দুঃসময় ছেড়ে যাওয়াদের দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রায়শ্চিত্ত করাতে চান অভিষেক

একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যজুড়ে ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে রে রে রব শুরু হয়েছিল। অনেকেরই ধারণা ছিল এবার হয়তো পরিবর্তনের পরিবর্তন হবে। সেই জায়গা থেকে তৃণমূল শিবিরে শুরু হয়েছিল দল ছাড়ার হিড়িক। পুরোনো কোন দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন একঝাঁক নেতা, যাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন হেভিওয়েট।

কিন্তু ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর দেখা গেল সে গুড়ে বালি। সর্বকালীন রেকর্ড নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতায় আসীন হলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্য রাজনীতি উলটপুরান। একুশের ভোটের আগে যাঁরাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়ে দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরাই ঘর ওয়াপসি করতে ব্যস্ত।

এক্ষেত্রে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত মতামত ঠিক কী? খুব স্পষ্ট কথায় অভিষেকের উত্তর, “ধরে নিন মুকুল রায় দলে ফিরেছেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলে ফিরেছেন, সব্যসাচী দত্ত ফিরেছেন। কিন্তু আরও অনেকেই দল ছেড়েছিলেন। তাঁরা তো ফেরেননি। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, যতদিন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থাকব ততদিন দলের কর্মীদের জন্য লড়াই করব। নিশ্চিন্তে থাকুন, যাঁরা গিয়েছিল তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে দলে ঢোকাব। প্রকাশ্যে বলছি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকার করে বলেছেন তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তাঁর ওই সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যাযাকে আমি ত্রিপুরায় যোগদান করিয়েছি। তিনি ত্রিপুরায় দল করবেন। দলকে তিনি কথা দিয়েছেন ত্রিপুয়ার দলের ইউনিট প্রতিষ্ঠা করবেন। তিন বছর ত্রিপুরায় পড়ে থেকে সেখানে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করতে যা করার করব। খড়দায় উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে স্পষ্ট বলেছিলাম, যাঁরা আসবে তাঁদের পাপের প্রায়ঃশ্চিত্ত করে দল ঢোকাব। যদি কেউ ভাবে যে দলে ফিরে মাথার উপরে ফের ছড়ি ঘোরাব তাহলে সাফ বলছি তৃণমূলের যেসব কর্মী দলের দুর্দিনে জীবনের বাজি রেখে লড়াই করেছে তাদের অসম্মান হতে দেব না।”

এক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবেই সব্যসাচী দত্তের নাম উঠে এসেছে। অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনটা হতেই পারে। এটা দলের সিদ্ধান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদারতার কারণে তা হতেই পারে। কিন্তু নির্বাচনের সময় যাঁরা দল ছেড়ে গিয়েছিলেন তাঁরা যদি ভাবেন দলে ফিরে তাঁদের যাত্রা মসৃণ হবে তাহলে ভুল করছেন। যদি কেউ দলে ঢোকে তাহলে তাঁদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেই দলে ঢোকাব। দুঃসময় ছেড়ে যাওয়া নেতাদের দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে, এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমি খুব স্পষ্টবাদী। এটা আমি দলের অন্দরে, দলনেত্রীর সামনে ওপেন ফোরামেও বলেছি।”

আরও পড়ুন- Kunal Ghosh: মেধাবীদের জন্য সুযোগ দিতে হবে: রথীপুর বরদা বাণীপীঠে কম্পিউটার রুম উদ্বোধনে মন্তব্য কুণালের

Previous articleKumar Sanu: মাকে হারালাম, সুরসম্রাজ্ঞীর স্মৃতচারণায় শোকস্তব্ধ কুমার শানু
Next articleনেত্রীকেই শেষ কথা মানেন, তবু দ্বিমতের কারণ বোঝালেন অভিষেক