মনের জোরেই মাধ্যমিকে সফল ‘বিশেষ ভাবে সক্ষম’ ৯৩৯ জন

এবছর মাধ্যমিকে ৯৩৯ জন বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থী সফল হয়েছে।২২০ জন দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল, ২১০ জন অসাধ্য সাধন করতে পেরেছেন। অন্যান্য শারীরিক সমস্যাজনিত কারণে বিশেষভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের মধ্যে সফল হয়েছে ৫৭১ জন।

আর চার পাঁচ জনের মতো স্বাভাবিক জীবন ওদের নয়। কিন্তু তাতে কী? সমাজ সংসার যাই বলুক, ডাক্তারি পরিভাষায় (Medical terms) ওরা বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশু (Special Children)। তাই শুধু দেহে নয়, মন থেকেও একধাপ এগিয়ে লড়াই করতে হয় ওদের। সাধারণদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে আজ ওরা সফল (Successful),ওরা পেরেছে। এবছর মাধ্যমিকের (Madhyamik 2022) ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে ৯৩৯ জন বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থী সফল হয়েছেন।

শুধু হার না মানা মানসিকতা আর এগিয়ে যাওয়ার, কিছু করে দেখানোর অদম্য ইচ্ছে এনে দিল সাফল্য। সমাজ দেখেছে খাটো চোখে,নামীদামি স্কুল ভর্তি নেয় নি। পাড়া প্রতিবেশী থেকে আত্মীয় পরিজন – গুঞ্জন চলেছে প্রতিনিয়ত। তবুও অমর্ত্য, অনুস্কা, অরিত্ররা থেমে থাকেন নি।কলকাতার মাদুরদহের ব্লুমিং ডেল অ্যাকাডেমি হাইস্কুলের (Blooming Del Academy Highschool) শিক্ষক–শিক্ষিকাদের পাশে পেয়ে স্বপ্ন দেখেছে ওরা। তাকে সত্যি করতে দিন রাত এক করে পরিশ্রম করে গেছে। অমর্ত্য ৭১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে এবারের পরীক্ষায়, সঙ্গে আছে ইংরেজি আর ভূগোলে লেটার পাওয়ার রেকর্ড। অরিত্র ৫৫ শতাংশ, আর অনুষ্কা ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে এবারের মাধ্যমিকে। অভিভাবকদের অসম্ভব ধৈর্য আর পরিশ্রম যেন শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও অনুপ্রাণিত করেছে। তবে স্কুলের কৃতিত্ব অনস্বীকার্য বলছেন সবাই। অধ্যক্ষ প্রদীপ্তা কানুনগো বলছেন, ‌ওরা তিনজনেই ভর্তি হয়েছিল প্রাথমিক বিভাগেই। ঠিক করে বসার অভ্যেসটাই ছিল না, পড়াশোনা যে হবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করা যায় নি। সঙ্গে মারপিট, জিনিসপত্র ভাঙচুর – এইসব তো ছিলই। ‌ শিক্ষিকাদের নিয়মিত পরিচর্যা, স্নেহ আর সহমর্মিতা ওদেরকে স্বপ্ন দেখতে সিখিয়েছে। অভিভাবকদের অন্তহীন প্রচেষ্টা আর ডাক্তারি পরামর্শ ওদের নিরলস সঙ্গী হয়েছে।তাই আজ ওরা সফল।

এবছর মাধ্যমিকে ৯৩৯ জন বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থী সফল হয়েছে।২২০ জন দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল, ২১০ জন অসাধ্য সাধন করতে পেরেছেন। অন্যান্য শারীরিক সমস্যাজনিত কারণে বিশেষভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের মধ্যে সফল হয়েছে ৫৭১ জন। ১৮২ জন বধির পড়ুয়ার মধ্যে ১৫৮ জন এই ধাপ পেরিয়ে আগামীতে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন । নিঃসন্দেহে প্রশংসা আর কুর্নিশ জানাতে হয় ওদের। কিন্তু লড়াই তো আরও অনেক বাকি। আগামীতে সমাজের মূলধারায় জীবন–জীবিকা নির্বাহের উপায়ই বা কি? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এদের পরিবারের মনে।



Previous articleমুকেশের মৃত্যুতে নীরব! KK-র ঘটনায় বাংলাকে বদনাম করার চক্রান্ত চলছে: সরব গায়ক অভিজিৎ
Next articleচার দশকে সর্বনিম্ন ইপিএফে সুদের হার, তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূল সহ বিরোধীদের