অপারেশন টেবিলে শুয়ে রোগী, গাড়ি থেকে নেমে ৩ কিলোমিটার দৌড় চিকিৎসকের

সময় (Time) ও জীবনের (Life) মূল্য অপরিসীম। বিশেষ করে যে কোনও চিকিৎসকের (Doctor) ক্ষেত্রে শব্দ দুটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ বাঁচানোর ক্ষমতা তাঁদেরই অভিজ্ঞ হাতে। তবে সম্প্রতি চরম পেশাদারিত্বের (Professionalism) নজির গড়লেন বেঙ্গালুরুর এক চিকিৎসক। রোগী (Patient) অপারেশন টেবিলে (Operation Table) শুয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছেন। সকাল থেকে বন্ধ নাওয়া-খাওয়া। হাসপাতালে পৌঁছেই তাঁকে রোগীর গল ব্লাডারের স্টোন (Gallbladder Stone) অপারেশন করতে হবে। তাই কোনওমতে সময় নষ্ট না করে ব্যস্ততম রাস্তার মাঝপথে গাড়ি থেকে নেমে ৩ কিলোমিটার রাস্তা দৌড়ে হাসপাতালে পৌঁছলেন চিকিৎসক।

চিকিৎসক গোবিন্দ নন্দকুমার (Govind Nandkumar) বেঙ্গালুরুর সারজাপুর এলাকার মণিপল হাসপাতালের (Manipal Hospital) সার্জেন (Surgeon)। আর পাঁচটা দিনের মতো সেদিনও নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। হাসপাতাল থেকে তাঁর গাড়ি যখন মিনিট দশেক দূরে তিনি দেখেন রাস্তায় প্রবল যানজট। প্রবল বৃষ্টির জেরে রাস্তায় জমা জলে যানজট তৈরি হয়। সরজাপুর-মারাঠাহাল্লি (Sarjapur Marathahalli Road) রাস্তায় যানজটে আটকে পড়ে চিকিৎসকের গাড়ি। এরপরই গুগলে সার্চ করে চিকিৎসক জানতে পারেন রাস্তা পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে তাঁর আরও ৪৫ মিনিট সময় লেগে যাবে। এই মুহূর্তে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করলে রোগীর প্রাণসংশয় হতে পারে। আর সেকারণেই রাস্তার জমা জল পেরিয়ে দৌড়ে হাসপাতালে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসক। আর যেমন ভাবনা তেমন কাজ। চালককে গাড়ি নিয়ে আসতে বলে তিনি সবকিছু ভুলে হাসপাতালের উদ্দেশে দৌড় শুরু করেন। চিকিৎসকের এমন মানবিকতায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটাগরিকরা।

চিকিৎসক জানিয়েছেন গত ৩০ অগাস্ট আমি সারজাপুরের মণিপাল হাসপাতালে যাচ্ছিলাম। সেই সময়ই তীব্র যানজটে আটকে পড়ি। এদিকে সকাল ১০ টায় একটি অস্ত্রোপচারের (Operation) সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু যানজট পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে আরও ৪৫ মিনিট সময় লেগে যেত। রোগীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে নির্দিষ্ট সময়ে অস্ত্রোপচার করতেই হত। তাই আমাকে তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেকারণেই গাড়ি থেকে নেমে ৩ কিলোমিটার রাস্তা দৌড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নি। সময়মতো রোগীর অস্ত্রোপচারও করতে পেরেছি। চিকিৎসক গোবিন্দ জানান, তিনি প্রতিদিনই নিয়ম করে জিম করেন তাই তাঁর দৌড়তে কোনও সমস্যা হয়নি।