তৃণমূল যোগে ত্রিপুরায় শিশু সহ ৪ জনকে কোপাল বিজেপি, ভিডিওসহ সরব কুণাল

মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে ঠিকই তবে ত্রিপুরায় বিজেপির হিংসার চরিত্র একই রয়ে গিয়েছে। আর সেই ছবিই প্রকাশ্যে এল এদিন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার একই পরিবারের চারজনকে কোপালো বিজেপি আশ্রিত গুণ্ডারা। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি তীব্র নিন্দা করে বৃহস্পতিবার গণআন্দোলনের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। এদিন তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে গোটা ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ত্রিপুরায় বিজেপির এই হিংসার রাজনীতিকে এদিন কড়া ভাষায় আক্রমণ শানান তিনি।

এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “৪ উপনির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় ভয়াবহ সন্ত্রাস শুরু করেছে বিজেপি। অভিষেক ত্রিপুরাতে পা রাখলে ওদের হৃদকম্প হচ্ছে। ত্রিপুরাতে কোনও গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সুরমাতে নৃশংস হামলা চালিয়েছে বিজেপি। লাঠি বল্লভ দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে, বাচ্চাদেরও ছাড়া হয়নি। আমাদের নেতৃত্বরা আজ ত্রিপুরাতে গিয়েছেন আহতদের চিকিতসার ব্যবস্থা করছেন। অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে গোটা ঘটনায় অভিযোগ জানানো হচ্ছে।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “আবারও ভয় পেয়ে বিজেপি হামলার পথ ধরেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রোড শোতে যেভাবে জনসমুদ্রে ভেসেছেন তাতে বিজেপি ভয় পেয়ে সন্তাস করছে। তবে তৃণমূল থেমে যাওয়ার পাত্র নয়, আগামী ২০ জুন ওই সুরমাতেই যাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।” এছাড়াও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সরব হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “১৩ তারিখ আমাদের সভায় ইট-পাথর ছুঁড়ল বিজেপি, পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল। আর এবার মহিলা শিশুদের উপর হামলা চালানো হল, কোথায় কেন্দ্রের শিশু সুরক্ষা কমিশন? কোথায় মানবাধিকার কমিসন-মহিলা কমিশন? নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানানোর পরও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হল না কেন?” প্রসঙ্গত, এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।

একইসঙ্গে ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “যারা মনে করেন পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ানো উচিত, সন্ত্রাস চালানো উচিত, ওষুধের দাম বাড়ানো উচিত, তারা বিজেপিকে ভোট দিন। আর যারা এগুলি চান না রাজ্যে শান্তি চান তাঁরা তৃণমূলকে ভোট দিন। তবে কংগ্রেস সিপিএমকে ভোট দেবেন না। ওদের ভোট দেওয়ার অর্থ ভোট নষ্ট করা। বিজেপির নিজস্ব সমীক্ষা বলছে ৪ টের মধ্যে ২ টো আসন তৃণমূল পাবে তাই নখ-দাঁত বের করে হামলা চালাচ্ছে বিজেপি। অভিষেকের সফরের আগে পরিকল্পিত ভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।”

উল্লেখ্য, তেইশের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। তার আগে ৪ কেন্দ্রে উপনির্বাচন তৃণমূলের কাছে ট্রায়াল ম্যাচ। এই নির্বাচনকে নজরে রেখে অভিষেক সহ একাধিক শীর্ষ তৃণমূল নেতৃত্ব প্রচারে নেমেছেন। যেখানে মানুষের উদ্দীপনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এরপরই তৃণমূলকে থামাতে অতীতের হামলার পথে হাঁটল বিজেপি। বুধবার সুরমার চানকাপ বাজার এলাকায় তৃণমূলের জনসভা ছিল। সেখানেই ওই এলাকার প্রায় ৭০টি পরিবার ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেয়। এদের মধ্যে ছিলেন একই পরিবারের চার সদস্য-অবিনাশ মালাকার, বল্লভ মালাকার, তাপস মালাকার এবং দীপক মালাকার। তৃণমূলের অভিযোগ, যোগদান কর্মসূচি মিটে যাওয়ার পর রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ মালাকার পরিবারের উপর হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। পরিবারের অভিযোগ, লাঠি, রড, দা, বল্লভ নিয়ে সদস্যদের উপর চড়াও হয় তারা। তৃণমূলের চার সদস্যের পাশাপাশি এক শিশুকেও কোপানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপিআশ্রিত গুন্ডাদের বিরুদ্ধে।


Previous articleIndia Team: ইংল‍্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দিল বিরাট কোহলি-চেতেশ্বর পুজারা, ছবি পোস্ট বিসিসিআইয়ের
Next articleউদ্বোধনের আগেই বদলে গেল শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনের নাম