রাজ্যজুড়ে মেগা কার্নিভালের মধ্যেই মোদির উদ্বোধন করা বঙ্গ বিজেপির দুর্গাপুজো নিয়ে সংশয়

বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর গতবছর মায়ের আরাধনা নিয়ে বিজেপি নেতাদের কারও কোনও মাথাব্যথ্যা ছিল না। রীতি মেনে যেহেতু একবার সংকল্প করলে তিনবার পুজো করতে হয়, তাই কয়েকজন উদ্যোগ নিয়ে শেষপর্যন্ত সেই পুজো উতরে দেন

ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বাংলা জুড়ে দুর্গাপূজার মেগা কার্নিভালের প্রস্তুতি নিয়ে তুঙ্গে তৎপরতা, ঠিক তখনই
কার্যত বন্ধ হওয়ার পথে বঙ্গ বিজেপির লোকদেখানো দুর্গাপুজো। একুশের নির্বাচনে ভরাডুবির পর গতবছরই প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল সল্টলেকের EZCC-তে বিজেপির দুর্গাপুজো। কিন্তু দলের মুষ্টিমেয় কিছু মহিলার উদ্যোগে তা নমো নমো করে কোনওরকমে হয়েছিল। এবারই তৃতীয়বারের পুজো, তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও রীতি মানতে পুজো করবে বিজেপি এমনই জানা গিয়েছে। এবং পরের বছর থেকে যে আদৌ পুজো হবে না, তা মোটামুটি স্পষ্ট।

২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে দুরন্ত ফলাফল করেছিল বিজেপি। এক লহমায় আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল অনেকটাই। ঝাঁকে ঝাঁকে অন্য রাজনৈতিক দল থেকে নেতা-কর্মীরা যোগ দিতে থাকেন গেরুয়া শিবিরে। ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে বঙ্গ বিজেপি। সেই জায়গা থেকে ২০২০ সালে করোনা আবহের মধ্যেই সল্টলেকের EZCC-তে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।

সাড়ম্বরে হইহই করে পালিত হয়েছিল বিজেপির সেই দুর্গাপুজো। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে একেবারে বাঙালি বেশেই দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একুশের নির্বাচনকে সামনে রেখে কলকাতায় দুর্গাপুজোর আয়োজন বিজেপির ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলেই মনে করেছিলেন অনেকে।

কিন্তু বছর ঘুরতেই মোহভঙ্গ। বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর গতবছর মায়ের আরাধনা নিয়ে বিজেপি নেতাদের কারও কোনও মাথাব্যথ্যা ছিল না। রীতি মেনে যেহেতু একবার সংকল্প করলে তিনবার পুজো করতে হয়, তাই কয়েকজন উদ্যোগ নিয়ে শেষপর্যন্ত সেই পুজো উতরে দেন।

এবছরও পুজো করার লোক খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি। তবে সূত্রে খবর, দুর্গা আরাধনার খুব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু নেতা-কর্মী। একেবারে সাদামাটাভাবে হলেও পুজোটা করতে চাইছেন তাঁরা। শেষপর্যন্ত কী হবে জানা নেই, তবে পুজো হলেও এটাই যে বঙ্গ বিজেপির শেষ পুজো, তা কার্যত নিশ্চিত।