Thursday, November 13, 2025

St Martin: সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ছেঁড়া দ্বীপে যাচ্ছেন পর্যটকরা

Date:

খায়রুল আলম, ঢাকা

পর্যটকদের কাছে অপরুপ সৌন্দর্য মন্ডিত সামুদ্রিক প্রবাল ও জীববৈচিত্র্যময় ছেঁড়া দ্বীপ। দেশের শেষ সীমান্ত বঙ্গোপসাগরের বুকে অবস্থিত এই দ্বীপ। টেকনাফের সেন্টমার্টিন থেকে নৌকাযোগে যাওয়া যায়।
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় সরকার এই দ্বীপটিতে পর্যটকদের প্রবেশাজ্ঞা নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু তা সত্বেও থামছেনা পর্যটকদের ভিড়।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপে যাচ্ছেন পর্যটকরা। লাইফ বোট ও স্পিডবোটে প্রতিদিন দুই শতাধিক পর্যটক যাচ্ছেন ছেঁড়া দ্বীপে। এতে হুমকিতে পড়ছে । বর্জ্য ও আবর্জনায় দূষিত হচ্ছে দ্বীপ।

২০২০ সালের ১২ অক্টোবর সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ অংশে পর্যটকদের যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সেন্ট মার্টিনে ছয় ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এসব নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানছেন না পর্যটকরা। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোনও তদারকি নেই স্থানীয় প্রশাসনের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ অংশে এখনও কিছু সামুদ্রিক প্রবাল জীবিত আছে। এসব প্রবাল সংরক্ষণে পর্যটক যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুয়ায়ী, সেন্ট মার্টিনের সৈকতে কোনও ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন যেমন মোটরসাইকেল ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চালানো যাবে না। রাতে সেখানে আলো বা আগুন জ্বালানো যাবে না। রাতের বেলা কোলাহল সৃষ্টি বা উচ্চস্বরে গানবাজনার আয়োজন করা যাবে না। টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতকারী জাহাজে অনুমোদিত ধারণ সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অননুমোদিত এবং অনুমোদনের অতিরিক্ত নির্মাণসামগ্রীর সেন্টমার্টিনে যাতায়াত বন্ধ করা হবে। পরিবেশদূষণকারী দ্রব্য যেমন পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতল ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত করা হবে। কিন্তু এসবের কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়নি। এমনকি পর্যটকদের ভ্রমণ ঠেকাতে কোনও ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানান পরিবেশবাদীরা।

শুক্রবার সকাল ৮টায় সেন্ট মার্টিনের জেটিতে দেখা গেছে, কয়েকজন পর্যটক দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের দেখে ডাক দেন এক ব্যক্তি। পর্যটকদের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘যারা ছেঁড়া দ্বীপে যেতে চান, এই বোটে ওঠেন। নিরাপদে পৌঁছে দেবো।’

সরেজমিনে দেখা যায়, সেন্ট মার্টিনের জেটির মাঝামাঝি স্থানে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে। সেখানে ‘লাইফ বোট, স্পিডবোট মালিক সমবায় সমিতির’ নাম লেখা। পাশাপাশি ছেঁড়া দ্বীপ, প্রবাল দ্বীপে যাওয়ার কথা উল্লেখ আছে সাইনবোর্ডে। জেটির দক্ষিণ পাশে রয়েছে ছেঁড়া দ্বীপে যেতে আগ্রহী পর্যটকদের জন্য টিকিট কাউন্টার।

টিকিট কাউন্টারের প্রধান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ছেঁড়া দ্বীপে যেতে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। দ্বীপে আসা পর্যটকদের সহায়তা করছি আমরা। প্রতিদিন ২০০-২৫০ পর্যটক ছেঁড়া দ্বীপে যান। জনপ্রতি ২৫০-৩০০ টাকা নিয়ে পর্যটকদের বোটে করে ছেঁড়া দ্বীপে পৌঁছে দিই, আবার নিয়ে আসি। রিজার্ভ হলে ২৫০০ টাকা নিই।’ এরপর ২৫ জন পর্যটক নিয়ে ছেঁড়া দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয় একটি বোট।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, পর্যটকদের অবাধ চলাফেরা ও স্থাপনা নির্মাণসহ বিভিন্ন কারণে হুমকির মুখে রয়েছে ছেঁড়া দ্বীপ। সেই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ও প্রবাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে শুধু ছেঁড়া দ্বীপ নয়, সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াত নিষিদ্ধ করা উচিত। কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) প্রধান নির্বাহী এম ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, ‘ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকলে প্রকৃতপক্ষে তা কেউ মানছেন না। ফলে ছেঁড়া দ্বীপের সামুদ্রিক প্রবালগুলো হুমকির মুখে রয়েছে। নানা উদ্যোগের কথা শুনেছি, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দ্বীপরক্ষায় আগে অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাঙা দরকার। পাশাপাশি সরকারের উচিত, সেন্ট মার্টিনে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন ও তদারকি করা। তা না হলে দ্বীপটি আগামী ২০ বছরের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে।’

আরও পড়ুন- BJP জিতলে উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি! মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় বিতর্ক

Related articles

“রিচার নামে স্টেডিয়াম ইতিহাস হয়ে থাকবে”, উচ্ছ্বসিত ঝুলন

শিলিগুড়িতে রিচা ঘোষের(Richa Ghosh)  নামে স্টেডিয়াম হচ্ছে শিলিগুড়িতে। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করেছেন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের নামে...

‘হাঁটি হাঁটি পা পা’-র ট্রেলার-পোস্টার লঞ্চে ‘বাবা-মেয়ে’র রসায়নে চিরঞ্জিৎ-রুক্মিণী

অর্ণব মিদ্যার ছবি 'হাঁটি হাঁটি পা পা'-র ট্রেলার ও পোস্টার লঞ্চের জমজমাট অনুষ্ঠান হল ফ্লোটেলে। বৃদ্ধ বাবা ও...

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...
Exit mobile version