Wednesday, May 7, 2025

তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রবিবার আরও একবার স্পষ্ট করে জানালেন, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে তৃণমূলের কোনওরকম কোনও সম্পর্ক নেই। এর মধ্যে দলকে জড়ানো অনুচিত। তিনি বলেন, গতকালই আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিলাম। তারপরও কোনও কোনও জায়গা থেকে বিষয়টি নিয়ে জল ঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে। যে ভদ্রমহিলার বাড়ি থেকে বিপুল টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে আমরা ইডি সূত্রে জানতে পেরেছি, ওই টাকার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই । ওই ভদ্রমহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ নন।

উনি কোন অনুষ্ঠানে কার আমন্ত্রণে কিভাবে উপস্থিত হয়েছেন তা আমাদের জানা নেই। এরকম নানান অনুষ্ঠান থাকে সেটা সামাজিক হতে পারে রাজনৈতিক হতে পারে কিন্তু তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি জানান, তৃণমূল কংগ্রেস খুব নির্দিষ্ট ভাবে বলে দিচ্ছে, যার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে যাদের কাছে টাকা উদ্ধার হয়েছে তারাই বিষয়টি বলতে পারবেন। এটা তৃণমূল কংগ্রেসের জানার বিষয় নয় ।তারা বা তাদের আইনজীবীরা বিষয়টা নিয়ে বলতে পারবেন এটা তাদের বলা দায়িত্ব। যিনি যত বড়ই নেতা হোন, যদি তিনি অন্যায় করে থাকেন সেক্ষেত্রে আইন আইনের পথেই চলবে। তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিকভাবে সেখানে জড়াবে না।
আমাদের শুধু দাবি, আমরা টাইম বাউন্ড ইনভেস্টিগেশন চাই। এর আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অনেক তদন্ত আমরা দেখেছি বছরের পর বছর সেই তদন্ত চলেছে। এখন একজনকে গ্রেফতার করে একটা বাতাবরণ তৈরি করে দিয়ে সেটা চলতেই থাকলো, আর সেটাকে হাতিয়ার করে বিরোধীরা তৃণমূলকে নিয়ে অপপ্রচার চালাতে থাকবেন। সেটা হতে পারে না ।একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একমাস বা দু মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।
তৃণমূল মুখপাত্র প্রশ্ন তোলেন, নোটবন্দির পর অত টাকা এলো কোথা থেকে। এই টাকার উৎস কী? যে সময়ের দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে আর নোটগুলি যে সময়ে সেটা মিলছে কী মিলছে না। তদন্ত হোক। আদালতে যদি তদন্তকারীরা এর পক্ষে কোনও তথ্য দেন, এবং আদালত যদি সেই তথ্য প্রমাণকে সিলমোহর দেন মান্যতা দেন। তিনি যত বড়ই নেতা হোন, তৃণমূল কংগ্রেস এবং সরকার তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু আমরা টাইম বাউন্ড ইনভেস্টিগেশন দাবি করছি।এর আগে বিভিন্ন সময় দেখা গেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি বিভিন্ন মামলায় দীর্ঘ মেয়াদি তদন্ত করে। আমাদের বক্তব্য, যত দ্রুত এই টাকার উৎস কী তা আদালতে স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে এবং তা যত দ্রুত সম্ভব। অকারণ দেরি যাতে না হয়।’

তিনি বলেন, গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে আমার পাশে ছিলেন মাননীয় মহানাগরিক মেয়র ফিরহাদ হাকিম। নারদার যে মামলায় বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি হারার পর তাদের বাড়ি গিয়ে সিবিআই অ্যারেস্ট করেছিল, সেই একই মামলায় শুভেন্দু অধিকারী বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা কেমন নিরপেক্ষতা, কেমন বিচার? গ্রেফতারের পক্ষে এমন কোনও তথ্য প্রমাণ যদি আদালতে পেশ করা হয় এবং আদালত যদি তার মান্যতা দেয়, তৃণমূল কংগ্রেস সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কোনোভাবেই তার সঙ্গে কোনও আপোষ করবে না। তার মানে এই নয় বিজেপির দুর্নীতিতে ডুবে থাকার ইতিহাস মুছে যাবে।তার মানে এই নয় যে একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জড়ানো সিপিএম আজকে সাধু সেজে বড় বড় কথা বলতে ময়দানে নামবে।

বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আজকে বলেছেন ওই টাকা তৃণমূলের। আজব কথা। আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলছি, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। যাদের নাম আসছে তাদের দায় এবং দায়িত্ব এর জবাব দেওয়ার। তৃণমূল কংগ্রেস কাউকে অন্যায় কাজ করতে বলেনি। তিনি বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করেন, আইকোরের মালিক অনুকূল মাইতি যখন বুদ্ধবাবুকে মালা পরাচ্ছিলেন, তখন পাশে উপস্থিত ছিলেন মহম্মদ সেলিম। এই ছবিটা কী প্রমাণ করে ? সিপিআইএম আইকোরের টাকায় লালিত পালিত? বেঙ্গল ল্যাম্প কেলেঙ্কারি, ট্রেজারি কেলেঙ্কারি, ট্রাম কেলেঙ্কারি, একের পর এক কেলেঙ্কারি বাম জমানায়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছিলেন, চোরেদের মন্ত্রিসভায় থাকি না। বিনয় চৌধুরী বলেছিলেন, ঠিকাদারদের সরকার। এত তাড়াতাড়ি সব ভুলে গেলেন। তখন এত ক্যামেরা, এত মিডিয়া, এত সোশ্যাল মিডিয়া , ফোনের সঙ্গে ক্যামেরা, কোনও কিছুই ছিল না । আপনারা বহু পাপ করে পার পেয়ে গিয়েছেন। তার মানে এই নয় যে আপনারা ধোয়া তুলসী পাতা সেজে আজকে তৃণমূলকে বসে বসে আক্রমণ করবেন, তৃণমূল আঙুল চুষবে ওসব হবে না।

বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীকে পুলিশ ধরছে না, সিবিআই ধরছে না। এজেন্সিকে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে । আমরা বলছি, আইন আইনের পথে চলবে। আমরা বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখি। কিন্তু এই এজেন্সি তো বিজেপি নেতাদের আইনের পথে আনছেই না, তাহলে আইন আইনের পথে চলবে কী করে? ফিরহাদ হাকিমকে যে মামলায় ধরে নিয়ে আসা হয়েছিল, সেই একই মামলায় শুভেন্দু অধিকারীকে ধরাই হল না। কেন, শুভেন্দু আইনের ঊর্ধ্বে? বিজেপি কী ওয়াশিং মেশিন নাকি? একের পর এক রাজ্যে কী কাণ্ড করেছে। এরাজ্যে যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদের প্রোটেকশন দিচ্ছে বিজেপি, তারাই আবার বড় বড় কথা বলছে।

কুণাল এদিন মনে করিয়ে দেন, ত্রিপুরার বাম সরকার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ডুবে আছে। ১০ হাজারের উপর শিক্ষকের চাকরি চলে গেছে। শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি ত্রিপুরায়। অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, তিনি আগে তার জবাব দিন। কংগ্রেসকেও তোপ দাগেন কুণাল। বলেন, এখানে ইডি ভালো আর যখন সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীকে ডাকছে তখন সারাদেশে কংগ্রেস বিক্ষোভ করছে, কেন এরকম দ্বিচারিতা?

তার স্পষ্ট বক্তব্য, তৃণমূল কংগ্রেস আত্মবিশ্বাসী । একের পর এক কাজের মধ্যে দিয়ে মানুষের মন জয় করছে। গ্রেফতার করে গল্পটা ছড়িয়ে যাওয়া হল , আর ঘোলা জলে মাছ ধরতে বিরোধীদের সাহায্য করা হচ্ছে এই জিনিস চলবে না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। তৃণমূল নেতৃত্ব ও তৃণমূল পরিবার এক এবং অটুট। যদি কেউ এর মধ্যে কোনও কিছু ভুল করে তৃণমূল কংগ্রেস রেয়াত করবে না।

 

 

 

 

Related articles

উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার ৯০.৭৯ শতাংশ, এগিয়ে ছাত্ররা! শুভেচ্ছা শিক্ষামন্ত্রীর 

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার (Higher Secondary Result 2025) ফল প্রকাশিত হল। চলতি বছর পাশের হার ৯০.৭৯ শতাংশ। সোশ্যাল...

যুদ্ধ নয়, লক্ষ্য স্থির করে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার তথ্য পেশ দুই মহিলা সেনাকর্তার

কেন পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা তা নিয়ে কোনও ব্যাখ্যারই প্রয়োজন নেই। কিন্তু যারা প্রশ্ন তুলছেন হামলার ধরণ নিয়ে...

SSC নিয়ে আদালত অবমাননার মামলা গ্রহণ করল না কলকাতা হাইকোর্ট

২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় চাকরিহারাদের বেতন ফেরানোর সুপ্রিম নির্দেশ কার্যকরী হচ্ছে না অভিযোগ করে আদালত অবমাননার মামলা...

পহেলগামের জঙ্গি হামলার জবাব দিল ভারত, জয় ইন্ডিয়া! বললেন মুখ্যমন্ত্রী 

পহেলগামের জঙ্গি হামলার বদলা নিল ভারতীয় সেনা (Indian Army)। অপারেশন সিঁন্দুরের (Operation Sindoor) মাধ্যমে প্রায় ৯০ জঙ্গিকে মারল...
Exit mobile version