Friday, December 26, 2025

Tota Roychowdhury: ফেলুদা ভালো লাগুক বা খারাপ, সবাইকে ধন্যবাদ : টোটা

Date:

Share post:

বাঙালির প্রিয় গোয়েন্দা মানেই ফেলুদা। সত্যজিত রায়ের (Satyajit Roy) সৃষ্ট বাঙালি গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে পাঠক আর দর্শকদের মধ্যে উন্মাদনার শেষ নেই। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন অভিনেতা এই ফেলুদা’র চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন। লেখক পরিচালক নিজে বেছে নিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে (Soumitra Chatterjee)। এরপর সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakraborty), আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee) এবং বর্তমানে টোটা রায়চৌধুরী (Tota Roychoudhury)। দর্শক কখনও ভালোবেসেছেন , কখনও আবার অভিনেতাকে সমালোচনায় ভরিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি ওটিটি সিরিজে মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালিত ছবি ‘দার্জিলিং জমজমাট’ (Darjeeling Jomjomat)। এই ছবিতে ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন টোটা রায়চৌধুরী। দিন দশেক আগেই স্ট্রিমিং শুরু হয়েছে, তারপর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং ফেলুদা। ভালো মন্দ মিশিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন টোটা ? সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই একটি পোস্ট লিখে অনুভূতির কথা ব্যক্ত করলেন অভিনেতা।

মাত্র ১০ দিন হল ‘দার্জিলিং জমজমাট ‘ এর স্ট্রিমিং শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই এই ছবি নিয়ে রেকর্ড তৈরি হয়ে গেছে। বাংলা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দর্শক এই সিরিজটি দেখেছেন। কেউ ভালো বলেছেন, কেউ মন্দ তবে রেকর্ড তৈরি করার পেছনে দর্শকের অবদান অনস্বীকার্য। তাই এবার ফেলুদা টিমের তরফ থেকে সেই দর্শকদের প্রত্যেককেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানালেন অভিনেতা টোটা রায়চৌধুরী। তিনি লিখেছেন সমালোচনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও ভালো কিছু করতে চান তিনি। তবে ‘দার্জিলিং জমজমাট’ ব্যতিক্রম বটে। টোটা লিখেছেন, “এবারে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হলো। বেশ কিছু সমালোচনা গঠনমূলক তো নয়ই, অসম্ভব ঘৃণা মিশ্রিত, যার প্রধান উদ্দেশ্যই হলো পরিচালককে বা অভিনেতাদের হেয় করা। বেশ কিছু মানুষ জোরের সঙ্গে দাবি করছেন যে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের গত কয়েকটা কাজ নাকি পাতে দেওয়ার অযোগ্য। অথচ তাঁরা সেই অযোগ্য কাজগুলোই যে কেন পরপর দেখছেন সেই রহস্যের সমাধান করতে হয়তো ফেলুদাকেই ডাকতে হবে!”

এই সিরিজে সবথেকে বেশি সমালোচিত হয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং টোটা রায়চৌধুরী। পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছেন অভিনেতা। ইদানিং কালে মুম্বাইয়ে বেশ কিছু প্রোজেক্ট করেছেন টোটা। সেখানকার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেই তিনি বলেছেন, ” মুম্বাইয়ে কিঞ্চিৎ কাজ করছি বলে এটা জোরের সাথে বলতে পারি যে বাংলা থেকে সৃজিতই একমাত্র পরিচালক যাকে ওঁরা চেনেন। যাঁর কাজের সম্বন্ধে ওনাদের সম্যক ধারণা আছে। তা সে করণ জোহর হোক, রণবীর সিং বা আলিয়া ভাট হোক বা শাবানা আজমি।” এরপরই অভিনেতা তাঁর নিজের কথাও তুলে ধরেছেন। এই সিরিজে অভিনয় করার পর থেকেই টোটাকে নানা অশ্রাব্য সমালোচনা হজম করতে হয়েছে বটে। এতে বিন্দুমাত্র রেগে যান নি অভিনেতা। তিনি বলছেন, মূল বিষয়কে বিসর্জন দিয়ে, অযৌক্তিক তুলনা টেনে অন্যকে ছোট করার মানসিকতায় অনাবিল আনন্দ খুঁজে চলেছেন এখনও বেশ কিছু মানুষ। টোটার প্রশ্ন, নিজের ক্ষুদ্রতা থেকে যে ক্ষণিকের মুক্তি পাওয়া যায় তা থেকে কিছু মানুষ কেন নিজেদের বঞ্চিত করবেন? অভিনেতা লেখেন, ” ট্রোল করে পৈশাচিক আনন্দে লিপ্ত হওয়া। তা বেশ। এটাও তো একপ্রকার বিনোদন।” ফেলুদা চরিত্রে অভিনয় নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং। অভিনেতার থেকে বেশি করে দর্শক কি বুঝতে পারেন ফেলুদার ম্যানারিজম ? টোটা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে লিখেছেন , ” আমার চোখে ফেলুদা এক অনমনীয় চরিত্রের দৃঢ়চেতা মানুষ। সে যতই রাত জাগুক না কেন ভোরে বা সকালে ঠিক যোগব্যায়াম করবেই। মার্শাল আর্ট এও সে পারদর্শী। এই ধরনের মানুষদের posture সম্বন্ধে কি ধারণা আছে? যদি না থাকে তাহলে খেয়াল করবেন যে তারা straight & square shouldered হন। রায় সাহেবের আঁকা ফেলুদার স্কেচগুলো আরেকবার দেখার জন্য অনুরোধ করছি। সটান শিরদাঁড়া, উচ্চ শির। আমি সেগুলোই অনুসরণ করেছি। এঁদের হাঁটাচলা, movement খুব controlled হয়। তাঁদের মানসিক দৃঢ়তা তাঁদের শারীরিক দার্ঢ্যে প্রকাশ পায়। যাঁরা বলছেন আমাকে আড়ষ্ট লেগেছে তাঁরা কি একটু ভেবে দেখেছেন যে ওই একই সময় তো আমি শ্রীময়ী সিরিয়ালে রোহিত সেন এর রোলে অভিনয় করেছিলাম, প্রায় দেড় বছর ধরে। রোজই তো টিভির পর্দায় দেখা যেত। তখন তো কেউ বলেননি যে আমি ওই দোষে দুষ্ট। তাহলে নিশ্চই কিছু একটা ভেবেই এই characterization টা করেছি, তাই না? কিন্তু তলিয়ে ভাবার সময় কোথায়! মোবাইল চিৎকার করে ডাকছে, ওরে পৃথিবীতে কত কিছু ঘটছে, FOMO FOMO!!!”

বিনোদন জগতের অনেকেই বলছেন, এভাবে তাঁর সমালোচনা হওয়াকে হয়তো মেনে নিতে পারছেন না টোটা রায়চৌধুরী । অভিনেতা বলছেন তাঁর কাজ নিয়ে তিনি খুশি । যাঁদের না পসন্দ তাঁরা অন্য রাস্তা দেখতে পারেন। কিছু মানুষ নিজেদের ‘ইন্টেলেকচুয়াল মহাপ্রাণী হিসেবে প্রতিপন্ন করতে চান’ বলে দর্শকদের একাংশকে কার্যত নাম না করেই বিদ্ধ করেছেন তিনি। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন ফেলুদা প্রেমীদের।



spot_img

Related articles

জনসমুদ্র পার্ক স্ট্রিটে: বড়দিনের আলোয় শহর মাতোয়ারা, রাত বাড়তেই ভিড়ের ঢল

কনকনে ঠান্ডাকে সঙ্গী করে বড়দিনের আনন্দে মেতে উঠেছে গোটা বাংলা। জেলা থেকে শহর—সর্বত্রই উৎসবের আমেজ, তবে প্রতি বছরের...

স্পষ্টতা চেয়ে ফেডারেশনকে চিঠি ক্লাব জোটের, সূচি নিয়ে ক্ষোভ ইস্টবেঙ্গলের

সাফ ক্লাব কাপ জয়ী মহিলা দলের ফুটবলার, কোচ অ্যান্টনি আ্যন্ড্রিউজ এবং সাপোর্টিং স্টাফদের  সংবর্ধিত করল   ইস্টবেঙ্গল ক্লাব(East Bengal)...

বেঙ্গল সুপার লিগ: উত্তর ২৪ পরগনাকে হারিয়ে জয়ে ফিরল ব্যারেটোর দল

জমজমাট  শ্রাচি আয়োজিত বেঙ্গল সুপার লিগ(Bengal Super League)। বড়দিনের দুপুরেও ছিল লিগের ম্যাচ। কল্যাণী স্টেডিয়ামে হাওড়া হুগলি ওয়ারিওর্সের(Howrah-Hooghly...

কেন্দ্রের প্রকল্পকে তোয়াক্কা নয়: বাংলা জুড়ে সবুজ বিল্পব

বাংলায় বিজেপির নেতারা যখন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলায় লাগু না করার জন্য প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন, তখন পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে...