বিধানসভায় চারে চার করেছেন, লোকসভা আসন পুনরুদ্ধার করুন! ঝাড়গ্রামে বার্তা কুণালের

একুশে জুলাই দিনটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের কাছে কেন তাৎপর্যপূর্ণ তা দলীয় কর্মি-সমর্থকদের সামনে তুলে ধরলেন

“২০১৯ সালে আমাদের কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি, ভুল এবং বিজেপির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি জন্য কোথাও কোথাও ওরা ভোট পেয়েছিল। এরপর ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে ঝাড়গ্রামে আসার সুযোগ হয়েছিল আমার। তখন আমি এবং এখানকার নেতৃত্ব বুঝেছিলাম, মানুষ আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আশীর্বাদ করতে চলেছেন। ফলাফল বের হতেই দেখা গেল সবকটি বিধানসভা আসনে তৃণমূল জিতেছে। ঝাড়গ্রামে চারে চার হয়েছে। সেটা ধরে যেমন রাখতে হবে, ঠিক একইভাবে ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম আসন পুনরুদ্ধার করতে হবে। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন, এমন ভাবে মানুষের কাজ করুন, মানুষের কাছে যান, মানুষকে বোঝান যাতে মানুষ তৃণমূল ছাড়া অন্য কোথাও না যায়। কোনও ঝগড়া, অশান্তির পথে হাঁটবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উন্নয়ন তৃণমূলকে জেতাবে।

নিজেদের মধ্যে অভিমান করে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেবেন না, যাতে অশুভ শক্তি ঝাড়গ্রামের বুকে ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।” একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি উপলক্ষ্যে ঝাড়গ্রামের কর্মিসভা থেকে শনিবার এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

একইসঙ্গে একুশে জুলাই দিনটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের কাছে কেন তাৎপর্যপূর্ণ তা দলীয় কর্মি-সমর্থকদের সামনে তুলে ধরলেন। কুণালের কথায়, “১৯৯৩ সালের একুশে জুলাই সিপিএমের পুলিশ ১৩ জন তরতাজা যুবককে হত্যা করেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তারপর থেকে প্রতিবছর একুশে জুলাইয়ে শহিদ তর্পণ করা হয়। তবে একুশে জুলাইয়ে শহিদ তর্পণ-এর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক নতুন অভিমুখ তৈরি করে দেন। কীভাবে আগামিদিনে চলতে হবে তা শোনার অপেক্ষায় থাকেন তৃণমূলের সৈনিকরা।”

এরপরই কুণাল ঘোষ তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কেন্দ্র ও তাদের শাসক দল বিজেপিকে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, “পাগলা হাতি যেমন সরষে ক্ষেতের ক্ষতি করে, বিজেপি সেভাবে মানুষের ক্ষতি করতে আসছে, এদের ঢুকতে দেবেন না। বিদায় করুন। বিধানসভার সময় দিল্লি থেকে বহিরাগতরা ডেইলি পাসেঞ্জারি করেছে, মানুষ তাদের মুখে ঝামা ঘষে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। বিধানসভার আগে চার্টার্ড ফ্লাইটে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগদান আর এখন বলছে দিদি একটা অটো পাঠান, ফিরে যাই।”

তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের আরও বার্তা, “আমাদের সকলকে দুটি দিকে নজর রাখতে হবে। একদিকে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উন্নয়ন, একের পর এক জনমুখী প্রকল্প আর অন্যদিকে কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতি, মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, কৃষকের প্রতি অবহেলা। এই সরকার রাখা যাবে না। সংসদে বিরোধীরা কথা বলতে পারবে না। ধর্ণা দিতে পারবে না। এটা সরকার চলছে? দমন পীড়ন চলছে। সাধারণ মানুষকে বাঁচতে দেবে না, আবার প্রতিবাদও করতে দেবে না। শুধু ধর্ম আর বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সকলকে একজোট হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।”

কুণালের দাবি, দেশের একমাত্র বিজেপি বিরোধী শক্তি তৃণমূল। তাই প্রাপ্য টাকা বন্ধ করে কখনও বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা তো কখনও বেছে বেছে তৃণমূলকে নিয়ে কুৎসা, অপপ্রচার, এজেন্সির ব্যবহার করছে বিজেপি। তবে তিনি বিশ্বাস করেন ২০২৪ সালে ১৫ আগস্ট বাংলার হাওয়াই চপ্পল আর তাঁতের শাড়ি পড়া এক মহিলা লালকেল্লায় উঠে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। বাংলা দেশকে পথ দেখাবে। মানুষের সরকার গঠিত হবে।

এদিন ঝাড়গ্রামের কর্মিসভায় কুণাল ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বনদফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, স্থানীয় বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদা, পুরপিতা অজিত মাহাতো-সহ নেতৃত্ব। কর্মিসভা শেষে ঝাড়গ্রাম বাজার পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য মিছিলেও যোগ দেন কুণাল ঘোষ-সহ অন্যান্যরা।

আরও পড়ুন- NDA-র উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী পদে চমক, জগদীপ ধনকড়ের নাম ঘোষণা নাড্ডার

 

Previous articleNDA-র উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী পদে চমক, জগদীপ ধনকড়ের নাম ঘোষণা নাড্ডার
Next articleমুক্তি আসন্ন কাদম্বরী আজও ছবির প্রচার শুরু