‘২৪ ঘন্টা সময় দিলাম’, বায়ুদূষণ মামলায় কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারকে হুঁশিয়ারি সুপ্রিম কোর্টের

সরকার দাবি করলেও লাগাতারভাবে বায়ু দূষণের(Air pollution) হার বেড়ে গিয়েছে দিল্লিতে(Delhi)। এই ঘটনায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারের নেওয়া ব্যবস্থা প্রসঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের(Supreme court) প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা বৃহস্পতিবার বলেছেন, “আমরা মনে করি যে কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে না এবং দূষণ ক্রমাগত বাড়ছে… শুধু সময় নষ্ট হচ্ছে।” টানা চতুর্থ সপ্তাহ আদালত জাতীয় রাজধানী দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলে বায়ু দূষণ নিয়ে যুক্তি শুনল। কঠোর পদক্ষেপের সতর্কতা শুনিয়ে আদালত কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকারকে শিল্প ও যানবাহন দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য ২৪ ঘন্টা সময় দিয়েছে।

দীপাবলির পরে গত মাসে দিল্লির বায়ুর গুণমান তীব্রভাবে খারাপ হয়েছিল। কৃষি জমিতে খড় পোড়ানোর আগুনকেও দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফে। তবে আদালতে কেন্দ্র ও রাজ্য একে ওপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য। গত মাসে দিল্লির বায়ু দূষণ খারাপ থেকে অতি খারাপের পর্যায়ে নেমে আসে।
স্কুলগুলি পুনরায় খোলার বিষয়ে দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারকে তিরস্কার করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, “তিন বছর এবং চার বছরের বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে কিন্তু প্রাপ্তবয়স্করা বাড়ি থেকে কাজ করছে”। প্রধান বিচারপতি রামানা বলেন করেন, আমরা আপনার সরকার পরিচালনার জন্য কাউকে নিয়োগ করবো।

এ প্রসঙ্গে দিল্লি সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, “স্কুলগুলিতে, ‘শিক্ষার ক্ষতি’ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আমরা অনলাইনের বিকল্প সহ শর্ত দিয়ে আবার স্কুল খুলেছি।” এই জবাবে উষ্মা প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন , “আপনি বলছেন যে আপনি স্কুলে যাওয়া না-যাওয়া ঐচ্ছিক রেখেছেন। কিন্তু বাড়িতে কে বসতে চায়? আমাদেরও সন্তান এবং নাতি-নাতনি আছে। মহামারী থেকে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তা আমরা জানি। আপনি যদি ব্যবস্থা না নেন তাহলে আমরা আগামীকাল কঠোর ব্যবস্থা নেব। আমরা আপনাকে ২৪ ঘন্টা সময় দিচ্ছি।” দূষণ প্রসঙ্গে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় শিল্প সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ এবং দিল্লিতে যানবাহন প্রবেশের নিয়ন্ত্রণে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে বলেন, কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট ইন ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন এন্ড অ্যাডজাইনিং এরিয়াস এর বায়ু দূষণের উপর “কঠোর পদক্ষেপ বা আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা নেই, এবং সত্যিকারের বিচারের কোন ক্ষমতা নেই।”

আরও পড়ুন:International Flight: ডেল্টার পর ওমিক্রনের চোখরাঙানি, চালু হচ্ছে না আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা

পাশাপাশি এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান , “যখন এই ইস্যুতে শুনানি শুরু হয় তখন একটি নির্দিষ্ট এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল। তার পর থেকে আপনি অনেক পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন বা দাবি করছেন, তাহলে দূষণ কেন বাড়ছে? এটি একটি সাধারণ প্রশ্ন যা একজন সাধারণ মানুষ জিজ্ঞাসা করবে। আইনজীবীদের অনেক যুক্তি। এবং সরকারের অনেক দাবি। কিন্তু দূষণ কেন বাড়ছে ?” বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “কিছুই অনুসরণ করা হয়নি। আমরা যখন আদালতে আসি তখন রাস্তার মাঝখানে ‘পরিবেশ বাঁচাও’ ব্যানার নিয়ে বসে আছেন অনেক মানুষ। তাই আমরা বলি… শুধু জনপ্রিয়তার স্লোগান হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

অন্যদিকে, বাড়তে থাকা বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই বৃহস্পতিবার বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জাতীয় রাজধানীতে স্কুলগুলি বন্ধ থাকবে। রাই বলেন, “বাতাসের মানের উন্নতির প্রত্যাশায় আমরা স্কুলগুলো আবার খুলে দিয়েছিলাম, কিন্তু বায়ু দূষণ আবার বেড়েছে এবং আমরা শুক্রবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” দিল্লিতে স্কুল, কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৩ নভেম্বর থেকে বন্ধ ছিল। কিন্তু সোমবার থেকে আবার খোলা হয়েছিল।

 

Previous articleInternational Flight: ডেল্টার পর ওমিক্রনের চোখরাঙানি, চালু হচ্ছে না আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা
Next articleOmicron: ভারতেও ওমিক্রন হানা, কর্নাটকে দুজনের শরীরে সংক্রমণের হদিশ