করোনা আবহে দু’বছর বন্ধ থাকার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে ফের শুরু হয়েছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। গতকাল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ডিনারের পর আজ, বুধবার সকাল থেকে নিউটাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে দু’দিনের আন্তর্জাতিক মানের লগ্নিযজ্ঞ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছে। আর প্রথমদিনেই বাংলার শিল্পক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন একের পর এক বিশ্বখ্যাত শিল্পপতি।

আদানি, জিন্দল, টাটা, হীর নন্দানি, গোয়েঙ্কা-সহ একাধিক গোষ্ঠীর শিল্পপতিরা হাজির এই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চমকপ্রদ সব প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। এবং সেই প্রস্তাব বা উদ্যোগ যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে অচিরেই বাংলার বুকে যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প-বাণিজ্যের জোয়ার বইবে, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন:বাংলার আশা পূরণ করব: BGBS-এর মঞ্চে রাজ্যে বিপুল বিনিয়োগের বার্তা আদানির

একনজরে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে যা বললেন দেশের তাবড় শিল্পপতিরা—

সজ্জন জিন্দল : পরিকাঠামো ও ভৌগোলিক অবস্থানের জেরে বাংলায় বিনিয়োগের সুবিধা ও আদর্শ পরিবেশ। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমার কাজ করতে কোনও কর্মদিবস নষ্ট হয়নি। আগেকার মতো অবস্থা এই রাজ্যে আর নেই। ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমরা গড়ছি। এছাড়া মায়াপুরে ৭০০ একর জমিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মন্দির তৈরি হতে চলেছে।

গৌতম আদানি : আমাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ। বাংলা নিয়ে আমি বরাবর আগ্রহী। বাংলা দেশকে যত মণীষী দিয়েছে অন্য কোনও রাজ্যে তা নেই। বাংলার মতো নারী ক্ষমতায়ন অন্য রাজ্যে কেউ ভাবে না। যার জন্য কন্যাশ্রী এত সফল। যা রাষ্ট্রসংঘ থেকে পুরস্কার পেয়েছে। এই রাজ্য সরকারের সবুজ সাথী ও উৎকর্ষ বাংলার মতো প্রকল্পে বাংলার মানুষ উপকৃত। আমাদের লক্ষ্য অনেক বড়। পরিকাঠামো নিয়ে আমরা আগেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আদানি গ্রুপ ডেটা সেন্টার, আন্ডার সি কেবল, সেন্টার ফর এক্সেলেন্স, লজিস্টিক পার্ক ও ফরচুন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে। যার জেরে এই রাজ্যে ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে আমাদের। ২৫০০০ কর্মসংস্থান হবে। আমাদের সব অভিজ্ঞতা বাংলাকে দেব। আমরা টেকনোলজি দেব বাংলাতে। বাংলার আশা আমরা পূরণ করব। আমরা বাংলাতে আমাদের সেরা টিম আনব।

নিরঞ্জন হিরানান্দানি : ১৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পরিকল্পনা৷ গেইল এর পাইপলাইন প্রজেক্টের কাজ একসঙ্গে করা হচ্ছে৷

সঞ্জীব গোয়েঙ্কা : পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের পরিবেশ পরিকাঠামো প্রস্তুত। এ রাজ্যে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। বাংলা মানে এখন ব্যবসা৷ তাই নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করুন।

রিশাদ প্রেমজি : আমাদের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এই রাজ্যের যোগাযোগ রয়েছে। রাজারহাটে আমরা কাজ শুরু করছি আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই।

টি ভি নরেন্দ্রণ : টাটা স্টিল দীর্ঘদিন ধরে এখানে বিনিয়োগ করে এসেছে। ৬০০ কোটি বিনিয়োগ হবে খড়গপুরে৷ ইউনিট আরও বাড়বে। এছাড়া টিসিএস ও হোটেলেও বিনিয়োগ করা হবে।

সঞ্জীব মেহেতা : পানীয় জল নিয়ে এই রাজ্যে অনেক কাজের সুযোগ রয়েছে। খাদ্য উৎপাদন থেকে হসপিটালিটি, সব ক্ষেত্রেই সুযোগ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে।

সঞ্জীব পুরী : বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ দেখেই পরিস্কার, বাংলা মানেই ব্যবসার আত্মবিশ্বাস। আইটিসির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক কলকাতার। পাঁচলায় ফুড প্রসেসিং করছি আমরা। কৃষি ও পর্যটন এই দুই ক্ষেত্রেই আমাদের আগ্রহ। বাংলা যে আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে, তা সাধুবাদ যোগ্য। কলকাতা আমাদের কাছে একটা ঘর। রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত পরিবেশ আছে। ৪৫০০ কোটি টাকা গ্রিন ফিল্ড ফেসিলিটিতে আমরা বিনিয়োগ করেছি। ফুড প্রসেসিংয়ে আমরা বিনিয়োগ করছি।
