সাবেকি লাল রঙ অতীত, লেপ- বালাপোষের গায়ে এখন তৃণমূলের প্রতীক !

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীকে মিস্টি তৈরি হয়েছে, এটা দেখতে অভ্যস্ত আমরা। তবে বাতাসে শীতের আমেজ পড়তেই বালাপোষ, লেপে এবার জায়গা করে নিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক চিহ্ন। এমন দৃশ্য নিঃসন্দেহে এই প্রথম।
শীতের শুরুতে রামপুরহাট পুরসভার মাঠে যে হারে শাসক দলের প্রতীক চিহ্ন ছাপা বালাপোষ , লেপ তৈরি হচ্ছে তা দেখে আপনিও অবাক হবেন বৈকি। পুরো বিষয়টি অবশ্য জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন । তাদের বক্তব্য, দলের জনপ্রিয়তা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দুয়ার টপকে দলীয় প্রতীক এখন ঘরে প্রবেশ করেছে।
রামপুরহাট পুরসভার মাঠে দেখা একদল ধুনুরি অর্ডার অনুযায়ী শীতের লেপ ও বালাপোষ তৈরি করে চলেছেন। শুধুমাত্র ব্যতিক্রম এই যে অন্যান্য বার মূলত লাল রঙের কাপড় দিয়ে কাজ করতে হত, এবার সেখানে জ্বলজ্বল করছে জোড়া ফুল।
অবশ্য এতে বেজায় খুশি ধুনুরিরা। তারা বলছেন, প্রথম এক মহিলা এমন কাপড় দিয়ে তৈরির বরাত দিয়েছিলেন। এখন চাহিদা তুঙ্গে। অনেকদিন পর ব্যবসা ভালই জমে গিয়েছে।

বালাপোষের ইতিহাস বলছে পুরনো সিন্থেটিক কাপড়, হোসিয়ারি কারখানার বাতিল কাপড় যন্ত্রের সাহায্যে পিষে তৈরি ‘তুলো’ দিয়ে তৈরি হয় এই বালাপোষ।
এক সময় মুর্শিদাবাদের একেবারে নিজস্ব এই শিল্পের নাম ছিল সর্বত্র। লম্বা আঁশের কার্পাস তুলোকে বীজ ছাড়িয়ে লাল রঙ্গে চুবিয়ে শুকিয়ে ভরা হতো মোলায়েম সিল্ক এবং মখমলের মাঝে। সুগন্ধের জন্যে দেওয়া হত আতর। বালাপোষের বিশেষত্ব হল মাঝে কোনও সেলাই থাকে না। চার পাশের সেলাই ধরে রাখে তুলোকে।
একটা সময় শীতে কম্বল ও লেপ মুড়ি দিয়ে, পশমের চাদর গায়ে দিয়েও শীত যাচ্ছিল না বাংলা, বিহার, ওডিশা সহ অভিবক্ত বাংলার। সেসময় নবাব ছিলেন মুর্শিদকুলি খাঁ। তার জামাই ছিলেন সুজাউদ্দিন, যিনি পরবর্তীকালে বাংলার নবাব হয়েছিলেন। তিনিই এর উপায় বের করেন।
অনেক ভাবনাচিন্তার পর সুজাউদ্দিনের নির্দেশে খলিফা রমজান শেখ তৈরি করেন তুলোর হালকা আবরণ। কার্পাস তুলোকে ঢেকে দেওয়া হয় সুন্দর সিল্ক কাপড়ে, নাম দেওয়া হয় বালাপোষ।  সেই বালাপোষেই এবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক।

Previous article১৪ মাস পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলল রিয়ার, ফিরে পেলেন ল্যাপটপ-মোবাইল
Next articleস্ত্রী অঞ্জলি তেন্ডুলকরের জন্মদিন পালন করলেন সচিন তেন্ডুলকর, ছবি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায়