নেভিল কার্ডাস বহু দিন আগে বলেছিলেন স্কোরবোর্ড একটা গাধা! ওটা কখনও সত্যি কথা বলে না। কী নির্মম সত্যি। মেরেকেটে কয়েক সপ্তাহ। আয়ারল্যান্ড গিয়ে ৪৯৮ রান তুলে দিয়েছিলেন জনি বেয়ারস্টোরা। ধন্য ধন্য পড়েছিল ইংল্যান্ড-জুড়ে। কেউ বলছেন স্টোকসদের কাছে পাঁচশোও কোনও ব্যাপার নয়। কেউ বললেন এই দলকে রোখা যাবে না। আড়ালে নিশ্চয়ই মুচকি হেসেছিলেন কিংবদন্তি ক্রিকেট লিখিয়ে।
ওভালে রোহিত আর শিখর যখন ভারতকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, মনে হচ্ছিল কী দূরদর্শী ছিলেন কার্ডাস সাহেব। উনি বলে গিয়েছেন, লিপিবদ্ধ পরিসংখ্যান কিস্যু না। না হলে বুমরার গোলাগুলির সামনে বাটলারদের এই ভরাডুবি হয় না।
১১১ তাড়া করতে গিয়ে রোহিতদের মনেই হল না উইলি-টপলি-ওভারটনরা কোনও ফ্যাক্টর। রোহিত করলেন ৭৬। সঙ্গী শিখরের রান ৩১। দু’জনেই নট আউট। ৩১.২ ওভার বাকি রেখে ভারত প্রথম ম্যাচ জিতল ১০ উইকেটে।
একদিনের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন রান ৮৬। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০০১-এ এই রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল তারা। ওভালে ইংল্যান্ড ইনিংস শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সবার মাথায় ঘুরল। পরপর উইকেট পড়ছে। এটাই স্বাভাবিক ভাবনা। শেষপর্যন্ত অবশ্য লজ্জার অধ্যায় ওভাল পর্যন্ত গড়ায়নি। ইংল্যান্ড ইনিংস শেষ করল ১১০ রানে। বুমরাহর ১৯ রানে ৬ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের মধ্যে এটাই সেরা বোলিং। এর আগে ২৩ রানে ৬ উইকেট ছিল আশিস নেহরার।
টসের পর ইংল্যান্ডের নতুন অধিনায়ক বাটলার বলছিলেন, এটা তাঁর গর্বের ম্যাচ। তখনও জানেন না গর্বের ম্যাচ একটু বাদে দুঃস্বপ্নের ম্যাচে পর্যবসিত হবে। তখন কে ভেবেছিল ইংল্যান্ডের অর্ধেক ইনিংস ২৭ রানে শেষ হবে। একটাও জুটি তৈরি হল না গোটা ইনিংসে। হলে ইংল্যান্ডকে এত কম রানে ইনিংস শেষ করতে হত না।
বুমরাহ-শামি মেঘলা আকাশের নিচে অনেকটা বল সুইং করালেন। ৭ রানের মধ্যে ইংল্যান্ড হারাল জেসন রয় (০), জো রুট (০) ও বেন স্টোকসকে (০)। রয় আর রুটকে পরপর তুলে নিয়ে বুমরা যে ভয়ঙ্কর চাপ তৈরি করেছিলেন, তাতে তাল মেলালেন শামি। একদিনের ক্রিকেটে যাঁর ১৫০ উইকেট হয়ে গেল। স্টোকস, বাটলার (৩০) এবং ওভারটন (৮) শামিরই শিকার হলেন। বিপর্যয় সামলাতে বেয়ারস্টো (৭) ও লিভিংস্টোনের (০) উপর আশা ছিল ইংল্যান্ডের। বেয়ারস্টো জীবনের সেরা ফর্মে রয়েছেন। কিন্তু বিধ্বংসী বুমরাহর সামনে তিনিও এদিন সুবিধা করতে পারেননি।
রোহিত টসে জিতে আগে বল করতে সিদ্ধান্ত নেন আকাশের দিকে তাকিয়ে। উপরে মেঘের চাদর। উইকেটের নিচে ঈষৎ ড্যাম্প ভাব। দুইয়ে মিলে বুমরাহ, শামি আর প্রসিধ কৃষ্ণ কোণঠাসা করে দিলেন ইংল্যান্ডকে। এই ইংল্যান্ড কয়েক সপ্তাহ আগে আয়ারল্যান্ডে সিরিজ জিতে এসেছে। কিন্তু মঙ্গলবার তার কোনও ছাপ বাটলারদের খেলায় পড়েনি। বুমরাহর হাতে শেষ হয়ে গেলেন তাঁরা। শামির তিন ও প্রসিধের এক উইকেট। ২৫.২ ওভারে শেষ হয়েছে ইংল্যান্ডের ইনিংস।