একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর থেকে দিলীপ ঘোষকে একের একের এক টুইট বাণে বিদ্ধ করেছেন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। KDSA (কৈলাশ, দিলীপ, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন) কখনও গ্যাংকে কামিনী-কাঞ্চন আবার কখনও দিলীপ ঘোষের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভুয়ো সার্টিফিকেট ও ফিটার মিস্ত্রির তত্ত্ব খাড়া করেছেন তথাগতবাবু। দিলীপ ঘোষ ও তাঁর বৃত্তে থাকা রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে তথাগত রায়কে। দিলীপ ঘোষ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে একটা সময়ে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগেরও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তথাগত।

এবার বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তথাগত রায়। সম্প্রতি দিলীপ ঘোষকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে সেন্সর থেকে শুরু করে বাংলার বাইরের রাজ্যগুলির দায়িত্ব দিয়ে বঙ্গ রাজনীতি থেকে ডানাছাঁটা হয়েছে দিলীপ ঘোষের। সুকান্ত-শুভেন্দু-অমিতাভ লবি শীর্ষ নেতাদের দিয়ে এমন কাজ করিয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে কারণ যাইহোক, বঙ্গ রাজনীতিতে দিলীপের ক্ষমতা খর্ব প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি যে ব্যক্তি আপ্লুত, তিনি তথাগত রায়। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তথাগত রায়ের সাপে-নেউলে সম্পর্ক কারও অজানা নয়।

তাই এবার শীর্ষ নেতৃত্বের প্রশংসা করে টুইট তথাগত রায়ের। শুক্রবার একটি টুইটে তিনি লেখেন, “কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে দেরিতে হলেও সঠিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। ফলে আমি দলের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করব না। নিজের ‘ঠোঁটকাটা’ ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। স্বাভাবিকভাবেই টুইটারের বায়োও পরিবর্তন করছি। ভারত মাতা কী জয়!” দিলীপ ঘোষ বঙ্গ বিজেপির অন্দরে কোণঠাসা হতেই যে এমন টুইট তথাগতর তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষ বনাম সুকান্ত মজুমদার ঠান্ডা লড়াই অব্যাহত। পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে কাছে ‘ব্যাড বুক’-এ নাম উঠতেই দিলীপ ঘোষকে এড়িয়ে যেতে চাইছেন বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও তাঁর লবির নেতারা। গতকাল, বৃহস্পতিবার দলীয় এক কর্মসূচি ঘিরে দিলীপ-সুকান্তের আড়াআড়ি বিভাজন ফের প্রকাশ্যে চলে এসেছে। অনেক আগেই নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২ জুন নদীয়ার তেহট্টে জেলা বিজেপির তরফে রাজনৈতিক সভা ছিল। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদার। এদিন দিলীপবাবু জেলা পার্টির এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিলেও, সেখানে যাননি সুকান্ত মজুমদার। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি কেন গেলেন না, তা সভাপতিই বলতে পারবেন। আমাকে এড়িয়ে চলছেন কি না, তা আমার জানার দরকার নেই। গত ৩১ মে এই কর্মসূচির কথা ছিল। কিন্তু সুকান্তবাবু সময় দিতে পারবেন না বলে তা পিছিয়ে ২ জুন করা হয়। জেলা নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছিল, কর্মসূচিতে আমরা দু’জনেই থাকছি। কেন সুকান্তবাবু এলেন না আমার জানা নেই।” অন্যদিকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, “দলের কাজে কলকাতায় ব্যস্ত ছিলাম। তাই যেতে পারিনি। সবমিলিয়ে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে মুষল পর্ব অব্যাহত। তার মাঝে তথাগত রায়ের এদিনের টুইট বাড়তি মাত্রা যোগ করল।


আরও পড়ুন:সোনিয়ার পর এবার কোভিড আক্রান্ত প্রিয়াঙ্কা

