Thursday, December 4, 2025

জেলায় নেই ৫০০ কর্মীও, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপির ‘হতশ্রী’ দশা প্রকাশ্যে

Date:

Share post:

একুশের নির্বাচনে বাংলা দখলের হিড়িক তুলে রাজ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মোদি-শাহ-নাড্ডারা। যদিও সে অঙ্কে মুখ পুড়েছে আগেই। এবার প্রকাশ্যে এল বঙ্গ বিজেপির(BJP) ‘হতশ্রী’ অবস্থাটা। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীদের প্রকৃত সংখ্যাটা যাচাই করতে বৈঠকে বসেছিল বিজেপি। সেখানে দেখা গেল জেলাভিত্তিক বিজেপির কর্মীসংখ্যা ৫০০ জনও নেই। বঙ্গ বিজেপির এমন শোচনীয় অবস্থা দেখে সমস্ত আশা নিভে গিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের(Central Leaders)।

শনিবার কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে বিজেপির এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক বসে। সেখানে রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য(Amit Malabya) জেলা সভাপতিদের কাছে তৃণমূল স্তরে সংগঠনের হালহকিকত জানতে চান। কোন জেলায় এই মুহূর্তে কত সক্রিয় কর্মী রয়েছেন, সেই তথ্য দিতে বলেন জেলা সভাপতিদের। এই তালিকায় প্রথমে বলতে ওঠেন নদীয়া (দক্ষিণ) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। দিল্লির নেতার মন পেতে পার্থবাবু বলেন, অন্তত পাঁচ থেকে সাত হাজার কর্মী রয়েছে আমার জেলায়। এ কথা শোনা মাত্র তীব্র হাসির রোল ওঠে গোটা অডিটোরিয়ামে। মালব্য বুঝে যান এই সংখ্যায় ব্যাপক জল মেশানো হয়েছে। তারপর থেকে একাধিক জেলা সভাপতি তাঁদের জেলার হিসেব পেশ করতে গিয়ে একেবারে ৫০০-তে নেমে যান। বিজেপি সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে কর্মিসংখ্যা বলতে গিয়ে ৩০০ থেকে ৫০০-র মধ্যেই ঘোরাফেরা করেন বাকি জেলা সভাপতিরা। তবে বাস্তব পরিস্থিতি যে এর চেয়েও খারাপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর তোপ দেগেছে বিক্ষুব্ধ বিজেপি সংগঠন ‘সেভ বিজেপি বেঙ্গল’। এদিন টুইট করে রীতিমতো তোপ দেগে লেখা হয়েছে, অমিত মালব্য, অমিতাভ চক্রবর্তী, সুকান্ত মজুমদারদের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হল, অগ্নিমিত্রা ও জগ্ননাথ সরকারদের জেনারেল সেক্রেটারি করা। এবং তাদের ঘনিষ্ঠ অনভিজ্ঞদের পদে আনা। পাশাপাশি আর লেখা হয়েছে, এই রিপোর্ট কি জেপি নাড্ডা, বিএল সন্তোষ, অমিত শাহরা দেখছেন?

জেলায় দলের এমন দুর্দশার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। তিনি ওই বৈঠকে জানান, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে মণ্ডলস্তরে কমিটির বৈঠক করাই যাচ্ছে না। কয়েক জায়গায় মণ্ডল কমিটির বৈঠকে বাইরে থেকে লোক এনে সভা ভরাতে হচ্ছে। বহু জায়গায় পূর্ণাঙ্গ মণ্ডল কমিটি তৈরি করা যায়নি। বৈঠক থেকেই তথ্য উঠে আসে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে জেলায় আর কর্মীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ কর্মীরা বসে গিয়েছে, নাহলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দলের এক শীর্ষ নেতৃত্ব রীতিমত তোপ দেগে বলেন, দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী ‘জল মেশানো’ সাংগঠনিক রিপোর্ট দিচ্ছে। রাজ্য নেতৃত্ব কলকাতার পার্টি অফিস ছেড়ে বেরচ্ছে না। নেতারা রাস্তায় নেই। কিন্তু ফেসবুকে আছেন। এরপরই দলের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, ৬১ জনকে নিয়ে মণ্ডল কমিটি গঠন করতে হবে। পাশাপাশি যুব, মহিলা সহ সাতটি মোর্চার প্রতিটির জন্য ২১ জনের কমিটি করতে হবে। তবে যে দলে পতাকা ধরার লোক নেই সেখানে এই নিয়ম মেনে কমিটি গঠন যে আদৌ সম্ভব নয় তা বেশ বুঝতে পারছেন রাজ্য নেতৃত্বরা।


spot_img

Related articles

গোপন ট্রেন, প্যালেস, ৭০০ গাড়ি: গুপ্তচর থেকে প্রেসিডেন্ট পুতিন, সম্পত্তির পরিমাণ কত?

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Russian President Vladimir Putin) বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী নেতা। তাঁর রহস্যময় ব্যক্তিগত জীবন সবসময়ই আলোচনার...

উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত খারিজ হাইকোর্টের

উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষা-শারীরিকশিক্ষায় ১৬০০ অতিরিক্ত শূন্য পদ (super numerary post in upper primary recruitment) তৈরির বিজ্ঞপ্তি খারিজ করল...

আজ ডিসেম্বরের শীতলতম দিন! কলকাতার তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির ঘরে

শীতের কামড় কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে। সাত বৃহস্পতির সকালে মহানগরীর তাপমাত্রা (Kolkata Temperature) নামল ১৫ ডিগ্রিতে। এখনও পর্যন্ত আজকের দিনটিকেই...

জ্বলছে এটিএম, সাতসকালে অগ্নিকাণ্ড হাওড়ায়!

বৃহস্পতির সকালে ঘুম ভাঙতেই চোখের সামনে জ্বলন্ত এটিএম (fire breaks out in ATM) দেখে আতঙ্কিত হাওড়া জেলার (Howrah...