অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই, সিপিএমের রেড ভলেন্টিয়ারের অনুকরণে পথে বিজেপির বিবেক বাহিনী

রাজ্য বিজেপিতে যখন গৃহযুদ্ধ চরম আকার নিয়েছে, ঠিক তখনই বিবেক জাগ্রত হয়েছে বঙ্গ বিজেপির

ভোটে জিরো, সমাজসেবায় হিরো! মহামারি আবহে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শিরোনামে এসেছে সিপিএমের (CPIM) রেড ভলেন্টিয়ার (Red Volunteer)। করোনা (Corona) আক্রান্ত মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা থেকে ঘরে ঘরে খাবার, অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েছে বাম ছাত্রযুবরা। রেড ভলেন্টিয়াররা মানুষের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছে, সমানতালে সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে প্রচারও চালিয়েছে। সুতরাং, শুধুমাত্র সমাজসেবা নয়, পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রচারের আলোতেও আসার চেষ্টা করেছে সিপিএমের এই লাল স্বেচ্ছাসেবকরা। এবং তাদের এই প্রচারকে হাতিয়ার করে আলিমুদ্দিনের বয়স্ক ম্যানেজারেরা অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কলকাতা পুরভোটে সেই রেড ভলান্টিয়ারদের মধ্যে অনেককেই প্রার্থীও করে। যদিও রেড ভলান্টিয়ারদের সামনে রেখে একেবারেই রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ব্যর্থ সিপিএম তথা বামেরা। বিধানসভার শূন্যস্থান পূরণের জায়গায় সিপিএম যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়েছে।

আরও পড়ুন:ব্যবস্থা নিন, বিধ্বস্ত অমিতাভ-নাড্ডার কাছে, বিজেপির বিদ্রোহীরা মঞ্চ থেকে দল গড়ার পথে

এবার রাজ্যে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সিপিএমের রেড ভলেন্টিয়ারের অনুকরণে গুটিকয়েক যুবক-যুবতীকে রাস্তায় নামিয়ে বিবেক বাহিনী (Vibek Bahini) গঠন করেছে বিজেপি (BJP)। লাল শিবিরের মতো গেরুয়া শিবিরেরও লক্ষ্য সেই একটাই। রাজ্যের বুকে রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা। বিজেপিতে যখন গৃহযুদ্ধ চরম আকার নিয়েছে, গোটা দেশজুড়ে মানুষের মনে বিজেপি সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে, ঠিক তখনই বিবেক জাগ্রত হয়ে বঙ্গ বিজেপিতে। সরাসরি মানুষ যখন বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন প্রচারের আলোয় আসতে এবং মানুষের মন পেতে বিবেক বাহিনী নামে রেড ভলেন্টিয়ারের ধাঁচে ‘গেরুয়া বাহিনী’ পথে নেমে সমাজসেবা শুরু করেছে। এবং সিপিএমের রেড ভলেন্টিয়ারদের মতোই বিজেপির বিবেক বাহিনী প্রতিটি কর্মসূচি পালনের আগে তা সংবাদ মাধ্যমকে জানাচ্ছে। এবং প্রচারের আবেদন করছে।

ঘরোয়া কোন্দলের মধ্যেই রাজ্য বিজেপির নতুন যুব সভাপতি হয়েছেন চিকিৎসক তথা বিধানসভা ভোটে কসবা থেকে হেরো প্রার্থী ইন্দ্রনীল খাঁ। এবং বিবেক বাহিনীর এই উদ্যোগের পিছনে রয়েছে রাজ্যের যুব মোর্চা। ইন্দ্রনীলের নেতৃত্বেই ‘বিবেক বাহিনী’র সদস্যরা কাজ করছেন।

বিজেপি যুবমোর্চার দাবি, ইন্দ্রনীল খাঁয়ের সঙ্গে আরও ১০০ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এর সঙ্গে রাজ্যজুড়ে থাকছেন ২২ হাজার যুবকর্মী। প্রতিটি জেলায় থাকছেন একজন করে ইনচার্জ। তাঁর অধীনে প্রতিটি ব্লকে একজনকে করে ইনচার্জ থাকবেন। ইনচার্জদের নির্দেশে কাজ করবেন সদস্যরা। একটি হেল্পলাইন নম্বর থাকবে। ওই নম্বরে ফোন করলেই মিলবে সহযোগিতা। রেড ভলান্টিয়ারদের মতোই আক্রান্তদের ডাক্তারি পরামর্শ, বাড়িতে খাবার, ওষুধ ইত্যাদি পৌঁছে দেবেন বিবেক বাহিনীর সদস্যরা।

গত ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিবসকে সামনে রেখে বিজেপি এই বিবেক বাহিনী গঠন ও তাদের ক্রিয়াকলাপের সূচনা করা হয় ঢাকঢোল পিটিয়ে। যদিও আনুষ্ঠানিক সূচনার পর থেকে এই বাহিনীর বিবেক সেভাবে জাগ্রত হতে দেখা যায়নি। অনেকেই এর জন্য গেরুয়া শিবিরের সাংগঠনিক দুর্বলতা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং বিজেপির দিক থেকে নতুন প্রজন্মের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণকেই দেখছেন। কিছুটা বিবেকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার বাহিনীকে। বেহালা চত্বরে কিছু কিছু ওয়ার্ডে মাস্ক, স‍্যানেটাইজার, চাল, রান্না করা অন্ন, ডাল কাঁচা সবজি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দেখা গিয়েছে। ১২৭ নং ওয়ার্ড বিবেক বাহিনী এলাকার বাচ্চাদের নিয়ে ফ্রি কোচিং সেন্টার খুলেছে। এছাড়া বেশ কয়েকবার জীবনী এলাকায় স‍্যানিটাইজার করেছে বিবেক বাহিনীর সদস্যরা। তবে সমাজসেবা মুখ্য নয়, সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

Previous articleSc EastBengal: ‘এই জয় দলের মেজাজ বদলে দিয়েছে’, বললেন লাল-হলুদ কোচ
Next articleCovid Update: ভয় ধরাচ্ছে করোনা! একলাফে দেশের দৈনিক সংক্রমণ ৩ লক্ষের গণ্ডি ছাড়ালো