শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে মমতার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে জল্পনা

এই সফরকে ঘিরে  ভারত ও বাংলাদেশ; দুই তরফেই কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে

খায়রুল আলম , ঢাকা

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারির আবহে প্রায় তিন বছর পর এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।

আগামী বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তার আগে এটিই  বঙ্গবন্ধু কন্যার শেষ ভারত সফর। সেই কারণে এই সফরের দিকে বাড়তি নজর রাখছে দিল্লি।
এই সফরকে ঘিরে  ভারত ও বাংলাদেশ; দুই তরফেই কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে। এরই মধ্যে দিল্লি পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক দল প্রতিনিধি।
শেখ হাসিনা এই সফরে দিল্লিতে পা রাখবেন ৫ সেপ্টেম্বর। সেদিন  চাণক্যপুরীর বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে  ভারতীয় অতিথিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন তিনি। ভারতে বাংলাদেশের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এই অনুষ্ঠানটির উদ্যোক্তা।
২০১৭ সালের মার্চে তার দিল্লি সফরে শেখ হাসিনা উঠেছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে। তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।  ২০১৯ এর  অক্টোবরে তিনি যদিও দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলেই থেকেছিলেন।
৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজঘাটে গান্ধী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা অর্পণ ও রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনারের মধ্যে দিয়ে তাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হবে। এরপর শুরু হবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। প্রতিনিধিদলের বৈঠকের পাশাপাশি দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকও  সেদিনই অনুষ্ঠিত হবে। দিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে ওই বৈঠক হবে। শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা হবে ।

৭ সেপ্টেম্বর  ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সে তিনি বণিকসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। ভারতের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কীভাবে উভয়পক্ষই উপকৃত হতে পারে, সেই বিষয়টি  তুলে ধরবেন তিনি।
বুধবার বিকালেই তিনি পাড়ি দেবেন রাজস্থানের  আজমির শরিফ দরগায়। সফরের একেবারে শেষ পর্বে খাজা বাবার এই মাজারে প্রার্থনা করে তিনি রাজস্থানের  জয়পুর বিমানবন্দর থেকে  ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
যদিও  এই সফরেও তিস্তা চুক্তি দিনের আলো দেখছে না।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার এবারের সফরে দুদেশের মধ্যে ‘সেপা’ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নামক বাণিজ্য চুক্তিটি চূড়ান্ত হতে পারে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজে এই চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন  দিয়েছেন। এখন শুধু এ বিষয়ে ভারতের সম্মতি হওয়া দরকার।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শত শত পণ্যের অবাধ ও শুল্কমুক্ত বাণিজ্যর জন্য এটিকে একটি ‘ল্যান্ডমার্ক’ বা যুগান্তকারী সমঝোতা বলে গণ্য করা হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শেখ হাসিনার সফরের ঠিক আগেই দীর্ঘ কয়েক বছর  পর দিল্লিতে বসছে দুদেশের জয়েন্ট রিভার্স কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজধানীতে এসে তার সঙ্গে দেখা করবেন কিনা, তা নিয়েও এই মুহূর্তে জল্পনা তুঙ্গে। শেখ হাসিনা নিজে যে চাইছেন দিল্লিতে তার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা হোক। গত মাসেই তিনি সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছেন,  দিল্লিতে যাতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।
শেখ হাসিনা এই ‘আমন্ত্রণ’ জানানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও এ রাজ্যকে বার্তা পাঠানো হয়েছে,   বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে এলে তা খুবই ইতিবাচক হবে।

Previous articleশনিবার সকালে কলকাতায় চলে এলেন লাল-হলুদের তৃতীয় বিদেশি ইভান গঞ্জালেজ
Next articleআজ সোনা রুপোর দাম কত? জেনে নিন এক ঝলকে