরতলার নির্দিষ্ট স্থানেই হবে। আগরতলা রবীন্দ্রভবন চত্বরের গায়েই সভার প্রস্তুতি চলছিল। সেখানেই সন্ধে থেকে অবস্থান শুরু হয় তৃণমূল কংগ্রেসের। প্রশাসনের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে হাইকোর্টে সভা করতে চেয়ে মামলা করে তৃণমূল কংগ্রেস। রাত ৯:২০ মিনিটে মামলার শুনানি শুরু হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে সওয়াল করেন সঞ্জয় বসু এবং শঙ্কর লোধ। ঘণ্টা খানেকের কম সময়ের সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারপতি জানিয়ে দেন, সভা করা যাবে। তবে কোভিড বিধি মেনে সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ফলে স্বৈরাচারী রাজ্য সরকারের সব উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। কোর্টের রায় জানার পরেই সভাস্থলে উল্লাসে ফেটে পড়েন কর্মী-সমর্থকরা। উল্লাসের মাঝেই শুরু হয় মঞ্চ তৈরির কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্লেক্স, ফেস্টুন, ফ্ল্যাগ লাগানো শুরু হয়। কর্মীরা নতুন উদ্যমে আগরতলায় গভীর রাতে মেতে উঠেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা সফল করতে।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করবেন ঘোষণা করার পরেই থরহরি কম্প শুরু হয় ত্রিপুরা সরকার এবং প্রশাসনিক মহলে। পুজোর আগে ত্রিপুরা সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে অভিষেকের ত্রিপুরা সভা আটকেছিল। তারপর ফের সভা ঘোষণা করার পরেই নয়া আরটিপিসিআর নীতি লাগু করে প্রশাসন। তাতেও কাজ না হওয়ায় দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে গভীর রাতে এফআইআর দায়ের করে শনিবার তলব করা হয় থানায়। কিন্তু সুবিধে না হওয়ায় তারপরেই প্রশাসন জানায় সভাস্থল পরিবর্তন করতে হবে। সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে আস্তাবলের মাঠে। কারণ কী? প্রশাসনের যুক্তি, সভার অনুমতি নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল ৭০০ জনের মতো সদস্য- সমর্থক আসবেন। কিন্তু তাদের গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, প্রায় হাজার দশেকের বেশি সদস্য-সমর্থক আসবেন। এছাড়া আরটিপিসিআর নীতি লাগু হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন ত্রিপুরার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, এই দু’দিন আগেও বিজেপি বলছিল তৃণমূলের পিছনে দশজনেরও সমর্থন নেই। তাহলে দশ হাজার এল কোথা থেকে? আসলে এটাই বাস্তব। বিজেপি বুঝতে পেরেছে তাদের পায়ের তলার মাটি সরছে। প্রতিদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন বাড়ছে। আর সেই সমর্থন বৃদ্ধির ভয়েই সভা বানচালের নানা চক্রান্ত। শুরু হয় বাড়ি বাড়ি হুমকি, মঞ্চ ভাঙার প্রস্তুতি, র‍্যাফ-পুলিশ এলাকা ঘিরে নেয়। কিন্তু মাথা নত করেননি তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। সভাস্থলে অবস্থান চলেছে, সেইসঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া চলেছে নীরবে। শেষে কাঙ্ক্ষিত জয়।

আরও পড়ুন- মাস্ক উধাও! বিশ্বের তাবড় নেতার সঙ্গে দিব্যি আলিঙ্গন মোদির

 

Related articles

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...

সুখবর! পুজোর আগে পার্ট টাইম কর্মীদের বেতন বাড়াল রাজ্য 

পুজোর আগে রাজ্যের আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিল নবান্ন। বিভিন্ন দফতর ও সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত...
Exit mobile version