Friday, November 7, 2025

পাত পেড়ে খেয়েও ভুলেছেন অমিত শাহ, বিভীষণের মেয়ের ওষুধের দায়িত্ব নিল রাজ্য

Date:

একুশের বিধানসভা ভোটের আগে মমানুষের চোখে ধুলো দিয়ে ভোট পাওয়ার জন্য “ডেইলি পাসেঞ্জারি” করতেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গরিব দরদী বোঝাতে জেলায় জেলায় গিয়ে গরিব মানুষের বাড়িতে পাত পেড়ে খেতেন। গালভরা প্রতিশ্রুতি দিতেন। এবং দিল্লি ফিরে ভুলে যেতেন। অমিত শাহ কথা না রাখলেও, পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য প্রশাসন। বাঁকুড়ার জনমজুর বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে পৌঁছল তাঁর মেয়ের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধ। আগামীদিনেও নিয়মিত ওষুপধ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিলেন স্থানীয় বিডিও এবং বিএমওএইচ।

করুন পরিণতির খবর পাওয়ার পর বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে ছুটে যান বিডিও এবং বিএমএইচ। তাঁর মেয়ের জন্য একমাসের ওষুধ ও ইনস্যুলিন ইঞ্জেকশান পরিবারের হাতে তুলে দেন তাঁরা। আশ্বাস দেওয়া হয়, আগামী দিনেও স্বাস্থ্য দফতর থেকেই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাবেন বিভীষণ। অমিত শাহকে বাড়িতে ভোজ খাইয়েছিলেন, কিন্তু বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ ফিরে তাকায়নি। এবার রাজ্য প্রশাসন পাশে দাঁড়ানোয় স্বভাবতই খুশি বিভীষণ।

এক বছর আগের কথা। বাংলায় তখন ডেইলি প্যাসেঞ্জার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সোম থেকে রবি, অমিত শাহের রোস্টার দিল্লি টু কলকাতা। কলকাতা টু দিল্লি। আসা-খাওয়া-যাওয়া। যাওয়া-খাওয়া-আসা। প্রতিশ্রুতি দেওয়া। এবং জুমলার রঙ্গমঞ্চ নাটক মঞ্চস্থ করা।

২০২০ সালের ৫ নভেম্বর। বাংলায় হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের আগে তখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। বাঁকুড়ায় দলের কর্মসূচিতে নিত্যযাত্রী দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে বিতর্কিত মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও রাজনৈতিক সভা। এবং গরীব-তপসিলি জাতি-উপজাতিদের একচিলতে ঘরে গিয়ে পঞ্চব্যঞ্জন সহকারে খাওয়া। তারই অঙ্গ হিসেবে চতুরডিহি গ্রামে বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের বিরাট আয়োজন।

সেদিন বিভীষণের ছোট্ট বাড়িতে ভোর থেকে সাজ সাজ রব।

নিজে হাতে রেঁধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খাইয়েছিলেন স্ত্রী মনিকা হাঁসদা। বিভীষণ হাঁসদাকে পাশে বসিয়েই সেদিন আঙুল চেটে চেটে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন অমিত শাহ। দুপুরে খাওয়ার ফাঁকে কঠিন অসুখে ভুগতে থাকা মেয়ে রচনার চিকিৎসার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের করুণ আর্জি জানিয়েছিলেন বিভীষণ। একগাল হাসি আশ্বাস দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দিল্লির এইমসে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পর্যন্ত আশ্বাস মিলেছিল!

এরপর স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারও বলেছিলেন বিষয়টি দেখে নেবেন। বিভীষিণের অভিযোগ, কেউ কথা রাখেনি। প্রতি মাসে মেয়ের চিকিৎসার জন্য খরচ হয় ৫ হাজার টাকা। এক বছর পরেও মেয়ের কঠিন অসুখের চিকিৎসা চালাতে ভরসা বলতে বিভীষণ হাঁসদার জনমজুরির সামান্য উপার্জনই। কোথায় এইমস? কোথায় অমিত শাহ? কোথায় বিজেপি সাংসদ? বিভীষণ বুঝেছে, দিল্লি এখন অনেক দূর। রাজ্যই ভরসা। ভরসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

 

 

Related articles

ব্রিটিশ-তোষণে লেখা ‘জন গণ মন’! বিজেপি সাংসদের অপমানজনক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলের

ব্রিটিশদের তোষণ করতেই নাকি লেখা হয়েছিল ‘জন গণ মন’। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এই ন্যক্কারজনক মন্তব্য করে ফের...

চিংড়িঘাটা মোড়ে যানজট কমাতে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ কেএমডিএ-র

ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়ে দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যার সমাধানে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেএমডিএ। শান্তিনগর খালের উপর বর্তমান সরু...

নামের বানানভুল থেকে ডিটেনশন আতঙ্ক! এসআইআর আতঙ্কে মানসিক চাপে সাঁইথিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধের

ইলামবাজারের ঘটনার পর ফের এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু বীরভূমে। হৃদরোগে প্রয়াত হলেন সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিমান...

বিহারে প্রথম দফায় অতিরিক্ত ভোটদানে নতুন সমীকরণ! চিন্তায় শাসক শিবির

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটদানের হার নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী...
Exit mobile version