বাংলার ছেলে হলেও বাসিন্দা ছিলেন মুম্বইয়ের।তবে বাংলার সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন বাপি লাহিড়ি। খাওয়াদাওয়াতেও ছিল সম্পূর্ন বাঙ্গালিয়ানার ছোঁয়া। শিলিগুড়ির কলেজ পাড়ায় বাপি লাহিড়ির মাসির বাড়ি। সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যুতে সেই বাড়িতে আজ শোকের ছায়া। বাপি লাহিড়ির মৃতিচারণায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভাইপো। বললেন, মুম্বইয়ে ভালো মাছ পাওয়া যেত না বলে দুঃখ করতেন বাপি লাহিড়ি।

আরও পড়ুন:Bappi Lahiri: বাপ্পি লাহিড়ীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ সচিন, বিরাট, মিতালি রাজদের

উত্তরবঙ্গের সঙ্গে নাড়ির টান ছিল সুর সম্রাট বাপি লাহিড়ির। মাসির বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল ২ বছর বয়স থেকে। মাসতুতো দাদার নাতির পৈতের অনুষ্ঠানে শেষবারের মত এসেছিলেন। সেবার বেশ কয়েকদিন শিলিগুড়িতে ছিলেন বাপি। তবে তার আগে উত্তরবঙ্গে ঘুরতে বা কোনও কাজে এলেই মাসির বাড়িতেই উঠতেন। সে কটা দিন পরিবারের সঙ্গে গান, গল্প, আড্ডায় কেটে যেত। মাছ খেতে খুব ভালোবাসতেন বাপি লাহিড়ি। মুম্বইয়ে সবরকম মাছ পাওয়া যায় না বলে খুব দুঃখ করতেন। বাপি লাহিড়ির আকস্মিক মৃত্যুতে পুরনো স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন মাসতুতো দাদা ভবতোষ চৌধুরী।

আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর শোকবার্তায় লেখেন ‘ উত্তরবঙ্গের সন্তান আমাদের বাপি লাহিড়ি অসামান্য প্রতিভা ও কঠোর পরিশ্রমে সর্বভারতীয় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর সাঙ্গীতিক অবদানের মাধ্যমে আমাদের গর্বিত করেছেন, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অবিস্মরণীয় সুরের জাদুতে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন। হিন্দি,বাংলা ছাড়াও তিনি তেলুগু, তামিল, কন্নড়-সহ বিভিন্ন ভাষার চলচ্চিত্রের গানে সুরারোপ করেছিলেন।’
মঙ্গলবার মধ্যরাতেই মুম্বইয়ের জুহুর এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে সুরকার ও সঙ্গীতশিল্পী বাপি লাহিড়ির। হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃতদেহ বাপি লাহিড়ির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলেও এখনও শেষকৃত্য হয়নি। জানা গেছে, ছেলে বাপ্পা লাহিড়ি আমেরিকা থেকে দেশে ফেরার পর, বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের পবনহংস শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

অন্যদিকে বুধবারই রবীন্দ্র সদনে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি বাপি লাহিড়িকেও রাজ্য সরকারের তরফে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একতারা মুক্তমঞ্চে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাখা রয়েছে বাপি লাহিড়ির ছবি। ভারতীয় সঙ্গীত জগতের ডিস্কো কিং-কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন অনুরাগীরা।
