তৃণমূলের একাংশের আফশোস, সেদিন অভিষেক মডেল মেনে নিলে আজ এই অবস্থা দেখতে হতো না

চমকে দেওয়া দৃশ্য। শিল্পমন্ত্রী ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে বলে ইডি প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে। আর সে নিয়ে শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। এর মাঝেই আর একটি প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের শীর্ষ স্তরে। তাদের বক্তব্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাওয়াই যদি দলের মধ্যে কার্যকর করা হতো তাহলে আজকে এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হতো না দলকে। অভিষেক রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে এবং দলের উচ্চ পদ থেকে নির্দিষ্ট কয়েকজনকে সরাতে চেয়েছিলেন। অভিষেকের কথা তখন শোনা হয়নি। পরিবর্তে অভিষেককেই কোণঠাসা করে কলুষিত করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও কয়েকজন বর্ষীয়ান নেতা। পুরনো কর্মী বলে এই বর্ষীয়ান নেতারা তৃণমূলনেত্রীর ওপর প্রভাব খাটিয়ে দল দখলে নেমেছিলেন।

ঠিক এই ইস্যুতেই ২০১৬ সালে ভোটের পর শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করেছিলেন অভিষেক। তার কারণ, কয়েকজন নেতা সম্পর্কে তাঁর কাছে হাতে গরম তথ্য আসে। খতিয়ে দেখে অবাক হয়ে যান তিনি। ঠিক হয়, কিছু মুখকে সরিয়ে নতুন মুখ আনা হবে। কিন্তু এই উদ্যোগ ভেস্তে দেন কিছু সিনিয়র। আর ২২ জুলাই গভীর রাতের ঘটনার পর দলের ইমেজে যে কালি লেগেছে, দলকে যেভাবে ডুবতে হচ্ছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর কারণে তাতে ভাবমূর্তি উদ্ধার করা সহজ কথা নয়। একেবারে সংগঠিকভাবে দলকে শক্তিশালী করে লড়াই শুরু করেছিলেন অভিষেক। শুধু একুশে জুলাইকে সামনে রেখে বাংলা জুড়ে ১০ হাজার ছোট-বড় সভা-মিছিল, স্ট্রিট কর্নারিং হয়েছে। হিসেব বলছে তাতে প্রায় ১০ কোটি মানুষকে ছোঁয়া গিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলটা নতুন স্পিরিট পেয়েছিল। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘটনায় মুখ পুড়ল দলের। রেকর্ড উপস্থিতির সভা, নিয়ন্ত্রিত সভা, শৃঙ্খলিত সভা সব বেকার হয়ে গেল। শুধু তাই নয় পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়ি থেকে যেভাবে নগদ টাকা পাওয়া গিয়েছে তাতে অনেকে উত্তরপ্রদেশ, বিহারের রাজনীতির তুলনা টানছেন, যা তৃণমূলের পক্ষে সত্যি ভয়ঙ্কর। এই ঘটনার পর এজেন্সির তৎপরতা আরও বাড়বে।
তৃণমূলের মধ্যে একটি অংশ মনে করছে, এখনই মন্ত্রিসভার সব সদস্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানো উচিৎ। মুখ্যমন্ত্রী ঢেলে সাজাবেন মন্ত্রিসভা। কয়েকজন নেতা তৃণমূলে কার্যত জমিদারির রাজত্ব চালাচ্ছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাদেরও একসঙ্গে বানপ্রস্থে যাওয়ার রাস্তা করে দেওয়া উচিৎ। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ঢেলে সাজানো উচিৎ দল এবং সরকারকে। নইলে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে যাবে। তৃণমূলের এই অংশের নেতৃত্ব মনে করছেন, অভিষেকের মডেল অবিলম্বে চালু করা উচিৎ দলের সুপ্রিমোর।

আরও পড়ুন:উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই, জবাবদিহির দায় অভিযুক্তের: কুণাল

 

Previous articleউদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই, জবাবদিহির দায় অভিযুক্তের: কুণাল
Next articleট্রান্সফার ব্যান উঠল লাল-হলুদে