Saturday, August 23, 2025

নাগাল্যান্ড গুলিকান্ড: বেঁচে ফেরা যুবকের বয়ানে প্রশ্নের মুখে সংসদে শাহের সাফাই

Date:

শরীরে দুটি বুলেটের ক্ষত। একটা কনুই, আর একটা কাঁধে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন নাগাল্যান্ডের(Nagaland) মন জেলায় অসম রাইফেলসের(Assam Rifles) গুলিতে বেঁচে ফিরে আসা শেইওয়াং। ওই অবস্থাতেই বিছানায় শুয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে প্রায় ফিসফিস করে তিনি জানালেন, “আচমকাই ওরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলিবৃষ্টি শুরু করল। সবাইকে মেরে ফেলল।” শুধু তাই নয় বয়ানে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে, “ওরা কখনওই থামার নির্দেশ দেয়নি। সরাসরি আমাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। আমরা পালানোরও চেষ্টা করিনি।”

গত শনিবার নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সেনাবাহিনীর গুলিতে ও তার পরবর্তী ঘটনাক্রমে মৃত্যু হয় ১৪ জন গ্রামবাসীর। যদিও কপাল জোরে প্রাণে বেঁচে যান দুইজন। তাদের একজন ছিলেন শেইওয়াং। আর অন্যজন বছর তিরিশের ইয়েহওয়াং। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিবৃতি দিয়েছিলেন, “গাড়িটিকে প্রথমে আমার নির্দেশ দিয়েছিল সেনাবাহিনী কিন্তু পিকআপ ভ্যানটি পালানোর চেষ্টা করে এরপরই গুলি চালানো হয় সেনার তরফে।” যদিও অমিত শাহের সেই বক্তব্যের উল্টো বয়ান দিলেন ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে ফিরে আসা শেইওয়াং।

আরও পড়ুন:দাবি মানলো সরকার, এক বছরের আন্দোলন থামিয়ে শনিবার ঘরে ফিরবেন কৃষকরা

সেদিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি হাতড়ে খনি শ্রমিক শেইওয়াং বলেন, “কয়লা খনির কাজ শেষ করে দিনের আলো থাকতে থাকতেই বেলা ৩টে নাগাদ আমরা তিরু উপত্যকা থেকে ওটিংয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম। ট্রাকে ছিলাম ৮ জন। আচমকাই রাস্তার মাঝখানে ওরা গুলি চালাতে শুরু করে। কতক্ষণ ধরে গুলি চলেছিল মনে নেই। মনে হচ্ছিল যেন বোমা ফাটছে। তখন ঠিকমতো অন্ধকারও হয়নি। তাও ওরা গুলি চালাল।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “ওরা কখনওই থামার নির্দেশ দেয়নি। ওরা সরাসরি আমাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। আমরা পালানোরও চেষ্টা করিনি। গাড়ির মেঝেতে শুয়ে পড়েছিলাম।”

ঘটনা এখানেই শেষ নয়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে আনা হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানে তাদের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়েমখাহকে। যিনি শেইওয়াংয়ের আত্মীয়ও। হাসপাতালে তাকে সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছিলেন শেইওয়াং। নিয়েমখাহকের বয়ান অনুযায়ী, “সেদিন গ্রামে ফেরার পথে সবে তিরু ব্রিজ পার করেছিল শেইওয়াংদের ট্রাক। তারপরই রাস্তার ধারের একটি বড় গর্তে গড়িয়ে যায় গাড়িটির চাকা। তখনই আচমকা তাঁদের লক্ষ্য করে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে আসতে থাকে। সামনে ও পিছন দিক থেকে প্রায় ২-৩ মিনিট ধরে চলেছিল গুলিবৃষ্টি। এরপর ভ্যান থেকে দেহগুলি টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলা হচ্ছিল। জ্ঞান হারানোর আগে ওই দৃশ্য দেখেছিল শেইওয়াং। নিজের ভাই থাকওয়াংয়ের দেহটিও গাড়ি থেকে ওইভাবে বের করতে দেখে ও। তারপর আর তাঁর কিছু মনে নেই।’

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...
Exit mobile version