Monday, November 3, 2025

মানবিক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: সৎ মায়ের বঞ্চনায় অতিষ্ঠ ছেলেকে নতুন ঠিকানা

Date:

এর আগেও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মানবিক রূপ দেখেছেন দেশবাসী। তাঁর রায় বরাবরই মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। এবার বাবা হারানো ছেলেকে মায়ের অবহেলার বিচার করে সরল সমাধান তৈরি করে ফের নজির গড়লেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন:হাসিনার সফরকালে মমতাকে দিল্লিতে আমন্ত্রণ কেন্দ্রের

সমীরের মায়ের মৃত্যুর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে বাবা। যতদিন বাবা বেঁচে ছিলেন ততদিন সবই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর বিপত্তি শুরু হয়।  স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর সরকারি চাকরি পেয়ে বাড়ি ছেড়েছেন তিনি। বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ির দেখভাল করা তো দূরঅস্ত্‌, সৎ ছেলের ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার দায়িত্বও নেননি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে অর্থাভাবে এখন ওই মহিলার স্বামীর পরিবারে চরম দুর্ভোগ। এমনকি ছেলে মাধ্যমিকে ভাল ফল করেও অর্থাভাবে পড়াশুনোও বন্ধ হতে চলেছে। শেষমেশ নিজেদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ছোট্ট নাতির হাত ধরে বিচারের আশায় কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ সত্তরোর্ধ্ব দাদু।সব শুনে অভিযুক্ত সৎ মায়ের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর নির্দেশ, আগামী শুনানিতে সৎ মাকে হাজিরা দিতে হবে আদালতে। তিনি উপস্থিত না হলে তাঁকে গ্রেফতার করে আনারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হাজিরা সুনিশ্চিত করতে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পূর্ব মেদিনীপুরের ছত্রীর বাসিন্দা ৭৭ বছর বয়সি দয়ানন্দ টিঙ্গুয়া আদালতে জানান, বছর ছয়েক আগে পাঁশকুড়ার একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি (গ্রুপ ডি)-র পদে কর্মরত অবস্থায় তাঁর ছেলের ‘রহস্যজনক’ ভাবে মৃত্যু হয়। নিয়ম মেনে ছেলের মৃত্যুর পর তাঁর সেই চাকরি পান দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী পিঙ্কিরানি টিঙ্গুয়া। শর্ত ছিল, স্বামীর গোটা পরিবারের দেখভাল করবেন তিনি। সেই শর্ত মেনেই চাকরিতে ঢোকেন পিঙ্কি। কিন্তু কিছু দিন পরেই বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি। এখন দয়ানন্দদের প্রবল অর্থকষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। দিনে দু’বেলা ভাত জোটে না। মাথায় ছাদ নেই। ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও মতে থাকেন তাঁরা।

সব শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, সমীরের লেখাপড়ার জন্য পিঙ্কিকে তাঁর বেতনের নির্দিষ্ট অংশ, হিসাব অনুযায়ী মাসিক সাত হাজার টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে সমীরদের জন্য এক বাড়ি বানিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি। এমনকি সমীরকে স্কুলে ভর্তি করে দেন বিচারপতি। এদিন ভরা এজলাসে বিচারপতি সমীরকে বলেন, “ভালো করে পড়াশোনা করো। আমরা সকলে তোমার সঙ্গে আছি।” আদালত জানায়, তাঁর সাবালক না হওয়া পর্যন্ত এই মামলা আদালতের নজরদারিতে থাকবে।

Related articles

‘বন্দেমাতরম’-এর সার্ধ শতবর্ষে রাজ্যজুড়ে উদযাপন, মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি ‘বন্দেমাতরম’-এর সার্ধ শতবর্ষ উদযাপন করবে রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত...

বিদেশি বন্দি-মুক্তির দাবি! জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে 

রাজ্যে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকা সংশোধনীর কাজ বা এসআইআর। ঠিক এই সময়েই আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের...

রাজ্যের প্রতিটি জেলায় খুলছে সোশ্যাল মিডিয়া ইউনিট, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার

রাজ্যের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ এবার আরও দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছবে সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে। সেই লক্ষ্যেই প্রতিটি জেলায় পৃথক সোশ্যাল...

অস্ট্রেলিয়ায় রাত জেগে স্মৃতিদের বিশ্বকাপজয়ের সাক্ষী থাকলেন সূর্যরা

মুম্বইয়ে বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ভারতীয় মহিলা দল(Indian women team)। গোটা দেশ সাক্ষী থেকেছে হরমনপ্রীতদের অবিস্মরণীয় কীর্তির।...
Exit mobile version