আজ মুক্তি পাচ্ছে পরিচালক অরুণ রায়ের (Arun Roy) বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘৮/১২’। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা আছে বিনয়, বাদল, দীনেশের (Binay-Badal-Dinesh) রাইটার্স অভিযানের কথা। সেই কাহিনীকে এবার পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে চলেছেন অরুণ রায় (Arun Ray)। ছবিতে বিনয়-বাদল-দীনেশের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কিঞ্জল নন্দ, অর্ণ মুখোপাধ্যায়, রেমো। ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর মুখোমুখি হয়ে কিঞ্জল নন্দ (Kinjal Nanda)। জানালেন চরিত্রটা করতে কী বিশেষ হোমওয়ার্ক করেছিলেন কিঞ্জল।
প্র : ‘হীরালাল’-এর পরে আবার একটি ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয়। কেমন লাগল?
কিঞ্জল : এই ধরনের ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা সবসময়ই ভালো। একজন অভিনেতা হিসেবে সব চরিত্রই আমার কাছে নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই ধরনের ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করতে পারাটা ভাগ্যের বিষয়। এটা করার ক্ষেত্রে সব সময় একটা আলাদা অনুভূতি কাজ করে।
প্র : বিপ্লবী বিনয় বসুর চরিত্র করার জন্য কী ধরনের হোমওয়ার্ক করেছিলেন?
কিঞ্জল : আমার বিশেষ হোমওয়ার্ক করতে হয়নি। পরিচালক অরুণ দা আর রিসার্চ টিম সেই কাজটা করেছে। আমাকে পুরো বিষয়টা বলা হয়েছিল। তবে, একটা খোঁজ চলেছে। কারণ, এঁদের মতো মানুষদের জীবন নিয়ে গবেষণা চলতেই থাকে। সেটা আমি করেছি।
প্র : ‘হীরালাল’-এর জন্য ওজন কমিয়েছিলেন। ‘৮/১২’-র লুকের জন্য কোনও বিশেষ ফিটনেস প্ল্যান?
কিঞ্জল : ‘হীরালাল’-এর জন্য ওজন কমিয়েছিলাম। আর বিনয় বসুর জন্য ওজন বাড়িয়েছি অনেকটা। কারণ, ওনার চেহারা বেশ বড়সড় ছিল। বাকিটা দর্শক বলতে পারবেন, আমি কতটা পোট্রে করতে পেরেছি।
প্র : পরিচালক অরুণ রায়ের পর পর দুটো ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় আপনি। ওনার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কী?
কিঞ্জল : অরুণদার ছবিতে কোনও চরিত্র হিরো হয় না, হিরো হয় বিষয়। ‘হীরালাল’-এ নায়ক ছিল আসলে সেইসময়ের ছবির জগৎ এবং ক্যামেরা। আর এখানে হিরো তিন বিপ্লবীর রাইটার্স অভিযান। অরুণদা আমার পরিবার, আমার শিক্ষক। ক্যামেরার সামনে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। সেটা শিখিয়েছেন অরুণদাই। উনি সেটে খুব সহজভাবে সবার সঙ্গে মেশেন; মজা করেন। কিন্তু সব সময় ওনার মধ্যে অভিনেতাদের শেখানোর একটা তাগিদ থাকে। তাই অরুণদার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা সবসময়ই শিক্ষণীয়।
প্র : আজ ছবির মুক্তি। কী মনে হচ্ছে?
কিঞ্জল : ‘৮/১২’-র বিষয় দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে বলে আশা রাখছি। তবে, এই ধরনের ছবি বার বার করা যায় না। প্রযোজক যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়ে এই ধরনের ছবি করেন। তাই সবাইকে হলে গিয়ে ছবি দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা বারবার বলি বাংলা ছবি কন্টেন্ট ভালো হচ্ছে না। অথচ ভালো ছবি হচ্ছে। ‘হীরালাল’ হয়েছে, ‘গোলন্দাজ’ হয়েছে, ‘বিনি সুতোয়’ হয়েছে। অনেক ভালো ভালো ছবি হচ্ছে। কিন্তু হলে গিয়ে ছবি দেখতে হবে। শুধু প্রযোজক-পরিচালক নয়, সবাইকেই বাংলা ছবির পাশে দাঁড়াতে হবে।
প্র : পরপর পিরিওডিক ছবিতে অভিনয়, তকমা পড়ে যাওয়ার ভয় আছে?
কিঞ্জল : না। এরপরে যে দুটো ছবি করছি সেখানে একেবারেই অন্য চরিত্র। সুতরাং সেরকম কোনও ভয় কাজ করে না। আর পরিচালকরাও জানেন, যে কে কতটা চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে পারে।
প্র : ইতিমধ্যে একটি ওয়েব সিরিজে দেখা গিয়েছে কিঞ্জল নন্দকে। আগামী দিনে আরও ওয়েব সিরিজে অভিনয় করবেন তিনি?
কিঞ্জল : কথা চলছে বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটের জন্য একই সঙ্গে কথা চলছে ছবিরও।
প্র : সিনেমা ওয়েব সিরিজের পাশাপাশি মঞ্চ অভিনয় করেন কিঞ্জল। এখন কী নাটক চলছে তাঁর?
কিঞ্জল : আমার দলের নাটক চলছে ‘আমি, তনু ও সে’। আরেকটি নাটক তৈরি হচ্ছে ‘শাম্ব’।
আরও পড়ুন- Budhhadev Bhattacharya: পুরস্কারের কথা কেউ জানায়নি, পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান করছি: বুদ্ধদেব
প্র : ছোট পর্দায় কাজ করার ইচ্ছে আছে?
কিঞ্জল : এই মুহূর্তে এই বিষয়ে ভাবছি না।
প্র : চিকিৎসকের চরিত্রে অভিনয় করতে কেমন লাগবে?
কিঞ্জল : ভালোই লাগবে। বিনয় বসুও একজন চিকিৎসক ছিলেন। যখন যে চরিত্রটা করি সেটাই বাস্তবসম্মত করার চেষ্টা করি। চিকিৎসকের চরিত্রের ক্ষেত্রে সেটা আরো সাবলীল হবে আশা করি।
প্র : একদিকে ডাক্তারি আর একদিকে অভিনয়- ব্যালেন্স করেন কী করে ডা: নন্দ?
কিঞ্জল : আলাদা করে ব্যালেন্স করতে হয় না। আমার কাছে ডাক্তারি আর অভিনয় দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। রোগী দেখার সময় সেটাই করি। আর অভিনয়ের সময় অভিনয়।
প্র : করোনার তৃতীয় ঢেউ কবে যাবে? কী বলছেন ডাক্তার কিঞ্জল?
কিঞ্জল : এতদিনে আমরা সবাই জেনে গিয়েছি কোভিড বা ফ্লু নিয়েই আমাদের এখন থাকতে হবে। এটাকে একটা রাক্ষস ভেবে বাড়ি বসে থাকলে জীবন চলবে না। এটা নিয়ে আতঙ্ক করার কিছু নেই। সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে এবং কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন- পদ্মভূষণে সম্মানিত হলেন দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়া, পদ্মশ্রীর জন্য মনোনীত হলেন নীরজ চোপড়া