দ্রুত গণবিলুপ্তির পথে এগিয়ে যেতে লক্ষ লক্ষ কোটি ডলার ব্যায় করছে বিশ্ব! প্রকাশ্য চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

সভ্যতা নিজের বিলুপ্তির জন্যই ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দেশেরই টাকার কোন অভাব হচ্ছে না। লক্ষ লক্ষ কোটি ডলার, পাউন্ড, ইউরো যে সব খাতে, যে সব দিকে বরাদ্দ করা হচ্ছে তাতে শেষের সে দিন আরও তাড়াতাড়ি এগিয়ে আসছে। ক্রমশ শেষ হয়ে যাচ্ছে বন্যপ্রাণী, উদ্ভিদ, প্রকৃতি, পরিবেশ। পৃথিবীতে উষ্ণায়নের জেরে গলে যাচ্ছে দুই মেরুর বরফ। উঠে আসছে সমুদ্র, মহাসাগরের জলস্তর। আরও দ্রুত সভ্যতা এগিয়ে যাচ্ছে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির পথে। মার্চে জেনিভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) আসন্ন আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য সম্মেলনের প্রাক মুহূর্তে বিশেষজ্ঞদের গবেষণালব্ধ একটি রিপোর্ট এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে।

রিপোর্টের শিরোনাম— ‘প্রোটেক্টিং নেচার বাই রিফর্মিং এনভায়রনমেন্টালি হার্মফুল সাবসিডিজ: দ্য রোল অব বিজনেস’। এই রিপোর্ট রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) অধীনে থাকা সংস্থা ‘বিজনেস ফর নেচার’-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া ভর্তুকি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘আর্থ ট্র্যাক’-এর ওয়েবসাইটেও দেওয়া হয়েছে। গত দেড় দশকে এমন চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট এই প্রথম সামনে এল। এই রিপোর্টে দেওয়া হয়েছে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর প্রকল্পগুলিতে বিশ্বের সবক’টি দেশে বছরে গড়ে কী পরিমাণে অর্থবরাদ্দ করা হয় তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব।

রিপোর্টে অনুযায়ী, পরিবেশ ও বাস্ততন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর যে সব শিল্প ও কৃষি প্রকল্পে বিশ্বে প্রত্যেক বছর হু হু বাড়ছে অর্থবরাদ্দ ও ব্যয়ের পরিমাণ। এর মধ্যে অন্যতম- জীবাশ্ম জ্বালানি, কৃষি ও কৃষিভিত্তিক, জলনির্ভর শিল্প। বছরে মোট অর্থবরাদ্দের ৮০ শতাংশই যাচ্ছে এই সমস্ত ক্ষেত্রে।

বিশ্বে বছরে বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকির মাধ্যমে গড়ে ৬৪ হাজার কোটি ডলার অর্থসাহায্য পাচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর শিল্প, প্রকল্প, নানা কর্মকাণ্ড। এর জেরে জলবায়ু পরিবর্তন,  বায়ু, জলদূষণ, ভূমিক্ষয় ও ধসের ঘটনা বাড়ছে।

আরও পড়ুন: ঘরে নিরাপদ অনুভব না করলে হিজাব পরুন, বাইরে দরকার নেই: বিতর্কিত মন্তব্য প্রজ্ঞার

বিশ্বে বছরে বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকির মাধ্যমে গড়ে ৫২ হাজার কোটি ডলার অর্থসাহায্য পাচ্ছে কৃষিভিত্তিক শিল্পক্ষেত্রগুলি। বাড়তি উৎপাদনের লক্ষ্যে অনিয়ন্ত্রিত এবং অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজের জন্য জমির ক্ষয়, জলদূষণ দ্রুত হারে বাড়ছে। কেটে ফেলা হচ্ছে গাছ। বনাঞ্চল ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রাণী- উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্ত হচ্ছে। গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনের পরিমাণ বাড়ছে। বিশ্বে প্রত্যেক বছর যে পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয় কৃষিতে তার ৯০ শতাংশই পরিবেশ ও সার্বিক বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর।

বিশ্বে বছরে বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকির মাধ্যমে গড়ে ৩৫ হাজার কোটি ডলার অর্থসাহায্য পাচ্ছে জলনির্ভর শিল্প ও বর্জ্য জলকে রূপান্তরের প্রকল্পগুলি। ফলে, পরিস্রুত জল হিসাব করে খরচ হচ্ছে না। এতে বাড়ছে জলদূষণ। সাগর, মহাসাগর, নদী, খাল-বিলে থাকা জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

এছাড়া বনসৃজন প্রকল্পে প্রতি বছর বিশ্বে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ব্যায় করা হচ্ছে। নির্মাণপ্রকল্পে ৯ হাজার কোটি ডলার। পরিবহণ প্রকল্পে ৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার এবং মৎস্যপ্রকল্পে পাঁচ হাজার কোটি ডলার বরাদ্দ করা হচ্ছে।

রিপোর্টে আগামী তিন দশকে ভর্তুকির মাধ্যমে এই অর্থবরাদ্দের অভিমুখ জানানোর প্রস্তাব দেওয়া। সভ্যতাকে দ্রুত হারে গণবিলুপ্তির পথে এগিয়ে যেতে না হয় এই কারণে বহু দেশের কাছে ৫০ হাজার কোটি ডলার ব্যয়বরাদ্দের আর্জি জানানো হয়েছে।

 

Previous article‘বাংলার গৌরব’ কিংবদন্তি ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleAccident:মুখ্যমন্ত্রীর ডিউটি করে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পুলিশকর্মীর গাড়ি, আহত ১০