KMC 109: অনন্যার প্রচার মঞ্চে বিরোধীদের তুলোধোনা কুণালের

বাম জমানায় দীর্ঘদিন এই ওয়ার্ড ছিল বঞ্চিত। সন্ত্রাস থাকলেও ছিল না উন্নয়ন

আসন্ন কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে (KMC Election) ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Ananya Banerjee) সমর্থনে প্রচারে গিয়ে বিরোধীদের কার্যত তুলোধনা করলেন তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এদিন কালিকাপুর যমুনা বাজারে তাঁর বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কুণাল ছিলেন বিরোধীদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক। বাম (Left front) থেকে কংগ্রেস (Congress) কিংবা বিজেপি (BJP), কাউকেই ছেড়ে কথা বললেন না।

যাদবপুর বিধানসভার অন্তর্গত ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড এক সময় ছিল বামেদের দুর্গ। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কিন্তু বাম জমানায় দীর্ঘদিন এই ওয়ার্ড ছিল বঞ্চিত। সন্ত্রাস থাকলেও ছিল না উন্নয়ন। এতটাই অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল এই ওয়ার্ড, যখন একটা সময় মুকুন্দপুর, অজয় নগর, কালিকাপুরের বাসিন্দা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে লজ্জা পেতেন এখানকার মানুষজন। কিন্তু অনন্যা কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই বদলে গিয়েছে এই অঞ্চলের চেহারা। একদিকে কাউন্সিললের উদ্যোগে এলাকায় রাস্তা, আলো, জল, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে, ঠিক একইভাবে রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্প পৌঁছে গিয়েছে মানুষের ঘরে ঘরে। এইসব প্রসঙ্গ তুলেই এদিন সিপিএমকে নিশানা করেন কুনাল ঘোষ।

বামেদের একহাত নিয়ে তিনি বলেন, “সিপিএম শুধু গণ সংগীতে জমির কথা বলে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাস্তবে মানুষের হাতে জমির দলিল, পাট্টা তুলে দেন। যাঁরা এতদিন সিপিএম-কে ভোট দিতেন বা এখনও হয়তো কেউ কেউ দেন, তাঁদের কাছে প্রশ্ন, এখানে তো বামেদের সাংসদ-বিধায়ক-কাউন্সিলের সবই ছিল। কী উন্নয়ন হয়েছে? গোটা দেশজুড়ে বিজেপিকে টক্কর দিতে পারে একমাত্র তৃণমূল আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই যাঁরা এখনও সিপিএমকে ভোট দেবেন ভাবছেন, আপনার নিজেদের মূল্যবান ভোট নষ্ট করবেন না। সিপিএম এখানে জিতবে না। তাই ভোটটা অনন্যাকেই দিন। এখানে তৃণমূলকে যত বেশি ভোটে জেতাবেন, জানবেন দিল্লির দরবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত তত বেশি শক্ত হবে।”

এদিন লুপ্তপ্রায় কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের রাজ্য সাধারন সম্পাদক। তিনি বলেন, “তৃণমূলই আসল কংগ্রেস। তাই কেউ অন্য জায়গায় ভোট দিয়ে তা নষ্ট না করে তৃণমূলকে আরও বেশি ব্যবধানে জয়ী করুন।”

অন্যদিকে, রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “বিজেপি ডাবল ইঞ্জিন সরকারের কথা বলে। তাদের ডাবল ইঞ্জিন উত্তর প্রদেশেতে গঙ্গায় করোনার লাশ ফেলছে। এখানে
চারটি ইঞ্জিন। পুরবোর্ড, মেয়র, মেয়র ইন কাউন্সিল, কাউন্সিলর। সবমিলিয়ে উন্নয়নের জোয়ার বইবে। কেন্দ্র লাভনজক সংস্থাকে বেসরকারীকরণ-এর খেলায় মেতেছে। ইন্দিরা গান্ধী মানুষের সুরক্ষার জন্য ব্যাংক জাতীয়করণ করেছিলেন। আর এখন প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্যাংককে লাটে তোলার বন্দোবস্ত করছেন।”

এদিন লখিমপুরে পরিকল্পনা করে কৃষক হত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন কুণাল। তিনি বলেন, লখিমপুরে কৃষক হত্যা করছে আর সিঙ্গুরে মঞ্চ বাঁধছে বিজেপি। ফের একবার লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গ উস্কে দিয়ে কুনাল বলেন, “সিঙ্গুরে বিজেপির স্থানীয় সাংসদ লকেট কোথায়? শুভেন্দু-সুকান্তর পাশে লকেটকে দেখা যাচ্ছে না কেন?”

বিজেপি পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা বলছে। কুনাল গেরুয়া শিবিরকে একহাত নিয়ে বলেন, “বিধানসভা ভোটেও তো কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। কী হয়েছে ফলাফল সবাই দেখেছে। মানুষ দু-হাত তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছে। যেই বাহিনী আসুক, মানুষের সমর্থন পাবে না বিজেপি। এখানে বিজেপি ধর্মের ব্যবসা করছে আর সিপিএম বামেরা ভোট রামে দিয়ে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সিপিএম আসলে বিজেপির দালাল। ওরাই এ রাজ্যে বিজেপিকে ডেকে এনেছে। কোনও লাভ হবে না। এখানে কোনও দলের সঙ্গে কোনও লড়াই নেই তৃণমূলের। এখানে তৃণমূলের প্রতিযোগিতা নিজেদের মধ্যে। কোন পার্ট বেশি লিড দেবে, সেই প্রতিযোগিতা হবে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে। বিপুল ভোটে ফের নির্বাচিত হবেন অনন্যা।”

আরও পড়ুন- KMC 106: স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতি MBA ছাত্র রানা এবার তৃণমূলের প্রার্থী

 

 

 

 

Previous articleKMC 106: স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতি MBA ছাত্র রানা এবার তৃণমূলের প্রার্থী
Next articleRajnath Sing: ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে DRDO, দাবি রাজনাথের