Wednesday, December 3, 2025

বিচারব্যস্থাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব মুখ্যমন্ত্রী, কথা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও

Date:

Share post:

দিল্লিতে বিচারপতিদের সম্মলনে রাজনৈতিক স্বার্থে বিচারব্যবস্থাকে কাজে লাগানো সহ বাংলায় বিচারপতিদের শূন্যপদ নিয়ে টালবাহানা ও মামলার পাহাড় জমে থাকা নিয়ে অত্যন্ত চড়া সুরে বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। শনিবার দিল্লির(Delhi) বিজ্ঞানভবনে আইনমন্ত্রক দ্বারা আয়োজিত বিচারপতিদের সম্মেলনে সকাল ৯ টার কিছু পরেই পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামাণা, প্রধানমন্ত্রী(prime minister) ও অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। তাঁদের সকলের সামনে ক্ষোভের সঙ্গেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। পাশাপাশি বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে বিচারপতিদের শূন্যপদ নিয়ে এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, বাংলায় ৭২ জন বিচারপতির কাজ করার অপশন থাকলেও মাত্র ৩৯ জন রয়েছেন। ছমাস আগে ১৩ জনের তালিকা পাঠিয়েছিলাম ১ জনকে দেওয়া হয়েছে। কোর্টগুলিতে প্রতিদিন মামলার পাহাড় জমছে। বিচারের আশায় ঘুরছেন বিচারাধীন বন্দীরা।

এদিন সম্মেলনে বেঞ্চের পক্ষ থেকে বিচারপতিদের স্থান সংকুলানের প্রসঙ্গ তোলা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের দুটো হাইকোর্ট আছে। কলকাতা হাইকোর্ট এবং জলপাইগুড়ি হাইকোর্ট। এছাড়া নিউটাউনেও ইতিমধ্যেই ১০ একর জমি নতুন হাইকোর্টের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে । এরথেকে বেশি এই মূহুর্তে করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলতে পারি পুরনো বিল্ডিং টি বন্ধ করা হবে না সেটিও কাজ করবে। কারণ এটি হেরিটেজ বিল্ডিং। এর বাইরে জলপাইগুড়িতেও হাইকোর্ট কাজ করা শুরু করেছে। যার ফলে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের লোকেরাও যথেষ্ট সুবিধা পাবেন।

এদিন প্রধানমন্ত্রীও বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা ও প্রতিটি রাজ্যের আঞ্চলিক ভাষায় আইনের কাজকর্ম করার পক্ষে বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনের ফাঁকে চা চক্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামাণা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজায়গায় মিলিত হলে প্রধানমন্ত্রীকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক ভাষায় আইনের কাজকর্ম সম্পর্কে আপনি যা বললেন তাতে আমিও একমত। আমি মনে করি প্রতিটি রাজ্যে সাধারণ মানুষ যে ভাষায় স্বচ্ছন্দ সেই ভাষাতেই আইনের কাজকর্ম হওয়া উচিত। এছাড়াও পেট্রোল- ডিজেল – গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নজর দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর বাইরেও আরও কয়েকটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হলেও সে বিষয়ে একটি শব্দও মিডিয়াকে বলেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মেলন শেষে বেরোনোর মুখে তিনি জানান, সবকিছু বাইরে বলা যায় না, উচিতও নয়।

এদিন সকালে বিজ্ঞান ভবনে সম্মেলন কক্ষে ঢুকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখেন অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও উপস্থিত হয়েছেন। তিনি এগিয়ে গিয়ে সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। কথা বলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, পাঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সঙ্গেও কথা হয় তাঁর। এছাড়াও অরবিন্দ কেজরিওয়াল, জগনমোহন রেড্ডি, ভূপেশ বাঘেল সহ বাকিদের সঙ্গেও একে একে কথা বলেন তিনি। কুশল বিনিময় করেন উপস্থিত বিচারপতিদের সঙ্গেও। এরপর বলেন বিরতিতে চলে আর এক প্রস্থ আলাপচারিতা। শনিবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতায় ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও সিদ্ধান্ত বদল করে দিল্লিতে থেকে যান তিনি। বিরতির পর যোগ দেন সম্মেলনের দ্বিতীয় সেশনেও। সবশেষে বিকেল পাঁচটায় সম্মেলন শেষ করে তবেই সাউথ দিল্লির সাউথ এভিনিউর বাড়িতে ফিরে যান। রবিবার কলকাতায় ফিরবেন তিনি।

আরও পড়ুন- “মমতাদির উপর আস্থা রাখুন, সরকার আপনাদের শত্রু নয়”, চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান মঞ্চে বার্তা কুণালের

 

 

 

spot_img

Related articles

এসআইআর আতঙ্কে তুফানগঞ্জে আতঙ্কে আত্মঘাতী গৃহবধূ! হাওড়ায় অসুস্থ বিএলও

এসআইআর সংক্রান্ত চাপে একই দিনে দুটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল রাজ্যে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জে আতঙ্কে আত্মঘাতী হলেন এক গৃহবধূ, অন্যদিকে...

স্বাস্থ্যবন্ধু প্রকল্পে তিন সপ্তাহে পরিষেবা পেলেন এক লক্ষের বেশি মানুষ, শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় আরও এক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করল স্বাস্থ্যবন্ধু প্রকল্প। মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই এই প্রকল্পের শিবিরগুলিতে চিকিৎসা...

বাংলার পুলিশের ডিএসপি পদে যোগ রিচা ঘোষের: নাম লেখালেন দীপ্তির পাশে

নিয়োগ পত্র আগেই পেয়েছিলেন। বুধবার পুলিশের উর্দি পরে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন রিচা ঘোষ। না, এটা ক্রিকেটের জার্সিতে উইকেট...

আদালতের রায়ে বহাল ৩২ হাজার প্রাথমিক নিয়োগ, হাইকোর্ট চত্বরে অকাল হোলিতে মাতলেন শিক্ষকরা

দীর্ঘ দু’ বছর ধরে লড়াই, অনিশ্চয়তা আর সামাজিক উপহাস—সবকিছু কাটিয়ে অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা।...