দেশজুড়ে বামেদের ক্রমাগত রক্তক্ষরণের মধ্যে কেরলের কান্নুরের বার্নাশেরির ই কে নায়নার হলে আজ, বুধবার আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে সিপিআইএমের ২৩তম পার্টি কংগ্রেসের। সেই রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে এবারের পার্টি কংগ্রেস ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। রীতি অনুযায়ী, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির উদ্বোধনী ভাষণের পরে বার্তা দেবেন বিভিন্ন রাজ্য থেকে অংশ নেওয়া অন্যান্য নেতৃত্ব। তবে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙে সিপিএম তৈরির পরে এ বারই প্রথম কোনও পার্টি কংগ্রেসে থাকছেন না ভি এস অচ্যুতানন্দন। শারীরিক কারণে তিনি আপাতত বাড়িতেই বিশ্রামে।
আরও পড়ুন: কোথায় তিনি? প্রতিষ্ঠা দিবসেই দিলীপকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা সুকান্তদের
এবার পার্টি কংগ্রেসে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে একঝাঁক নতুন প্রজন্মের নেতাদের জায়গা হতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সিপিএমের তথ্য বলছে, বর্তমানে গোটা দেশে তাদের সদস্য-সংখ্যা ৯ লক্ষ ৮৫ হাজার ৭৫৭। তার মধ্যে কেরলেই ৫ লক্ষ ২৭ হাজার ১৭৪। বাংলায় সদস্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৮২৭। তরুণ প্রজন্মকে দলের সদস্য হিসেবে টেনে আনায় যে ব্যর্থতা ঘিরে উদ্বিগ্ন কমিউনিস্টরা, সেই ব্যর্থতা এবার ঝেড়ে ফেলতে বদ্ধপরিকর সিপিএম।
জানা গিয়েছে, এবার পার্টি কংগ্রেসের আলোচনায় অন্যতম ইস্যু হতে পারে সঙ্ঘ পরিবার। রাজনৈতিক মহলে মনে করা হয়, গত কয়েক দশকে আরএসএস এবং বিজেপির বাড়বাড়ন্ত, উত্থান সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে কমিউনিস্টদের। দলীয় মতাদর্শ ও নীতির প্রশ্নে আরএসএস ও কমিউনিস্টরা একে অপরের সবচেয়ে বড় শত্রু। এটা সর্বজনবিদিত। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাংলা বা ত্রিপুরার মতো রাজ্যে বামের ভোট রামে যাচ্ছে। যা তুমুল উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগের বিষয় সিপিএমের কাছে। ফলে ভোট অঙ্কের এই বিষয়টিও তুমুল চর্চায় থাকবে পার্টি কংগ্রেসে। হবে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
অন্যদিকে, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পার্টি কংগ্রেসের ক্লাসে এবার সঙ্ঘ পরিবারকে নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইছে সিপিএম। আরএসএসের ট্যাকটিক বা কৌশল রপ্ত করার পাশাপাশি সিপিএম নেতারা মনে করছেন শত্রুকে ঘায়েল করতে হলে সর্বাগ্রে শত্রুর কৌশল সম্পর্কে জানাটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আর দেশজুড়ে বিজেপিকে পরাস্ত করতে গেলে তাদের চালিকা শক্তি আরএসএসের মোকাবিলা করতে হবে তাদের পথে হেঁটেই। জানতে হবে, আরএসএস কোন কায়দায় ক্রমশ নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। তাই সিপিএমের ২৩তম পার্টি কংগ্রেসে পেশ করা দলের সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্টে সঙ্ঘ-সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে চর্চার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
