রাজনৈতিক তরজায় সরগরম রাজধানী দিল্লি(Delhi)। তুঙ্গে বিজেপির(BJP) সঙ্গে আম আদমি পার্টির বিরোধ। নজিরবিহীনভাবে লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনার(VK Saxena) পদত্যাগের দাবিতে সোমবার রাতভর বিধানসভার ভেতরে বিক্ষোভ দেখান আম আদমি পার্টির(AAP) বিধায়করা। দিল্লির শাসক দলের দাবি, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের অপদস্থ করার চেষ্টা করছে মোদি সরকার(Modi govt)। অন্যদিকে মনীশ সিসোদিয়া(Manish sisodiya) এবং সত্যেন্দ্র জৈনকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। রাতভর নিজেদের দাবি পূরণের জন্য বিধানসভায় গান গেয়ে স্লোগান দিয়ে ধর্না দেয় বিজেপি এবং আম আদমি পার্টি।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল ১১ টা নাগাদ সিবিআই আধিকারিকরা দিল্লি সরকারের আবগারি নীতির অনিয়মের অভিযোগে গাজিয়াবাদের বসুন্ধরা সেক্টর ৪ এর পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখায় দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার লকারেও তল্লাশি চালান। জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচজন সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন আধিকারিকদের একটি দল তল্লাশি চালাতে গাজিয়াবাদের সেক্টর ৪ বসুন্ধরার পিএনবি শাখায় পৌঁছেছিল। সিসোদিয়ার উপস্থিতিতেই খোলা হয় ব্যাংকের লকার। সোমবারই একটি টুইট বার্তায় সিসোদিয়া জানিয়েছেন, “সিবিআইকে স্বাগত জানাই।” ব্যাংক তল্লাশির পর দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয় বলেছেন যে তার পরিবার আবগারি নীতির মামলায় অভিযানে “ক্লিন চিট” পেয়েছে এবং সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) আধিকারিকরা তার বাড়িতে এবং তার ব্যাঙ্ক লকারে “কিছুই” খুঁজে পায়নি।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতেই দিল্লির উপ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে আম আদমি পার্টি। উপ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন আপ বিধায়ক দুর্গেশ পাঠক। তাঁর অভিযোগ, খাদি গ্রাম শিল্প বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছিলেন ভি সাক্সেনা। তাঁর আরো অভিযোগ নোট বাতিলের সময় কালো টাকা সাদা করায় যুক্ত ছিলেন তিনি।

এদিকে এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যেই অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক গুরু বলে পরিচিত আন্না হাজারে চিঠি লিখে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে দিল্লিতে মদের দোকান বন্ধ করতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে দিল্লি রাজ্য সরকারের আবগারি নীতি নিয়ে যে খবর আসছে তা পড়ে খুব খারাপ লাগছে। গান্ধীজির ‘গাঁও কি ওর চলো…’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমি আমার পুরো জীবন উৎসর্গ করেছি গ্রাম, সমাজ এবং দেশের জন্য। গত ৪৭ বছর ধরে গ্রামের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণআন্দোলন করছি। চিঠিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে উদ্দেশ্য করে আন্না হাজারে লেখেন, ‘আপনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার আপনাকে চিঠি লিখছি।”

অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আন্না হাজারে বলেন, আপনি আমাদের গ্রাম রালেগান সিদ্ধিতে এসেছেন। এখানে আপনি মদ, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদি নিষিদ্ধ করার প্রশংসা করেছেন। রাজনীতিতে আসার আগে আপনি ‘স্বরাজ’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। এই বইতে আপনি গ্রামসভা, মদ নীতি নিয়ে বড় বড় কথা লিখেছেন। তখন আপনার কাছ থেকে অনেক আশা ছিল, কিন্তু রাজনীতিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর আপনি আদর্শকে ভুলে গেছেন।
