কাঁচা ডিরেক্টরের তৈরি স্ক্রিপ্টে “হিম্মত” দেখাতে গিয়ে চাপে পড়ে মুখ লুকালেন শোভন

নিজের খাসতালুকে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে সাক্ষাৎকার দিতে আসার হিম্মত দেখাতে পারলেন না শোভন চট্টোপাধ্যায়

নিজেকে “হিম্মতওয়ালা” দেখাতে গিয়ে চাপে পড়ে মুখ লুকালেন শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovon Chatterjee)। বাঘ সাজতে গিয়ে কাগুজে বাঘ হয়ে গেলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। শোভনবাবুর সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য গতকাল, বৃহস্পতিবার দিনভর কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে অপেক্ষা করেছে বিশ্ববাংলা সংবাদের সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকরা। কিন্তু দিনের শেষে “হিম্মতওয়ালা” শোভনবাবুর দেখা নাই রে, শোভনবাবুর দেখা নাই।

সম্প্রতি, বিশ্ববাংলা সংবাদের একটি খবর নিয়ে ফেসবুকে দু’দুবার এসে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেখানে তিনি আমাদের সাংবাদিক সোমনাথ বিশ্বাসকে ব্যক্তি আক্রমণ করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, সোমনাথ বিশ্বাস নাকি দূরভিসন্ধি থেকে চক্রান্ত করে এমন সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এবং বিশ্ব বাংলা সংবাদ-এর থেকে পাঠক ও দর্শকদের দূরে থাকার কথা বলেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য ছিল, একতরফা ভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজন মনে করা হয়নি। তিনি হিম্মতের কথাও বলেন।

এরপরই বিশ্ববাংলা সংবাদের পক্ষ থেকে শোভনবাবুর সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য তাঁর পাড়া, বাড়ি, পৈত্রিক ভিটে, তাঁর রাজনৈতিক উত্থান, কর্মকান্ড, কর্মভূমি, জন্মভূমি, যেখান থেকে তাঁর কাউন্সিলর-বিধায়ক-মন্ত্রী-মেয়র হয়ে ওঠা সেই ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার দিনভর অপেক্ষা করা হয়। তাঁর খাসতালুক দাঁড়িয়েই সাক্ষাৎকার নেওয়ার বার্তা বুধবার লাইভ সম্প্রচার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার কথা মতো বেহালার পর্ণশ্রীর বাড়ির সামনে গিয়েও লাইভ সম্প্রচার করে শোভনবাবুকে বার্তা দেওয়া হয়, সাক্ষাৎকার দিতে আসার জন্য। কিন্তু তাঁর টিকি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আসলে শোভনবাবু তাঁর জনভিত্তি বা জনপ্রিয়তা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। শ্যাম-কূল হারিয়ে তাঁর পাশে যে এলাকারই কোনও মানুষ নেই সেটা তিনি হাড়ে হাড়ে বুঝে গিয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে তিনি যে জীবন্ত জীবাশ্মতে পরিণত হয়েছেন তাও স্পষ্ট। তিনি সময় সুযোগ বুঝে রাজনীতির বুলি আওড়াবেন, কিন্তু রাজনীতির ময়দানে নেমে মানুষের জন্য কিছু করবেন না। মানুষের প্রতি এত প্রেম-ভালোবাসা থাকলে নির্দল হয়েও তো দাঁড়াতে পারতেন শোভন চট্টোপাধ্যায়? আপনার নিজের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকেও তো দাঁড়াতে পারতেন? আসলে শোভনবাবু জানেন, তিনি দাঁড়ালেই গো-হারান হারবেন, জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

তাই বিশ্ব বাংলা সংবাদ-এর প্রতিবেদন দেখে ঘুম উড়ে যাওয়া শোভন চট্টোপাধ্যায় এখন সাদার্ন এভিনিউয়ের অট্টালিকা-সম আবাসনের ব্যালকনিতে বসে আবোল-তাবোল বকছেন। সত্য সামনে আসতেই মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য শোভন চট্টোপাধ্যায় বিশ্ববাংলা সংবাদ দেখতে ও পড়তে নিষেধ করেছেন। আর ওনার রঙ্গনাট্য দেখার জন্য সমাজকে উদ্বুদ্ধ করার অপচেষ্টা করছেন। জানা নেই, উনি নিজের বুদ্ধিতে এমন করছেন নাকি নেতা থেকে কমেডিয়ান অভিনেতা হয়ে ওঠা শোভনবাবু কোনও অদৃশ্য ডিরেক্টরের নির্দেশে নিজেকে হাসির খোরাক করছেন।

একটি বিষয় তো স্পষ্ট, শোভনবাবু ও তাঁর ডিরেক্টর
কিন্তু চিত্রনাট্য তৈরির আগে আতস কাঁচের তলায় ফেলে বিশ্ব বাংলা সংবাদ দেখছেন ও পড়ছেন। কিন্তু এত বড় বড় লেকচার মেরে বিশ্ববাংলা সংবাদ ও সাংবাদিককে ব্যক্তি আক্রমণ করে হিম্মত দেখাতে গিয়ে চাপে পড়ে এখন মুখ লুকিয়েছেন। শোভনবাবু আসলে হিম্মত দেখানো বাঘ নয়, বাঘছাল পরা বিড়াল। মুখ লুকিয়েছেন তিনি। তাঁর ফানুস চুপসে গিয়েছে। সত্যের জয় হয়েছে। এখন দেখার, গোলপার্কের গগনচুম্বী ফ্ল্যাটের বাল্যকনির কাননে আবার কবে ঝরাফুল হয়ে ফোটেন শোভন।

Previous article৯০ নম্বরে টেস্ট পরীক্ষা হবে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের, জানালো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ
Next articleSuvendu Adhikary: শুভেন্দুকে “লোডশেডিং এমএলএ” বলে কটাক্ষ মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরির