পাকা বাড়ি, নিজের জমি, বিদ্যুত থাকলে রেশন নয়! নয়া ফরমান যোগী রাজ্যে

একদিকে বাংলায় তৃণমূল সরকার যখন সর্বস্তরের মানুষের কাছে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দিতে উদ্যত, কয়েক কোটি মানুষ রেশনের সুবিধা পান। সেখানে বিজেপি শাসিত রাজ্যে কার্যত রেশনের সুবিধাটাকেই তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হল। উত্তরপ্রদেশে মানুষকে রেশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। যোগী সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখন থেকে সর্ব স্তরের মানুষ সরকারি রেশনের সুবিধা পাবেন না। সরকারি রেশন গ্রাহকদের জন্য নিয়মের তালিকা তৈরি করা হল যোগী প্রশাসনের তরফে। বাকিদের রেশন কার্ড ৩১ মে-র আগে পঞ্চায়েত বা সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিয়ে আসতে হবে, অন্যথায় তারা এতদিন ধরে যত রেশন নিয়েছেন বাজার মূল্যে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যোগী সরকারের এহেন নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দলে দলে পঞ্চায়েতে গিয়ে রেশন কার্ড জমা দিতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। রেশন গ্রাহকদের জন্য নিয়মের যে তালিকা তুলে ধরা হয়েছে তাতে যোগী সরকার কার্যত রেশন বন্ধের পথে হাঁটছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। পাশাপাশি যোগীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী।

সরকারি নির্দেশিকার প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশের গ্রামে গ্রামে পঞ্চায়েতের তরফে গোটা বিষয়টি ঘোষণা করার কাজও শুরু হয়েছে। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলার নবাবগঞ্জ পঞ্চায়েতে ঘোষণা হচ্ছে, “যাদের বাড়ি চার চাকার গাড়ি, এসি, ট্রাক্টর রয়েছে, কিংবা যে পরিবারে কেউ সরকারি চাকরি করেন বা বিদেশে থাকেন, যাদের ১০০ বর্গ মিটারে বাড়ি রয়েছে বা বাড়ির কেউ শহরে থাকেন তবে সেই পরিবারের সদস্যরা যত দিন ধরে রেশন নিচ্ছেন তাদের ৩২ টাকা কেজি চাল, ২৪ টাকা কেজি গম, তেল, নুন ও ছোলা বাজারের দাম অনুযায়ী টাকা ফেরত দিতে হবে। অন্যথায় নেওয়া হবে আইনি পদক্ষেপ।”

সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে এদিন সরকারি নিয়মের তালিকা তুলে ধরে তোপ দেগেছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী। তাতে দেখা যাচ্ছে, রেশন গ্রহীতা হিসেবে যোগ্য ধরা হবে তাদের, “যাদের নিজের নামে জমি নেই, পাকা বাড়ি নেই, বাড়িতে মহিষ, বলদ বা ট্রাক্টর নেই, যে পরিবারে মুরগি বা গরু পালন করা হয় না, সরকারি কোনও আর্থিক সহায়তা যারা পান না, যে পরিবারে ইলেকট্রিক বিল আসে না।” নিয়মের তালিকা তুলে ধরার পাশাপাশি টুইটে বরুণ গান্ধী লেখেন, “নির্বাচনের আগে যোগ্য, আর নির্বাচনের পর অযোগ্য? নির্বাচন শেষ হতে না হতেই রেশন কার্ড হারানো কোটি কোটি দেশবাসীকে সরকার কবে স্মরণ করবে? বোধহয় পরের নির্বাচনে…!”

এদিকে এই ঘটনাকে বিজেপি সরকারের তরফে রেশন বন্ধ করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। কারণ যোগ্য হিসেবে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে তাতে যোগ্য রেশন গ্রাহক খুঁজে পাওয়া কার্যত অসম্ভব। কারণ নিজের নামে জমি, পাকা বাড়ি, ইলেকট্রিক বিল থাকলে রেশন পাওয়া যাবে না। এর অর্থ সরকার রেশন পরিসেবা বন্ধ করতে চায় সরকার। আর সেই কারণে যোগ্যতার তালিকা দেওয়া হয়েছে এমন অবাস্তব ও অবান্তর। গ্রামে নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষ হাস মুরগী পালন করে সংসার চালান। যোগী সরকারের ‘যোগ্যতার’ তালিকা বলছে তারাও নাকি রেশনের জন্য ‘অযোগ্য’।




Previous articleবকেয়া টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র, ১০০দিনের কর্মীদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য
Next articleDelhi:পেট্রোল-ডিজেলের এক্সাইজ ডিউটি কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার