১০ বছরের শাস্তিযোগ্য অপরাধের মামলা চলল ৩৪ বছর

মামলার দীর্ঘসূত্রতার কথা মাথায় রেখে নতুন করে আর শাস্তি দেওয়া হল না। আগে তাঁরা যে কটা দিন জেল বন্দি ছিলেন তাই শাস্তি হিসেবে গণ্য হবে।

বছরের পর বছর শুধু অপেক্ষায় কেটে গেল। একের পর এক তারিখ এল গেল কিন্তু বিচার শেষ হল না। দোষী শাস্তি পেলে তাঁর বা তাঁদের ১০ বছরের কারাবাস বা জরিমানা হতে পারত। অথচ মামলার জেরে বন্দি দশায় কেটে গেল প্রায় তিন যুগের কাছাকাছি সময়। তাই বাধ্য হয়েই আর সাজা ঘোষণা করতে পারল না মহামান্য আদালত(High Court)। জেল বন্দি যে তাঁরা প্রায় ৩৪ বছর !

যাঁদের কথা হচ্ছে তাঁরা সবাই মালদহের (Malda) বাসিন্দা। গৌর মন্দল,সুবোধ চন্দ্র রায়-সহ পাঁচ জন অভিযুক্তকে নিয়েই এত আলোচনা। সূত্রের খবর মালদহের ইংরেজবাজার এলাকার বাসিন্দা রঘুনাথ মণ্ডল তাঁর আমবাগান খগেন মণ্ডলের কাছ থেকে বন্ধক রেখেছিলেন। ১৯৮৮ সালের মার্চ মাসে তিনি বাগান ছাড়াতে গেছিলেন, তখন খগেন মণ্ডলের সাথে বচসা হয়, ঘটনা গড়ায় হাতাহাতি পর্যন্ত । এরপর রঘুনাথকে আটকে রাখা হয় এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে কোপানো হয় , ফলে তাঁর মৃত্যু হয় বলেই সূত্রের খবর। সেই ঘটনায় গৌড় মণ্ডল, সুবোধ চন্দ্র রায়, সুকেশ মণ্ডল, সুনীল রায় ও ফেকান মণ্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সময় নিম্ন আদালতে ১৩ জন সাক্ষী পেশ করে পুলিশ। এরপর বিভিন্ন তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের ৫ বছরের কারাবাস ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়। এরপর ২০০৫ সালে ওই ৫ জন কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন এবং জামিন পান।

এই মামলায় সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত জানিয়েছেন, এতদিন ধরে মামলা লড়ার কষ্ট আর মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে অভিযুক্তদের, সেটা সাজার থেকে কিছু কম নয়। বিচারপতি আরও জানান যে এই মামলায় পুলিশ যে সাক্ষ্য প্রমান পেশ করেছে তা দোষীদের শাস্তি ঘোষণার জন্য যথোপযুক্ত। কিন্তু মামলার দীর্ঘসূত্রতার কথা মাথায় রেখে নতুন করে আর শাস্তি দেওয়া হল না। আগে তাঁরা যে কটা দিন জেল বন্দি ছিলেন তাই শাস্তি হিসেবে গণ্য হবে।

Previous articleট্যাংরায় ফের বিধ্বংসী আগুন, ঘিঞ্জি এলাকায় আতঙ্ক
Next articleChit Fund: বিত্তশালীদের টোপ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত সুরানা গ্রুপ ফান্ড