করোনা (Corona) মহামারি আবহের মধ্যেই বেজে গিয়েছে ভোটের বাদ্যি। নির্বাচন কমিশনের (EC) গাইডলাইন মেনে মূলত ডোর টু ডোর ভার্চুয়াল প্রচারে জোর দিয়েছেন বিধাননগর পুরনিগমের (Bidhannagar Corporation)
১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) প্রার্থী শিখা মোহান্ত (Shikha Mohanto). মানুষের কাছে পৌছতে নিয়ম করে সকাল-সন্ধ্যা প্রচারে বেরোচ্ছেন তিনি। সঙ্গে ২-৪ জন কর্মী-সমর্থক।

বিধাননগরের মত ঝাঁ-চকচকে এলিট ক্লাস পুর এলাকাতে এই ১৪ নম্বর ওয়ার্ড ব্যতিক্রম। মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপের মত। পুর পরিষেবার নামমাত্র কিছু পৌঁছয়নি সেখানে। এখনও ওয়ার্ডের বিভিন্ন অলিগলিতে ভাঙা-কাঁচা রাস্তা। পর্যাপ্ত আলো পৌঁছায়নি সব জায়গায়। রয়েছে পানীয় জলের সমস্যা। আর সবচে বড় সমস্যা নিকাশির। অল্প বৃষ্টিতে হাঁটু কোমর জল জমা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিদায়ী কাউন্সিলর কংগ্রেসের গীতা সরদার ও তাঁর স্বামী পালা করে এই ওয়ার্ডটা থেকে বছরের পর বছর জিতে আসলেও মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে ব্যর্থ। পুরসভার পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হলেও কাউন্সিলরের অসহযোগিতায় উন্নয়ন থমকে গিয়েছে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে, এমনটাই অভিযোগ করলেন তৃণমূল প্রার্থী শিখা মোহান্ত।

আরও পড়ুন:মেয়ের বিরুদ্ধে তছরুপের অভিযোগ, ফেসবুক লাইভ করে আত্মঘাতী বাবা-মা-ছেলে

শিখাদেবীর অভিযোগ, বিদায়ী পুরমাতা এখানে দীর্ঘদিন যাবৎ নির্বাচিত হয়ে আসলেও এলাকার উন্নয়নে নজর দেননি। রাজারহাট গোপালপুর বিধানসভা অঞ্চলের এই ওয়ার্ডে স্থানীয় বিধায়ক এবং বিধাননগর পুরনিগমের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ রাখতেন না কংগ্রেস কাউন্সিলর। বিধাননগরের মতো পুর এলাকাতেও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এখনও বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষকে পারাপার করতে হয়। যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কাউন্সিলরের এমন ভূমিকায় এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। উন্নয়নের স্বার্থে এবার মানুষ কংগ্রেসের হাত ছেড়ে “হাত বাড়ালেই বন্ধু” তৃণমুলের শিখাকেই চাইছেন।

তৃণমূল প্রার্থী শিখা মোহান্ত জানান, “স্বাস্থ্যসাথী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, লক্ষীর ভান্ডারের মত রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলি যতটুকু মানুষের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে, তা স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরাই দায়িত্ব নিয়ে করেছেন। আগামিদিনে মানুষের আশীর্বাদে এই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে আমি জিততে পারলে, সর্বাগ্রে নিকাশি ব্যবস্থা এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পগুলি মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার কাজই অগ্রাধিকার পাবে। এখানে পুরসভার পক্ষ থেকে একটি কমিউনিটি হল করে দেওয়া হলেও এতদিন তার কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। নোংরা অবস্থায় পড়ে আছে। এই কমিউনিটি হলের সংস্কারের কাজেও জোর দেবো।”

করোনা মহামারির হোক, লকডাউন কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন শিখাদেবী। গরিব মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে, বয়স্কদের ওষুধ পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সবকিছুই সহকর্মীদের নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। সামাজিক কাজে তিনি কোনও দল, রং, বর্ণ দেখেননি। মহামারি আবহে নিজের বাড়ির বড় বাসন্তী পুজো বন্ধ করে সেই টাকায় মানুষের সেবা করেছেন শিখাদেবী। দুঃসমময়ে অসহায় মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য শিখাদেবী ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে “অন্নপূর্ণা” নামেই খ্যাত। তাই মানুষের আশীর্বাদ এবার তৃণমূলের সঙ্গেই থাকবে বলে আশাবাদী শিখা মোহান্ত।