জিটিএ নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, পাহাড়েও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের পক্ষে সওয়াল

রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথম দিনে শিলিগুড়ির গোঁসাইপুরে সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়ে উত্তরা ময়দান থেকে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সোমনাথ বিশ্বাস, শিলিগুড়ি: পৃথক রাজ্যের পরিবর্তে এখন পাহাড়বাসীর দাবি, সামগ্রিক উন্নয়ন। আর তার জন্য প্রয়োজন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বা জিটিএ নির্বাচন (GTA Election)। সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যেমনটি মনে করা হচ্ছিল, তেমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(CM Mamata Banerjee)। আজ, রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথম দিনে শিলিগুড়ির(Siliguri) গোঁসাইপুরে সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়ে উত্তরা ময়দান থেকে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GTA) নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী(CM)। তাঁর কথায়, ”আমি চাই, আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই জিটিএ নির্বাচন সম্পন্ন হোক। আমি সেই বিষয়টি দেখতেই এখানে এসেছি। পাহাড়ে তিনদিন থাকব। পাহাড়ের দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।”

একইসঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিরও বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের সকলকে উদ্দেশ করে বলেন, “কথা কম, কাজ বেশি। আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন, ভাল করে কাজ করুন। শিলিগুড়ির পুরভোটের মতোই শান্তিতে পঞ্চায়েত ভোট করতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করুন। আমার কোনও ছুটি নেই। উত্তরবঙ্গে থাকি কিংবা দক্ষিণবঙ্গে, আমাকে রোজ কাজ করে যেতে হয়। কারণ, মানুষ আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। মানুষের জন্য আজ আমি এখানে। পাহাড়েও পঞ্চায়েত ভোট করতে চাই আমরা। কিন্তু আইনি জটিলতা রয়েছে। পাহাড়ের পঞ্চায়েত দ্বিস্তর। কিন্তু বাংলায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ব্যবস্থা রয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে আইন বদলে পাহাড়েও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত চালুর আবেদন জানিয়েছে রাজ্য। এই আইন কেন্দ্রকে বলবৎ করতে হয়।”

প্রসঙ্গত, পাহাড়ে শেষবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল ২০০০ সালে। এবার আইন সংশোধন করে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনও সম্পন্ন করার পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনে সংশোধনের জন্য কেন্দ্রের কাছে দরবারও করেছেন বহুবার।যাতে জেলা পরিষদ গঠিত হয় পাহাড়ের মানুষ আরও উন্নয়ন মূলক কাজ পায়। কিন্তু এখনও কেন্দ্রের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।

এর পাশাপাশি দার্জিলিংয়ে হামরো পার্টির উত্থানে পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে৷ সকলকে চমকে দিয়ে পুরভোটে জিতে দার্জিলিং পুরসভা দখল করেছে অজয় এডওয়ার্ডসের নবাগত হামরো পার্টি (Hamro Party)৷ মোট ৩২ আসনের দার্জিলিং পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডেই হামরো পার্টি প্রার্থী দিয়েছিল। ১৮টিতে জয়ী হয় তারা। তৃণমূলের ১০ প্রার্থীর মধ্যে ২ জন জিতেছে। ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে মোর্চার জয় এসেছে ৩টি আসনে। এছাড়া অনীত থাপার দল পেয়েছে ৭টি। পুরভোটের ফলাফলেই প্রমাণিত, দার্জিলিংয়ে বিজেপি অনেকটাই কোণঠাসা৷ তৃণমূল সূত্রের খবর, পাহাড়ের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কাজে লাগিয়েই দার্জিলিংয়ে নতুন করে তৃণমূল মাটি শক্ত করার চেষ্টা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

অর্থাৎ, এই মুহূর্তে পাহাড়ে কোনও একক ব্যক্তি বা সংগঠন আর শেষ কথা নয়। জিটিএ নির্বাচনে বহুমুখী লড়াই হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের। এবং নির্বিঘ্নে পুরসভা নির্বাচনের পর পাহাড়ে জিটিএ ও পঞ্চায়েত নির্বাচনেও যদি বহুমুখী দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, তাহলে সুস্থ গণতন্ত্রের বার্তা যাবে। এবং সেটাই চাইছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Previous articleIndia Team: ‘ঝুলনের জন‍্য ম‍্যাচটা জিততে চেয়ে ছিলাম’, প্রোটিয়াদের কাছে হারের পর জানালেন মিতালি
Next articleMamata: দেউচা পাচামি আটকাতেই রামপুরহাটে বড় ষড়যন্ত্র: বিস্ফোরক অভিযোগ মমতার