অ-হিন্দু তাই প্রবেশে বাধা: কেরলের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ভরতনাট্যম শিল্পী মানসিয়া

“অ-হিন্দু হওয়ার কারণে কেরালার(Kerala) মন্দিরে একটি নির্ধারিত নৃত্য অনুষ্ঠান করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” সম্প্রতি এমনই অভিযোগ তুলে কেরলের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ভরতনাট্যম(Vharatanatyam) শিল্পী মানসিয়া ভি পি(Mansia VP)। মুসলিম পরিবারে জন্ম হলেও শাস্ত্রীয় নৃত্য শিল্পী হওয়ার কারণে পূর্বে ইসলামিক ধর্মগুরুদের ক্রোধ ও বয়কটের মুখোমুখি হয়েছিলেন ওই শিল্পী। সম্প্রতি ত্রিশূর জেলার ইরিঞ্জালকুডায় রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত দেবস্বম বোর্ডের অধীনে কুডালমাণিক্যম মন্দির প্রাঙ্গণে নৃত্যঅনুষ্ঠানে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় কেরল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষভ উগরে দিলেন মানসিয়া।

সম্প্রতি ক্ষোভ উগরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানান, আগামী ২১ এপ্রিল এই নৃত্য অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল মন্দির প্রাঙ্গনে। তাঁর কথায়, “মন্দিরের একজন কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছিলেন যে আমি একজন অ-হিন্দু হওয়ায় আমি মন্দিরে অনুষ্ঠান করতে পারি না। আপনি একজন ভাল নৃত্যশিল্পী কিনা তা বিবেচ্য নয়। ধর্মের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কে নৃত্য পরিবেশনের সুযোগ পাবে। শুধু তাই নয়, আমি বিয়ের পরে হিন্দু হয়েছি কিনা তা নিয়েও প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি। আমার কোন ধর্ম নেই।” প্রসঙ্গত, ওই নৃত্য শিল্পী সঙ্গীতশিল্পী শ্যাম কল্যাণকে বিয়ে করেছেন।

আরও পড়ুন:Mamata: সবাই চাইছে জিটিএ নির্বাচন হোক: ২-৩ মাসের মধ্যে ভোটের ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রীর

সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি আরও লেখেন, ধর্মের উপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠান থেকে বাদ পড়ার অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য এই প্রথমবার নয়। কয়েক বছর আগে, তাকে অহিন্দু হওয়ার কারণে গুরুভায়ুর শ্রী কৃষ্ণ মন্দিরে অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, “শিল্প এবং শিল্পীরা ধর্ম এবং বর্ণের সাথে বন্ধনে আবদ্ধ। এক ধর্মের জন্য নিষিদ্ধ হলে তা অন্য ধর্মের একচেটিয়া অধিকারে পরিণত হয়। এই অভিজ্ঞতা আমার কাছে নতুন নয়। আমি এখানে (ফেসবুকে) রেকর্ড করছি শুধুমাত্র মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ কেরালায় কিছুই পরিবর্তন হয়নি।”

এপ্রসঙ্গে কুডালমানিক্যম দেবস্বম (মন্দির) বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ মেনন বলেন, “মন্দিরের বিদ্যমান ঐতিহ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র হিন্দুরাই মন্দিরের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান করতে পারেন। এই মন্দির ১২ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। মন্দির প্রাঙ্গণে ১০ দিনের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবে প্রায় ৮০০ শিল্পী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশন করবেন। আমাদের নিয়ম অনুসারে, আমাদের শিল্পীদের জিজ্ঞাসা করতে হবে যে তারা হিন্দু নাকি অহিন্দু। মানসিয়া লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, তার কোনো ধর্ম নেই। তাই তাকে অনুষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা মন্দিরের প্রথা অনুযায়ী চলেছি মাত্র।”

 

Previous articleপেঁয়াজ রফতানি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা, লরিতে আগুন
Next articleসিবিআই তদন্ত চলছে, তাহলে কীসের দাবিতে বিধানসভায় হাঙ্গামা বিজেপির! তীব্র নিন্দা কুণালের