সম্পর্কে তৃতীয় কাঁটা: পল্লবীর মৃত্যুতে উঠছে সম্পত্তি হাতানোর তত্ত্ব

পুলিশের কাছে খবর, পল্লবীর সঙ্গে টলিউডেরই এক ব্যক্তির বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠতা হয়। সেই নিয়েই কি 'লিভ -ইন' সম্পর্কে ছেদ আর তাঁর থেকেই এই পরিণতি, ক্রমাগত জটিল হচ্ছে অভিনেত্রীর মৃত্যু রহস্য।

ক্রমশই রহস্য বাড়ছে অভিনেত্রী পল্লবী দে-র (Pallavi Dey)মৃত্যু ঘিরে। সামনে উঠে আসছে একের পর এক তথ্য। দক্ষিণ কলকাতার গড়ফার গাঙ্গুলীপুকুরের কে পি রায় লেনের বাসিন্দা অভিনেত্রী পল্লবী দে ও তাঁর লিভ ইন পার্টনার সাগ্নিক চক্রবর্তীর (Sagnik Chakrabarty)সম্পর্ক নিয়ে উঠছে নানা কথা। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই কি তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ? সেখান থেকেই তৈরি হওয়া দূরত্ব আর মানসিক অবসাদ মিশে গিয়েই এই চরম পরিণতি? নাকি এর নেপথ্যেও রয়েছে অন্য কোনও কারণ, রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে ক্রমাগত।

মাথা ধড় থেকে আলাদা! নৃশংস খুন বৃদ্ধি দম্পতি ও নাবালিকা কন্যার

সোমবার আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে সাগ্নিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন পল্লবীর বাবা-মা। পল্লবীর বাবা দাবি করেন যে, সাগ্নিক আগেই বিবাহিত ছিল, পল্লবীর থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাগ্নিক। ইতিমধ্যেই সাগ্নিক চক্রবর্তীকে দফায় দফায় জেরা করে গড়ফা থানার পুলিস। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে খুন-প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। ঘটনায় নাটকীয় ভাবে নাম উঠে এসেছে সাগ্নিক চক্রবর্তীর ‘ বিশেষ বান্ধবী’ ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায়ের(Oidrila Mukharjee)। তাঁর বিরুদ্ধেও পুলিসের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে পল্লবীর (Pallavi Dey)পরিবার। এফআইআর করা হয়েছে ঐন্দ্রিলার বিরুদ্ধেও। এবার সাগ্নিকের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে মুখ খুললেন ঐন্দ্রিলা। তাঁর স্পষ্ট দাবি,হঠাৎ করেই একসাথে পার্টিতে দেখা হয়েছিল সাগ্নিক-ঐন্দ্রিলার। তিনি আরও জানান কোনও বারে যাওয়া হয়নি, বরং সাগ্নিক একা নন, “সাগ্নিক-পল্লবী, দুজনের সঙ্গেই দেখা হয়েছিল।” ঐন্দ্রিলার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয়, এর প্রেক্ষিতে তিনি জানান, টাকা-পয়সা নিয়ে তিনি কিছু জানেন না। পল্লবী আর সাগ্নিকের মধ্যে কী হয়েছিল কিংবা কোনও ব্যক্তিগত সমস্যা কোনওদিন তাঁকে জানায়নি। বরং পল্লবী বলত যে লিভ-ইন করে ভালো আছে। অভিনেত্রী বিয়ের প্ল্যানিংও করছিলেন বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে এই ঘটনায় আরও একটি নাম নিয়ে চর্চা ছলছে, তিনি হলেন সাগ্নিক চক্রবর্তীর প্রাক্তন স্ত্রী সুকন্যা মান্না(Sukanna Manna)। তিনি জানান পল্লবীর সঙ্গে সাগ্নিকের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকায় তিনি নিজেই সরে আসেন সম্পর্ক থেকে। পাশাপাশি সুকন্যা জানান যে সাগ্নিককে অকারণে সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি খুন করতেই পারেন না, বরং পল্লবীর চরিত্রের দিকে আঙুল তোলেন তিনি। সুকন্যার মতে পল্লবী এবং তাঁর পরিবার সাগ্নিকের সম্পত্তির কথা ভেবেই সম্পর্কে যুক্ত ছিল। অন্যদিকে পুলিশ জানতে পেরেছে যে ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতেন পল্লবী। গড়ফার প্রতিবেশীরা বলছেন, প্রায়ই দু’জনের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হত।মাঝে মাঝে মেজাজ হারিয়ে জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলতেন পল্লবী। সাগ্নিক ও পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, পল্লবী সোনার গয়না কিনতে শুরু করেছিলেন । পাশাপাশি নতুন সংসার গড়ার স্বপ্নে ফ্ল্যাট সাজিয়ে তোলার জন্য কেনাকাটাও করতেন। তার উপর নতুন একটি ফ্ল্যাট কেনেন সাগ্নিক। নিউ টাউনে ৮০ লাখ টাকার ফ্ল্যাটের মধ্যে ৫৭ লাখ টাকা দেন পল্লবী নিজেই। বাড়ি, গাড়ির ইএমআই মেটাতেন তিনি। পুলিশের কাছে সাগ্নিকের দাবি, এত লোন নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন অভিনেত্রী। পাশাপাশি পুলিশের কাছে খবর, পল্লবীর সঙ্গে টলিউডেরই এক ব্যক্তির বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠতা হয়। সেই নিয়েই কি ‘লিভ -ইন’ সম্পর্কে ছেদ আর তাঁর থেকেই এই পরিণতি, ক্রমাগত জটিল হচ্ছে অভিনেত্রীর মৃত্যু রহস্য।



Previous articleহাসপাতাল ফেরালে FIR: ফের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleজলের ড্রামে মৃত মায়ের সৎকার ছেলের! বেনজির কান্ড তামিলনাড়ুতে