KKR vs MI: কামিন্সের কালবৈশাখীতে উড়ে গেল রোহিতের মুম্বই ইন্ডিয়ান্স

এভাবেও ম্যাচ জেতা যায়, দেখালেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক। পাকিস্তানে সিরিজ জিতে এসেছিলেন। এখানেও এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। ১৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি, চারটি চার, ছ’টি ছক্কা দিয়ে এই ইনিংসের অভিঘাত বোঝানো যাবে না। বলতে হবে মুম্বইয়ের মুখের গ্রাস ছিনিয়ে এনেছেন তিনি। চার ওভার বাকি রেখে কেকেআর ১৬২/৫। জয় পাঁচ উইকেটে। মুম্বইকে শেষ কবে এমন দাপটে হারিয়েছে নাইটরা, মনে করা যাচ্ছে না। এটাও মনে করা যাচ্ছে না, শেষ কবে কোন নাইট (৫৬ নট আউট) মুম্বইকে এভাবে ছত্রখান করেছেন।

১০১ রানে রাসেল ফিরে যাওয়ার পর কামিন্স নেমেছিলেন। তখনও জিততে ৬১ রান দরকার। কেকেআরের হাতে ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৫০ নট আউট) আর দলের স্বীকৃত বোলাররা। এখন থেকে যে জেতা যায়, তখন ভাবা যাচ্ছিল না। ঠিক এই অসম্ভবকেই সম্ভব করে ছাড়লেন কামিন্স। যে টাইমাল মিলস, মুরুগান অশ্বিন এতক্ষণ কেকেআরকে চাপে রেখেছিলেন, কামিন্স এসে সেই বাঁধনটাকেই ছিঁড়ে ফেললেন। হিসেব বলছে এই আইপিএলে এটাই দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু এসব তথ্য দিয়ে কামিন্সকে মাপা যাবে না। রোহিত যেমন ম্যাচের পর বলে গেলেন, এরকম কেউ খেলে দিলে আর কী বলার থাকতে পারে! তবু এমন রোমহর্ষক জয়ের দিনে বাস্তব ছবিটাও সামনে আনতে হচ্ছে। নাইটদের জন্য সমস্যা হল, টপ অর্ডার একদম দাঁড়াতে পারছে না। রাহানে পরপর সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পরপর ব্যর্থ হচ্ছেন। বুধবার আউট হলেন ৭ রানে। শ্রেয়স ১০, বিলিংস ১৫, রানা ৮। কেকেআর ব্যাটিংয়ের দৈন্যদশা একটু একটু করে প্রকট হয়েছে এমসিএ স্টেডিয়ামে। এরপর রাসেলকে মিলস তুলে নিতেই তখনকার মতো ম্যাচের স্টিয়ারিং নিজের হাতে নিয়েছিলেন রোহিত।

মুশকিল হচ্ছে যে কেকেআর যাঁদের দল থেকে ছেঁটে ফেলে, তাঁরাই অন্য দলে গিয়ে ভাল খেলেন। সূর্যকুমার যাদব, দীনেশ কার্তিক। এঁদের একজনও শ্রেয়স আইয়ারের এই দলে থাকলে কামিন্স-ঝড়ের আগে এমন ব্যাটিং হারাকিরি দেখতে হত না। তাহলে হয়তো ছয় নম্বরে এসে কামিন্সকেও এই রুদ্ধশ্বাস ক্যামিও করে যেতে হত না। ১৬২ রান তাড়া করতে গেলে টপ অর্ডারকে রান করতে হয়। মিডল অর্ডারকেও দাড়িয়ে যেতে হয়। কিন্তু এই কেকেআর অপেক্ষায় থাকে কখন রাসেল খেলবেন আর তারা জিতবে। বুধবার সেই দিনটা ছিল না। রাসেল ফিরে যান পাঁচ বল খেলে।

ঈশান কিশানের সঙ্গে বোলার কামিন্সের হালকা দুশমনি তৈরি হয়েছে আইপিএলে। বার দুয়েক আউট করেছেন মুম্বই ওপেনারকে। দেখা গেল সেই উইকেটটা আবার নিয়ে গেলেন তিনি। কোমরের কাছে বল এলে ঈশানের পুল মারার অভ্যেস। শর্ট মিড উইকেটে শ্রেয়সকে দাড় করিয়ে কামিন্স সেটাই করলেন। হালকা স্লোয়ার ছিল। আগে শট খেলে ফেললেন এবারের নিলামে সবথেকে দামি প্লেয়ার। বল সোজা চলে গেল কেকেআর অধিনায়কের হাতে।

ঈশান ২১ বলে ১৪। ৩ রানে রোহিতকে তুলে নিয়ে উমেশ প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন। মুম্বই তখন ৬। এদিন আইপিএলে অভিষেক হল দক্ষিণ আফ্রিকার দিবাল্ড ব্রেভিসের। তিনি করে গেলেন ২৯ রান। ১১তম ওভারে ঈশান যখন আউট হলেন মুম্বই ৫৫/৩। তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়নি সূর্যকুমার যাদবের জন্য। চোট সরিয়ে এদিনই দলে ফিরলেন। আর ফিরেই ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি। শেষপর্যন্ত ৩৬ বলে ৫২। কিন্তু রাহানে যেভাবে তিলকের ক্যাচ গলালেন, সেটা একেবারে স্কুল পড়ুয়াদের মতো। এটাই পরে খুব দামি হয়ে গেল। তিলক ২৭ বলে ৩৮ রান করে গেলেন। তাঁর আর সূর্যর জুটিতে উঠে এল ৮৩ রান। পরে ৫ বলে ২২ রানের ঝড় উঠল পোলার্ডের ব্যাটে। আর তাতে ভর করে মুম্বই কুড়ি ওভারে তুলল ১৬১/৫। কামিন্স দুটি উইকেট নিলেও চার ওভারে দিয়ে গেলেন ৪৯ রান। তাঁর শেষ ওভার অনেক দামি হয়ে গেল। কিন্তু দিনের শেষে তিনিই নায়ক। তিনিই বাজিগর।

আরও পড়ুন- জয় দিয়ে যাত্রা শুরু, কোরিয়া ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে সিন্ধু-শ্রীকান্ত

Previous articleজয় দিয়ে যাত্রা শুরু, কোরিয়া ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে সিন্ধু-শ্রীকান্ত
Next articleBreakfast Sports: ব্রেকফাস্ট স্পোর্টস