Saturday, August 23, 2025

অভিনব! জঙ্গলমহলের মাটিতে দাঁড়িয়ে কলকাতার পুজোর ‘জঙ্গলকন্যা’ থিম উদ্বোধন

Date:

আসছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। দেবী শারদীয়ার (Durga Puja Festival) আগমনের প্রহর গুনছে বঙ্গবাসী। সাবেকি বনাম আধুনিকতার লড়াই থেকে একটু সরে এবার সংস্কৃতির মেলবন্ধনে নজর কলকাতার রামমোহন সম্মেলনীর (Rammohan Sammelani) পুজো উদ্যোক্তাদের। এই বছর তাঁদের ভাবনায় ‘জঙ্গলকন্যার জগৎ’। তারই উদ্বোধন হল আজ ১৬ জুলাই শনিবার, ঝাড়গ্রামের রবীন্দ্র কাননে (Rabindra Kanan, Jhargram)। রবীন্দ্র পার্কে ধামসা মাদল সহ চিরাচরিত আবহে আন্তরিক বর্ণময় অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

সেতুবন্ধন দৃঢ় হোক জঙ্গলমহল আর কলকাতার- এই ভাবনাকে সঙ্গী করেই কলকাতার ঐতিহ্যবাহী রামমোহন সম্মেলনীর পুজোর থিমের উদ্বোধন হল ঝাড়গ্রামে। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal) বনদফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda), বিধায়ক দেবদাস হাঁসদা, এলাকার পুরপ্রধান থেকে শুরু করে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) বিশিষ্ট মানুষজন, যাঁরা সমাজের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে যুক্ত এবং একাধারে সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক। ছিলেন উমা সোরেনসহ বিধায়ক, পঞ্চায়েত, পুরপ্রতিনিধি ও ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট শিক্ষক, গবেষক, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা। এইভাবে পুজোর থিম একেবারে বিষয়বস্তুর উৎসস্থলে গিয়ে উদ্বোধন নজিরবিহীন। কলকাতার পুজোকে ঘিরে ঝাড়গ্রামও আবেগতাড়িত। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠান শুরু।জঙ্গলমহলের মাটি ও চারাগাছ পুজোকমিটির হাতে তুলে দেন বীরবাহা। থিমের উদ্বোধনও হয় স্থানীয় শিল্পীদের নাচগানের মধ্যে দিয়ে। ঝাড়গ্রামের লোকসংস্কৃতিকে মাথায় রেখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শাল গাছে ঘেরা ঝাড়গ্রামের বনছায়াতলে কলকাতার পুজোর উদ্বোধন হওয়ায় , রামমোহন সম্মেলনীর পুজো উদ্যোক্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ দিয়েছেন বীরবাহা হাঁসদা। তিনি জানান, যেভাবে জঙ্গলমহলের মহিলাদের লড়াইকে সম্মান জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

কলকাতায় থিম পুজো মানেই বিষয় ভাবনাকে শহরের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। তবে উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যশালী মধ্যবিত্ত নিম্ন-মধ্যবিত্তের একান্ত আপন রামমোহন সম্মেলনী একটু ব্যতিক্রমী। এই বিষয়ে রামমোহন সম্মেলনীর চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, এবারের পুজোয় নারী শক্তির আরাধনায় জঙ্গলমহলের নারীদের কৃতিত্বকে তুলে ধরতে চেয়েছেন তাঁরা। সেই কারণেই ঝাড়গ্রামে চলে আসা। এখানকার নারীদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, কর্মযজ্ঞ , জীবনধারা, সংগ্রাম সবটাই উঠে আসবে এবারের মহাপুজোয়। তিনি জানান রামমোহন সম্মেলনীর ৭৮ বছরের এই পুজোয় কলকাতার বুকে জঙ্গলকন্যা হিসেবে যাঁর মুখ উঠে আসবে, তিনি হলেন বীরবাহা হাঁসদা। এই পুজোর ব্র্যান্ড অ্যামবাস্যাডর তিনিই। তাই দেবীপক্ষের চতুর্থীর দিন রামমোহন সম্মেলনীর পুজোর উদ্বোধন করবেন স্বয়ং মন্ত্রী। পাশাপাশি এলাকার সকল মানুষকেও সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানান কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। রামমোহন সম্মিলনীর তরফে ছিলেন শ্যামল দত্ত, অনির্বাণ সেনগুপ্ত, শৈলেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। তাঁরা জঙ্গলমহল ও কলকাতার সেতুবন্ধনে জোর দেন।

শুধুমাত্র আধুনিকতার চাকচিক্য নয় ,এবার প্রকৃতি কন্যাকে চিন্ময়ী মায়ের মৃন্ময়ী রূপের আরাধনার মাঝে প্রতিষ্ঠিত করা- সাবেক কলকাতার অত্যন্ত সংস্কৃতিমনস্ক রামমোহন সম্মেলনীর এই পুজোর থিম এবছরের অন্যতম আকর্ষণ।


Related articles

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...

রাজ্যে শুরু SIR প্রস্তুতি: একাধিক পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের

গোটা দেশেই এসআইআর লাগু হবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। বিহারে ৬৫ হাজার...
Exit mobile version